Thursday, June 20, 2024

সত্যি কার আসল এবাদতের খোঁজে

 সত্যিকার আসল এবাদতের খোজে?

*****************

তথাকথিত প্রচলিত এবাদত বনাম  জান্নাতের আসল ইবাদত ।

                                   *********

জাতি হিসেবে মুসলিমদেরএবাদতের মূল   বিষয়  নিয়েই  অনাকাঙিক্ষত  তামাশা-ক'জন ভেবে দেখেছেন /মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে ছেন এই তামাশার বিষয়টি  কতটা   ভয়ংকর ?

মুসলিম জাতি আসলে কি  আল্লাহর প্রকৃত ইবাদত করছে? কি না সবই তামাশা,নাটক চালিয়ে -- অজান্তে  ইসলাম কে জগতের অপর  সব ধর্মের তুলনায়/নিকটে ঠুনকো ধর্ম হিসাবে বাস্তবে  তুলে ধরছে ,কার্যত  বানাচ্ছে। উম্মার ক'জন মুসলিম এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাস্তবে  সত্যি কার অর্থে সজাগ/সচেতন?

* তথাকথিত প্রচলিত আমল' এর মারাত্মক ভুল  ধারণার সংশোধন জরুরী  দরকার/অপরিহার্য । *

 আসলেই চলমান ইসলামে

 'আমলের' বিষয়ে  মুসলমানদের মূল জ্ঞানেই কিন্ত  সম্পূর্ণ একেবারেই  ভুল ঢুকানো হয়েছে। ফলে জীবনের কাজ- কর্ম এই 'আমলে'একেবারেই  অন্তর্ভূক্ত হয় নি। ফলে বাস্তবেই ইসলামের অনুসারীরা হযবরল জাতি/ ধর্মে পর্যবসিত হয়ে বিশ্বের দরবারে  দাঁড়িয়েছে।

 মহান আল্লাহ বলেন, " যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন তোমাদের (এবিষয়ে) পরীক্ষা করার জন্য যে, কে তোমাদের মধ্যে ' কর্মে ' উত্তম - - -" সূরা মুলক, ০২। 

 সাদাকাল্লাহুল আজীম।

ড: নজরুল ইসলামের "আমলের প্রচলিত ধারনার সংশোধন জরুরী" সম্পর্কিত কথার উপরে ফেসবুকে বিতর্ক দেখে বিতর্কের ইতি টানার জন্য নিচের লেখাটি post  করছি।সব উওর নিঃসনেদহে  লেখাটি তে মিলবে ইনশাহআললাহ। সকলেরই   ্রতিক্রিয়া আশা করছি ।সংশ্লিষ্ট সকলকেই দেখার ও প্রতিক্রিয়ার জন্য  অনুরোধ থাকছে।

******************

এক পলকে জান্নাতে প্রবেশের নিশ্চিত অদ্বিতীয় চাবি।

----------------------------

আমরা কি কখনও গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখছি,কার্যত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একদম ভুল ব্যাখ্যা সাধারণ জনমনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। প্রচলিত ধারণা  সৃষ্টি হয়েছে, পাঁচটি কাজ বা দায়িত্ব পালনের নাম ইসলাম। আসলে হাদিসে উপমাটি দিয়ে ইসলামকে একটি বাড়ির সাথে তুলনা করে ধারনা দেওয়া হয়েছে:স্তম্ভ ছাড়া যেমন কোনো বাড়ির কল্পনাও সম্ভব নয়, তেমনি ইসলাম পাঁচ (ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত) স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। প্রশ্ন আসেঃ শুধু স্তম্ভ থাকলেই কি বাড়ির অস্তিত্ব বাস্তবে কখনও কল্পনা করা সম্ভব? বাড়ির পরিপূর্ণতার জন্য দরকার ছাদ, দেয়াল, জানালা-দরজা, আসবাবপত্র, রান্নাঘর, শয়নকক্ষ আরো কত কি? এ সব কিছু মিলেই না হয় একটা বাড়ি!তবে সব কিছুর আগে দরকার স্তম্ভ, যার ওপর গড়ে উঠবে বাড়িটি।ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত সামগ্রিক ইসলামের বুনিয়াদ বা ভিত। কুরআনে একটি আয়াতও পাওয়া যাবে না যেখানে বলা হয়েছে, এই পাঁচটি কাজের মাধ্যমে জান্নাত পাওয়া যাবে? কুরআন পাকে জান্নাতে যাওয়ার শর্ত হিসেবে যত আয়াত দেখা যায়, সেগুলোতে  মূলত  দুটি গুণের অধিকারী হতেই হবে জান্নাতের জন্য।না হলে জান্নাত কারও কপালে  কক্ষনও   জুটবেই না। জান্নাত লাভের জন্য তাকে অবশ্যই  ঈমানের সাথে সাথে সৎকর্মশীল হতেই হবে। মূলত নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতের আসল  উদ্দেশ্য  হচ্ছে মানুষকে সৎকর্মশীল হিসেবে তৈরি করা।  জান্নাত লাভের শর্ত হিসেবে বিশ্বাসের সাথে সর্বত্র সৎকর্মের কথা জুড়ে দেয়া হয়েছে। জান্নাত লাভের সব আয়াতেই বিশ্বাসের সাথে সৎকর্মশীল হওয়াটা্  একান্ত আবশ্যকীয়  ধরা হয়েছে। এটা ছাড়া কোনো  অবস্থতাতে আর কোনোভাবে ফাকি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়নি্।

এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা বা বিষয় হচ্ছে  সৎকর্মশীল ব্যক্তিকে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এবং কাজে সৎ হতে হবে বা সততার পরিচয় দিয়ে চলতে হবে। সৎকর্মশীলতার প্রতিযোগিতা সারাজীবন করে যেতে হবে। দিনের আংশিক কিছু সময় সৎ থেকে অন্য সময় অসৎ থাকলে সৎকর্মশীল হিসেবে পরিচয় দেয়ার সুযোগ একেবারেই নেই। দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই সৎ হতে হবে। দিনের কিছু কাজে সৎ আর বাকিটায় অসৎ এই প্রতারণার সুযোগ একেবারেই নেই। সৎকর্মশীল মানুষ সারাজীবন সৎকর্মের ওপর অবিচল থাকবে। শেষ বিচারের দিন সব ফাঁস হয়ে পড়বে।  মুসলিম জাতির  মর্যাদার সবচেয়ে বড় 

 ঐতিহাসিক সংবাদ:ইসলামের মূল ঘাঁটি- সৌদিই  বর্তমানে/আজকে ইজরায়েলের ও  উপরে দুর্নীতির rank এ(Transparency International)। 

আমাদের এই তথাকথিত 

 মসজিদের দেশ যার প্রতিটি জায়গায় আজানের ধ্বনি শোনা যায়, সে দেশ যদি  কখনও দুর্নীতিতে  বিশ্ব শিরোপা লাভের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে, তার অর্থ দাঁড়ায় বিশ্বের সব দেশ থেকে বেশি অসৎকর্মশীল মানুষ এ দেশে। অবাক কাণ্ডঃ মসজিদের দেশ কি করে দুর্নীতিবাজদের  ঘাটি হয়? জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে সৎকর্ম। আর সব গুণ থাকলেও অসৎকর্মশীল ব্যক্তি জান্নাতের সীমানার ধারে্র কাছেও ঘেষতে পারবে না। নামাজি, দ্বীনদার হওয়ার মূল কথা হচ্ছে সৎকর্মশীল হওয়া। বাহ্যিকভাবে যত বড় বুজর্গ, পীর,  মস্তবড় দ্বীনদার হোক না কেন একমাত্র  ঈমানদার ও সৎকর্মশীলরাই জান্নাতে যায়গা পাবে। জান্নাতে যাওয়ার শর্ত হচ্ছে সারাজীবন পার্টটাইম নয় ফুলটাইমই সৎকর্মশীল হতে হবে। কারণ প্রতিটি কাজের, মুহূর্তের এবং নিয়তের ওপরই নির্ভর করবে সে কোন ধরনের সৎকর্মশীল। সুবিধাবাদী সৎকর্মশীল না মন-মানসিকতা ও কাজে,কর্মে প্রকৃত অর্থে জীবনের সব সময়ে ও তৎপরতায় সার্বক্ষণিক ভাবে সৎকর্মশীলঃ শেষ বিচার দিবসে এ সবই পরখ করে দেখা হবে।

