রমা্দানের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাঁধাঃ
এই রমাদানে জান্নাত প্রস্ততির প্রথম লক্ষ্যটা আসলে কি হওয়া একান্ত আবশ্যক? বাস্তবে প্রতীয়মান হচ্ছেঃ মূল ইস্যু নিয়ে মাথা ব্যাথা মুসলিম সমাজে একেবারে নেই হেতু আসল বিষয়কে অসচেতনার সাথে এক পাশে লুকিয়ে রাখার কারনে বিশ্বের অপরাপর সব জাতি থেকে আমরা দুর্নীতিতে অপরাজেয়। আপনার প্রতিক্রিয়া?
জান্নাত লাভের সব আয়াতে বিশ্বাসের সাথে সৎকর্মশীল হওয়াটা্ অত্যাবশ্যকীয় ধরা হয়েছে। দিনের আংশিক কিছু সময় সৎ থেকে অন্য সময় অসৎ থাকলে সৎকর্মশীল হিসেবে পরিচয় দেয়ার কোনো সুযোগ কখনও হতে পারে না। দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই সততার পরিচয় দিতে হবে। দিনের কিছু কাজে সৎ আর বাকিটায় অসৎ এই প্রতারণার সুযোগ শেষ বিচারের কাঠ গড়ায় কিন্ত একদম নেই। সৎকর্মশীল মানুষকে সারাজীবন সৎকর্মের ওপর অবিচল থাকতে হবে। শেষ বিচারের দিন খুটিনাটি সব ফাঁস হয়ে পড়বে।
জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে সৎকর্ম। আর সব গুণ থাকলেও অসৎকর্মশীল ব্যক্তি জান্নাতের সীমানার ধারে্র কাছেও ঘেষতে পারবে না। নামাজি, দ্বীনদার হওয়ার মূল কথা হচ্ছে সৎকর্মশীল হওয়া। বাহ্যিকভাবে যত বড় বুজর্গ, পীর, মস্তবড় দ্বীনদার হোক না কেন একমাত্র ঈমানদার ও সৎকর্মশীলরাই জান্নাতে যায়গা পাবে।জান্নাতে যাওয়ার শর্ত হচ্ছে সারাজীবন আংশিক নয় ফুলটাইম সৎকর্মশীল হতেই হবে। কারণ প্রতিটি কাজের, মুহূর্তের এবং নিয়তের ওপরই নির্ভর করবে সে কোন ধরনের / প্রকৃতির সৎকর্মশীল। সুবিধাবাদী সৎকর্মশীল না মন মানসিকতা ও কাজ-কর্মে তথা প্রকৃত অর্থে জীবনের সব কাজে ও তৎপরতায় সার্বক্ষণিক সৎকর্মশীলঃ শেষ বিচার দিবসে এ সবই পরখ করে দেখা হবে। রামাদানে খতম তারাবীহ / তারাবীহ পড়ে সেই সাথে যদি সারা মাস সৎকর্মের অনুশীলনের দ্বারা নিজকে সারা জীবনের জন্য সৎকর্মশীল ব্যক্তি রুপে গড়ে তোলার জন্য মানসিক ভাবে তৈরী করা না হয় সে ক্ষেত্রে এ মাসের সব কষ্ট বৃথা যেতে বাধ্য।
"রোজা হলো (পাপাচার থেকে) রক্ষার ঢাল স্বরূপ। তাই তোমাদের কেউ রোজা রাখলে অশ্লীল কথা বলবে না, চিৎকার ঝগড়াঝাঁটি করবে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার সঙ্গে মারামারি করে, তাকে বলবে - আমি তো রোজাদার! আমি তো রোজাদার!" (বুখারী-১৮৯৪)
"যে ব্যক্তি মিথ্যা পরিত্যাগ করলো না, আল্লাহ তা'য়ালা তার পানাহার ত্যাগ কবুল করেন না" (বুখারী-১৯০৩)
অসৎ ব্যাক্তির ইবাদত মূল্যহীন আর জান্নাত লাভের জন্য সমগ্র জীবন ধরে ঈমানের সাথে সৎকাজ করার দৃঢ় মানসিকতা অবশ্য থাকতেই হবে যেটা কোরআন পাকে বিভিন্ন আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। প্রশ্ন আসে বিশ্বের অ্পরাপর জাতির চেয়ে মুসলমানরা কি করে সামাজিক আচার আচরণে অধিকতর অসৎ ও দুর্নীতিপরায়ণ হতে পারে? এর একটি সহজ ব্যাখ্যা হতে পারেঃ সাধারনত মুসলমানরা কোরআন আবৃ্তি করে কিন্ত বুঝে পড়ার সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি। ফলে খতম তারাবীর জামাতে আর মসজিদের জামাতে মানুষের ঢল নামলেও কোরআন কি বলছে সে বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা একটা প্রচলিত নেই। ইমাম হাসান আল বসরী(৬৪২-৭২৮ খৃঃ) বলেনঃ 'কুরআনকে নাযিল করা হয়েছে এর নির্দেশনা বলীর ভিত্তিতে কাজ করার জন্য কিন্ত তা না করে তারা এর আবৃতিকে কাজ হিসাবে ধরে নিয়েছে।' দুনিয়ার বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, তুলনামুলক ভাবে পশ্চিমা বিশ্বের লোকদের মুসলিম দেশ/সমাজের চেয়ে অধিক সামাজিক এবং সৎকর্মশীল হি সাবে