অসৎ  ব্যাক্তির ইবাদত  মূল্যহীন আর জান্নাত লাভের জন্য ঈমানের সাথে সৎকাজ  করার দৃঢ় মানসিকতা অবশ্য থাকতেই হবে যেটা কোরআন পাকে বিভিন্ন আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। প্রশ্ন আসে বিশ্বের  অন্যান্য  জাতির চেয়ে মুসলমানরা কি করে ক্ষেত্র বিশেষে অধিকতর  অসৎ ও দুর্নীতিপরায়ণ হতে পারে? এর একটি  সহজ ব্যাখ্যা হতে পারে সাধারন মুসলমানরা কোরআন আবৃত করে কিন্ত বুঝে পড়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি। ইমাম হাসান আল  বসরী (৬৪২-৭২৮ খৃঃ) বলেনঃ 'কুরআনকে নাযিল করা হয়েছে এর নির্দেশনা বলীর ভিত্তিতে কাজ করার জন্য কিন্ত তা না করে তারা এর আবৃতিকে কাজ হিসাবে ধরে নিয়েছে।' দুনিয়ার বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যায়,   তুলনামুলক   ভাবে পশ্চিমা   বিশ্বের লোকদের    মুসলিম  সমাজের  চেয়ে অধিক    সামাজিক    এবং  সৎকর্মশীল    হিসাবে মনে করা হয়ে  থাকে।যারা ইউরোপ,   আমেরিকা গিয়েছেন বা থাকেন,   তাদের ধারনাও   নিঃসন্দেহে এমনটিই হয়ে থকার কথা।  প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক, আমাদের  চলমান ধর্ম বিশ্বাস ও সংস্কৃতি কেন আমাদেরকেও সেভাবে তৈরি করতে আপাত ব্যর্থ প্রমানিত হচ্ছে,কোনো ভাবেই কেন যেন পাশ্চাত্ত্যের সাথে প্রতিযো গিতায় পারছেনা।গভীর বিশ্লেষণে দেখা যাবে মূল কারন কিন্ত অত্যন্ত সুক্ষ-এক স্থানে     {বেহেশত লাভের ত্রুটিপূর্ণ গতানুগতিক ভুল ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ,শিক্ষা,প্রথা,ও নির্দেশনা।}ফলে প্রচলিত সংস্কৃতির ঘূর্ণিপাকে যেন হাবু ডুবু খাচ্ছে  সবাই। অসৎ কর্মশীল হয়ে জান্নাত লাভের কোনো রকম সুযোগ ইসলামে একেবারেই না থাকার পরেও কেন যেন এক  শ্রেণীর মুসলিমদের ভিতরেই চলে আসছে  দাড়ি, টুপি, নামাজি, হাজি সেজে  অঘোষিত এই  দুর্নীতির  প্রতিযোগিতায় নামতে।  জীবনে একবার হজ করলেই যেন কেল্লাহ ফতেহঃ সারা জীবন ভর  আবার সৎ থাকা?  আসমান উচু পরিমাণ নেকী অর্জন করেও সঠিক কথা হচ্ছে, সারা জীবন যাদের হক নষ্ট  করা হয়েছে নিজের অর্জিত   মূলধন   নেকী দিয়ে তাদের সাথে বিনিম্ য় ক্ রতে হবে। আর এভাবে পরিশোধ করতে করতে আগেই নেকী  সব শেষ হয়ে যায় সেক্ষত্রে প্রাপকের গুনাহ নিজের কাঁধে নিয়ে দোযোগে যেতে হবে।প্রথমে দেখা যাক কোরআনের আলোকে  সৎকাজের ব্যাখ্যাঃ

সৎকাজ কী?----

পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারা আয়াত১৭৭ : ‘ সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হলো এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর, কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।" এখন আমরা বিশ্লেষণ করতে পারি,আমাদের  কি বার্তা  পরিবেশন করছে জান্নাত লাভের আয়াত সমূহঃ

১] আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে)। কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাকবে, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।                [ সুরা বাকারা ২:১৪৮ ]

২] যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে,সে জুলুমওক্ষতির আশঙ্কা করবে না।          [ সুরা ত্বা-হা ২০:১১২ ]

৩]এবং ইসমাঈল, ই'দ্রীস ও যুলকিফলের কথা স্মরণ করুন,তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সবরকারী। আমি তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম। তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ। [ সুরা আম্বিয়া ২১:৮৫-৮৬ ]

৪]  যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।          [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:১৪ ]

৫] সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী।[সুরা হাজ্জ্ব২২:৫০]

৬] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ। [ সুরা শু’য়ারা ২৬:২২৭ ]

৭] তবে যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে। [ সুরা কাসাস ২৮:৬৭ ]

৮] আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল,তার বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা ঈমানদারএবংসৎকর্মী,তাদের জন্যে আল্লাহর দেয়া সওয়াবই উৎকৃষ্ট।এটা তারাই পায়, যারা সবরকারী। [সুরা কাসাস ২৮:৮০]

৯] যে সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে তদপেক্ষা উত্তম ফল পাবে এবং যে মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, এরূপ মন্দ কর্মীরা সে মন্দ কর্ম পরিমানেই প্রতিফল পাবে।[সুরা কাসাস ২৮:৮৪]

১০]আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব। [ সুরা আনকাবুত ২৯:৭ ]

১১] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব। [ সুরা আনকাবুত ২৯:৯ ]

১২] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের। [ সুরা আনকাবুত ২৯:৫৮ ]

১৩] যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে সমাদৃত হবে;                  [ সুরা রূম ৩০:১৫ ]

১৪] যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে যাতে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে প্রতিদান দেন। নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন না। [ সুরা রূম ৩০:৪৫ ]

১৫] যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত।       [ সুরা লুকমান ৩১:৮ ]

১৬] সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। [ সুরা লুকমান ৩১:৯ ]

১৭] যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। [ সুরা লুকমান ৩১:২২ ]

১৮]  যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়নস্বরূপ বসবাসের জান্নাত। [ সুরা সাজদা ৩২:১৯ ]

১৯]  তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি।      [সুরা আহযাব ৩৩:৩১]

২০]তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [ সুরা সা’বা ৩৪:৪ ]

২১] তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। [ সুরা সা’বা ৩৪:৩৭ ]

২২] আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।[ সুরা সাফফাত ৩৭:৮০ ]

২৩] এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। [ সুরা সাফফাত ৩৭:১২১ ]

২৪]যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। [সুরা মু’মিন ৪০:৪০]

২৫] অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী। তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক।    [সুরা মু’মিন ৪০:৫৮]

২৬] নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা হা-মীম৪১:৮]

২৭] যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ,তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?   [সুরা হা-মীম ৪১:৩৩]

২৮] যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না।              [সুরা হা-মীম ৪১:৪৬]

২৯]যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।  [সুরা যাসিয়া ৪৫:১৫]

৩০] যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম। [সুরা মুহাম্মাদ ৪৭:১২]

৩১]যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী। [ সুরা তুর ৫২:২১ ]

৩২]কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার। [সুরা ইনশিকাক ৮৪:২৫]

৩৩] যারা ঈমান আনেওসৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য। [ সুরা বুরূজ ৮৫:১১ ]

৩৪]‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।’  [সুরা  বাইয়্যেনাহ ৯৮:৭ ]

৩৫]‘ তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।’              [ সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৮]

 আল্লাহ আমাদেরসকলকে   ঈমানদার      অবস্থায় সৎকর্ম   সম্পাদন করে সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যেয়ে জান্নাত লাভের তৈফিক দিন। আমীন।

Thursday, June 6, 2024

জোতির্ময় মহাবিশেবর সাথে quantum physics এর ঐক্য তান।ব

 "কোরাআনের আঙ্গিনায় আমরা"- প্রকাশিত :-

একেবারেই কিন্ত  ভিন্ন   ধর্মী বিষয়/  উপস্থাপনা-

জোতির্ময় মহাবিশ্বের  সাথে সর্ব শেষ  quantum physics এর সাথে  দারুণ  ঐক্য তান:-পাঠক প্রতিক্রিয়া:                    //খুব ভালো সহজ ব্যাখ্যা ক্রমাগতভাবে। Best wishes for doing great job.//

*******************************

বিশ্বের সমগ্র ইতিহাসে সবচেয়ে বিস্ময়কর সাড়াজাগানো  সাংঘাতিক  ঐতিহাসিক ঘটনা:সব ধর্মের আধ্যাত্মিক বক্তব্যের সাথে ( অদৃশ্য লোকের  জোতির্ময়    মহা বিশ্ব)-- সর্ব শেষ  Quantum physics একই সুরে ঐকমত্য পোষন করছে যা আসলে বাস্তবে একেবারে  কোন ভাবেই  কি বোঝা/বোঝানোর উপায় আছে? হাজার হাজার বছর আগে ভাগে  কি ভাবে  প্রায় সব ধর্মের ই তাত্ত্বিক গন এই নিগূঢ় সর্বশেষ কোযানটাম   তত্ত্বের  মূল কথার সন্ধান পেয়েছেন? শেষে কিনা নোবেলজয়ী আইনস্টাইন  পর্যন্ত তালগোল পাকিয়ে ফেলেন প্রতিষ্ঠিত  হাইজনবর্গের অনিশ্চয়তা  তত্ত্বে।তিনি quantum mechanics এর এই  uncertainty principles  এর বিরোধীতা করে দাবি  করেন: সৃষ্টিতে কোন  রকম অনিশ্চয়তা/ লটারি থাকার কোন প্রশ্নই উঠে না-(বাস্তবে তিনি কিন্ত  সুপার   আস্তিক  ছিলেন)। তার মতে:গড তার সৃষ্টির   সব কিছু ই স্বাভাবিক নিয়মে যথাযথ ভাবে  করেছেন-লটারি বা অনিশ্চয়তার কোন রকম অবকাশ ই সৃষ্টি তে রাখেননি ।বিষয়টির  সার্বিক ফয়সালার জন্য তিনি বরং  সরাসরি হাইজেনের সাথে দেখা করে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করে জানিয়ে দেন এটি ।কিন্ত হাইজেন যুক্তি সহকারে আইনস্টাইন কে উল্টো দেখিয়ে দেন: তিনি যদি তার অনিশ্চয়তা নীতি মানতে রাজী  না হন তাহলে যেটার জন্যে তিনি নোবেল পেয়েছেন সেটিও প্রমান করতে অসুবিধায় পড়েবন । "আপনার নোবেল তত্ত্বের স্বার্থে আমার এই অনিশ্চয়তার নীতি আপনাকে মেনে নিতেই হবে । " হাইজেনের অনিশ্চয়তা নীতির সাথে  আইনস্টাইনের "ফটো ইলেকট্রিক এফেক্ট " নোবেল তত্ত্বের  সাথে  গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল বিধায়  আইনস্টাইনের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায় ।তিনি কথার মারপ্যাঁচের আশ্রয় নিয়ে এই যাত্রায় সরাসরি বললেন:এ বিষয়ে বিজ্ঞান একেবারে প্রাথমিক অবস্থা য় রয়েছে ।সে জন্যে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে ।

-----------------------------

(২৪ঃ৩৫)'আল্লাহ আকাশমন্ডলীওপৃথিবীর জ্যোতি।' প্রসঙ্গত  আলোচণায়  এসেছেঃ  'মধ্যযুগে মনসুর আল হাজ্জাজের আনাল হক দাবি।'

  পৃথিবীর সব শক্তির উৎস হচ্ছে সূর্য রশ্নি। আলো কে বলা হয় তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ। এই আলো উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে মূখ্য ভূমিকা রাখে আর সব প্রাণিজগৎ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বেঁচে আছে উদ্ভিদের দ্বারা। খনিতে যে কয়লা, গ্যাস, তেল পাওয়া যায় তারও উৎস হচ্ছে উদ্ভিদ ও প্রাণিজগৎ। ঘুরে ফিরে যে বিষয়টি এসে দাঁড়ায় সেটি হচ্ছে সব শক্তির মূলে রয়েছে  আলো।

স্পষ্টত আমরা দেখতে পাচ্ছি আলো সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। আলো দেখতে কেমন? মূলত আলো হচ্ছে এক প্রকার তরঙ্গ /ঢেউ। ফরাসী পদার্থবিদ ডিব্রোগলি অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করেন আলো তরঙ্গ হয়েও কোন পদার্থের উপর পড়লে এটি সেই পদার্থের সাথে মিশে যায়। পদার্থ এটাকে আত্মস্থ করে ফেলতে সক্ষম হয়। এতে তাঁর মাথায় আসেঃ আলোক রশ্নি তরঙ্গ হবার পরেও এটা যদি কোন পদার্থ শোষণ করে নিতে পারে তাঁর অর্থ দাঁড়ায় পদার্থ ও আলো একই প্রকৃতির কারণেই এটি সম্ভবপর হয়। ১৯২৪ সালে তিনি সারা দুনিয়ার বিজ্ঞানী সমাজের প্রতি সনির্বন্ধ আবেদন জানান এই বিষয়টার প্রতি দৃষ্টি প্রদর্শনের জন্যঃ আলো হচ্ছে তরঙ্গ কিন্তু এটা যখন পদার্থে শক্তি এবং ভরবেগ সরবরাহ করতে সমর্থ হয় তাহলে একই যুক্তিতে পদার্থ ও রশ্নি এবং  প্রকৃতপক্ষে  আলোর  মতই তরঙ্গ প্রকৃতি প্রদর্শন করবে। বিজ্ঞানী ডিব্রোগলি এই প্রস্তাবের মাধ্যমে আসলে বলতে চেয়েছিলেন, বাস্তবে আমরা  কেন ভাবতে পারব না যে একটি চলমান ইলেকট্রন অথবা অপর কোন কণাকে ও পদার্থ তরঙ্গ হিসেবে যেটাও কিন্ত অন্য পদার্থকে আলো রশ্নির মতো শক্তি ও দ্রুতি প্রদান করবে। ইতিহাসের ঐ সময়টিতে প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল ডিব্রোগলির এক যুগান্তকারী ভবিষ্যদ্বাণীঃ পদার্থ  ও   কার্যত জল তরঙ্গ, আলো তরঙ্গ ইত্যাদির মতো তরঙ্গ প্রকৃতি প্রদর্শন করবে। ইতিহাসে  পদার্থের তরঙ্গায়িত রুপ বা প্রকৃতিটি সর্বপ্রথম চোখে ধরা পড়ে ডেভিসন এবং গারমানের হাতে। এ দু’বিজ্ঞানী পরীক্ষাগারে নিকেল ধাতু ফলকের উপর ইলেকট্রন রশ্নি ফেলে তাঁর সাহায্যে ইলেকট্রনের বিক্ষেপন সম্পর্কিত বিষয়ে গবেষণা করছিলেন। আকস্মিকভাবে বায়ুর সংস্পর্শে এসে নিকেলের উপর অক্সাইডের আবরণ পড়ায় নিকেল ফলক হতে তাপ প্রয়োগে অস্কাইডের আবরণ অপসারণ করা হলো। কিন্তু ঘটে গেলো এক অভূতপূর্ব আশ্চর্যজনক ঘটনা - বিজ্ঞানীদ্বয় ইলেকট্রনের পরিমাত্রা এর রশ্নির মত একবার সর্বাধিক আর একবার সর্বনিম্ন হতে দেখে এ থেকে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হলেন - ডিব্রোগলির মতবাদ অনুসারে পদার্থ কণা তরঙ্গ সদৃশ বিধায় নিকেল স্ফটিক দিয়ে ইলেকট্রন রশ্নির ব্যতিচার হয়েছে। তাঁর প্রকৃত অর্থ হচ্ছে ইলেকট্রন আসলে ঢেউ বা তরঙ্গ। কিন্তু ঢেউ বা তরঙ্গ বলতে কিন্তু আমরা কী বুঝিয়ে থাকি? পানিতে সৃষ্ট তরঙ্গ সহজে আমাদের চোখে ধরা দিলেও অন্যান্য তরঙ্গ যেমন শব্দ, আলো বা বেতার তরঙ্গ কিন্তু আমরা দেখতে পাই না। একটি স্থিতিস্থাপক মাধ্যমের যে কোন অংশে আন্দোলন তৈরী হলে আন্দোলন টি মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হলে তাকে তরঙ্গ (Wave) বলে অভিহিত করা হয়। আলো তরঙ্গের বেলায় যে আন্দোলন অগ্রসর হয় তা কোন জড় পদার্থের গতির জন্য হয় না। এটা হয়ে থাকে তড়িৎ চুম্বকীয় ক্ষেত্রের গতির জন্য। এ কারণে মাধ্যমের কোন সাহায্য ছাড়াই সূর্য থেকে পৃথবী পর্যন্ত মুক্তভাবে আলোর বিস্তার লাভ সম্ভব হয়ে থাকে। এখানে উল্লেখ্য, তরঙ্গ যখন পথ চলে সেই সাথে কিন্তু সংশ্লিষ্ট মাধ্যমটি সামগ্রিকভাবে স্থানান্তর হয় না। মাধ্যমের বিভিন্ন অংশগুলো কেবল সীমিত পথে তাদের সাম্য অবস্থানের দু পাশে এদিক-ওদিক স্পন্দিত হতে থাকে। পদার্থ কণিকা ইলেকট্রন আসলে  ঢেউ/তরঙ্গ ছাড়া আর কিছু নয় এই অদ্ভূত আবিষ্কারের  পর অন্য সব কণিকার ক্ষেত্রে যেমন প্রোটন, নিউট্রন এবং বাকি সব ধরণের পরমাণুর বেলায়ও পর্যায়ক্রমে এই তরঙ্গের আচরন  আবিষ্কৃত  হতে থাকে। ১৯৯৪ তে আয়োডিন অণুর ক্ষেত্রে তরঙ্গায়িত এই ধর্ম পরিদৃষ্ট হয় যে অণুটি ইলেকট্রনের চেয়ে কেবলমাত্র পাঁচ লাখ গুন ভারীই নয়, গঠনে তার চেয়ে অনেক বেশি জটিল। এদিকে ১৯৯৯ সালে ৬০ অথবা ৭০ টি কার্বণ অণু দিয়ে যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের রসায়নবিদরা দেখতে ফুটবলের মতো যে কৃত্রিম অণু ফুলারেঞ্জ (বাকীবলস) তৈরী করেন এরাও আলোর মতো তরঙ্গ ধর্ম প্রদর্শন করে। সম্প্রতি নভোচারীরা বাস্তবে মহাকাশেও প্রকৃতিতে এই অণুর সাক্ষাৎ পেয়েছেন। উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র কণা যেমন ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, অণু, পরমাণু তরঙ্গ প্রকৃতি প্রদর্শন করলেও বড়  এবং জটিল বস্তুর ক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের ফিরে যেতে হয় সেই অতি পরিচিত নন কোয়ান্টাম জগতে। এর অর্থ দাঁড়ায় ইলেকট্রন বা অন্য সব কণা, অণু বা পরমাণু নিজেদের মধ্যে ব্যতিচার তৈরীতে সফল হলেও বড় ধরণের বস্ত উদাহরণ স্বরুপ কাঠ বিড়ালি কিন্তু পরস্পরের মধ্যে ব্যতিচার তৈরীতে অক্ষম। আর এটা প্রকৃতিতে এজন্য সম্ভব নয় যা প্রানীদের অস্তিত্ব রক্ষারই মোক্ষম উপায় এবং বেচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যক।সুবিখ্যাত বিজ্ঞানী শ্রোয়েডিংগার তার পরমাণুবাদে জড় স্বভাবকে একদম বাদ দিয়ে পরমাণু এবং তার উপাদান ইলেকট্রন, প্রোটনকে শুধু ঢেউ বা তরঙ্গের গুচ্ছরুপে কল্পনা করেন, যা পরিশেষে তরঙ্গ বলবিদ্যার উদ্ভব ঘটায়। পদার্থের তরঙ্গায়িত এই ধর্মের জন্য আজকের কোয়ান্টাম বিজ্ঞান বলছেঃ কণিকা এবং তরঙ্গের মধ্যে দ্বিত্ব রয়েছে। কোন কোন উদ্দেশ্যে কণিকাগুলোকে তরঙ্গরুপে চিন্তা করলেই উত্তম। অন্যদিকে কোয়ান্টামের অনিশ্চয়তা নীতিটি আবার দাবী করে যে, কোন কণিকার অবস্থানও দ্রুতি নির্ভুল ভাবে জানা বা নির্ণয় করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়।  এর কারণ কোন কিছুকে সঠিক/নিশ্চিত ভাবে জানার জন্য তার অবস্থান এবং সেই অবস্থানে তার বেগও জানতে হবে। কিন্তু কোয়ান্টামের অনিশ্চয়তা তত্ত্বটি পরিস্কার ভাবে বলে দিচ্ছেঃ প্রযুক্তি যতই উন্নত হোক না কেন একটি কণার অবস্থান যত নির্ভুল ভাবে মাপার চেষ্টা করা যাবে, তার দ্রুতির মাপও হবে তত কম নির্ভুল এবং এর বিপরীত ও সত্য হবে। আবার অনিশ্চয়তার এই সীমা কনিকাটির অবস্থান মাপনের উপরও নির্ভরশীল নয়। সুতরাং হাইজেনের এই তত্ত্বটি হয়ে দাড়িয়েছে বিশ্বের একটি মূলগত অনতিক্রমণীয় ধর্ম। প্রকারন্তরে তাই স্পষ্টত মনে হচ্ছে সব কিছু যেন এক অদৃশ্য জগতের হাতছানিতে বিদ্যমান, এর রহস্য ভেদ আমাদের এই সর্বশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমেও সম্ভব হবে না এবং তার কোন সুযোগ প্রকৃতি আমাদের জন্য খোলা রাখেনি। প্যানইথিজম বা অদ্বৈতবাদের ধারণার সাথে আজকের কোয়ান্টাম বিজ্ঞানের কোথাও যেন একটা যোগসূত্র খুজে পাওয়া যায়। দুনিয়ার বিভিন্ন ধর্মের সূফী/যোগীদের মধ্যে অদ্বৈতবাদের একটি ধারা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। প্যানইথিজম এর এই ধারার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একটি দার্শনিক মতবাদও, ইসলামে সূফীদের এই অদ্বৈতবাদ বা ফানাহফিল্লাহর (আত্ম বিলুপ্তির) পথকে সাংঘাতিক পাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অদ্বৈতবাদের একটি ইতিহাসপ্রসিদ্ধ ঘটনা হচ্ছে মধ্যযুগে মনসুর আল হাজ্জাজের আনাল হক দাবি। এ দাবির মাধ্যমে তিনি সমাজে তুলকালাম বাধিয়ে দেন। হক আল্লাহ তাআলার গুনবাচক নাম হওয়ায় আনাল হকের তাৎপর্য মনে করা হয় নিজেকে খোদা বলে দাবি করা যেটা কুফরি বা খোদাদ্রোহীতার সমপর্যায়ে পড়ে।  হাল্লাজের একটি কবিতা হচ্ছে, “আমি সে (স্রষ্টা) যাকে ভালোবাসি আমি। যাকে আমি ভালোবাসি সে আমি (স্রষ্টা)।” এ দাবি প্রত্যাহারের জন্য প্রচন্ডভাবে চাপ প্রয়োগ করা হলে  অস্বীকার করে তিনি বলেন, “যে সত্যের খোজ আমি লাভ করেছি তাকে মিথ্যা বলব কীভাবে?” যখন তাকে মৃত্যুদন্ডের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো, সেখানে জড়ো হওয়া লোকদের দিকে তাকিয়ে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে এই প্রার্থনাটি তিনি করেন - “যারা তাদের ধর্মের প্রতি প্রবল ভাবাবেগের বশবর্তি হয়ে এবং তোমার আনুকূল্য লাভের আশায় এভাবে জড়ো হয়েছে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে, হে প্রভু তাদের মাফ করে দাও এবং তাদের প্রতি করুনা করো। আমার কাছে যথার্থই তুমি যা ফাঁস করেছো, যদি তাদের কাছে ফাঁস হতো, তারা এটা করত না, যা করছে। তাদের কাছে যা গোপন রেখেছ আমার কাছে তা গোপন না করলে আমাকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হত না।” (সুত্রঃ  ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর “অ্যা হিস্ট্রি অব গড” যেটি যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ বিক্রিত একটি বই।) ইসলামি বিশ্বের একজন শীর্ষস্থানীয় চিন্তাবিদ মুজাদ্দিদ ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) যুক্তি দেখান, “হাল্লাজ ব্লাসফেমাসের (খোদাদ্রোহীতার) অভিযোগে অভিযুক্ত না হলেও তার কাজটি ছিলো অবিজ্ঞের মতো।” আনাল হক (আমি স্রষ্টা) অথবা ফানাফিল্লাহ (আত্মবিলুপ্তি) এসব ব্যপারে মুজাদ্দিদ আলফেমানি (রহঃ) এর অভিমত, “আধ্যাতিক সাধনার এক পর্যায়ে সাধক দেখতে পান সৃষ্টি এবং স্রষ্টাতে কোন বিভেদ নেই। সব কিছুতেই সে শুধু স্রষ্টাকে দেখতে পায়। এর পরের স্তরটি জিল্লিয়াত, যেখানে সাধক দেখতে পান সব কিছুই মহান আল্লাহ রব্বুলের নূরে (আলোতে/তরঙ্গে) দোল খেয়ে ফিরছে” নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের সব কিছুই আল্লাহ পাকের নূরে সৃষ্ট - অনেকের কাছে এটা প্রবাদও। “আল্লাহু নূরু ছামাওয়াতি অল আরদ” - আয়াতটির ব্যাখ্যায় অনেকে এরকমটি বুঝিয়ে থাকেন বা মনে করেন। মুজাদ্দিদ আলফেসানির (রহঃ) মতে, “আধ্যাত্মিক সাধনার তৃতীয় বা শেষ স্তরটি হচ্ছে আবদিয়াত, যে স্তরে সাধক বুঝবে আল্লাহ পাক মহা মহীয়ান, চির গরীয়ান। অনুভূতি দিয়ে তাকে ধরা যায় না। সব চিন্তা, অনুভূতি ব্যর্থ হয়ে তার দুয়ার হতে ফিরে আসে।”

স্পষ্টত এখানে লক্ষণীয় - অত্যাধুনিক কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের সাথে আধ্যাত্মিক সাধনা জগতের মধ্যকার এক গভীর যোগসুত্র আমাদের চোখে ভেসে উঠেছে। পদার্থ ও শক্তি দিয়ে গঠিত মহাবিশ্ব; শক্তি ও ভরের নতুন করে সৃষ্টি নেই, নেই কোন বিনাশ, আছে শুধু রুপান্তর। তার অর্থ সবই অবিনশ্বর।  এ সবই আবার অদৃশ্য জগতের থেকে আগত। আর সবই আলো/তরঙ্গ/নূর। সর্বত্রই স্রষ্টা বিরাজমান। সব চিন্তা, সাধনা, গবেষণা তার দুয়ার হতে ফিরে আসে। “তাকে জানা সম্ভব নয়। এটাই তাকে জানার একমাত্র পথ।” - প্রথম খলিফা আবুবকর (রাঃ)।মহাবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের ভাষায়, “নিশ্চই এর পেছনে রয়েছে এক অকল্পনীয় মহাজ্ঞানী সত্ত্বার এক রহস্যময় অভিপ্রেত। বিজ্ঞানীর দুরভিসারি জিজ্ঞাসা সেখানে বিমুঢ় হয়ে যায় - বিজ্ঞানের সমাগত চূড়ান্ত অগ্রগতিও সেখান থেকে স্তব্ধ হয়ে ফিরে আসবে। কিন্তু সেই অনন্ত মহাজাগতিক রহস্যের প্রতিভাস বিজ্ঞানীর মনকে এই নিশ্চিত প্রত্যয়ে উদ্বেল করে তোলে, এই মহা বিশ্বের একজন নিয়ন্ত্রা রয়েছেন। তিনি অলৌকিক জ্ঞানময়, তাঁর সৃষ্টিকে অনুভব করা যায় - কিন্তু তাকে কল্পনা করা যায় না।” বিশিষ্ট প্রানপদার্থবিদ ইবারসোল্ডের মতে, “বিজ্ঞানে মানুষের বুদ্ধিমত্তা, পরমাণু, নক্ষত্র, ছায়াপথ, প্রাণ ও সকল অলীক গুণের অধিকারী মানুষ কেন রয়েছে এই প্রশ্ন কখনও ব্যাখ্যা করবে না। বিজ্ঞান এই মহাবিশ্বের জন্ম সম্পর্কে আপাত দৃষ্টিতে খুবই যুক্তিযুক্ত মহাপ্লাবনিক একটা তত্ত্ব দাঁড় করাতে পারে, তারই ফলে ছায়াপথ, নক্ষত্র, সবকটি গ্রহও পরমাণু সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করতে পারে। কিন্তু কোথা থেকে এই সৃষ্টির জন্য জড় পদার্থ আর শক্তি এসেছে এবং কেন এই মহাবিশ্ব এমনভাবে গঠিত ও সুশৃঙ্খলাবদ্ধ, সে বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা বা ধারনা বিজ্ঞানে জুটবে না।”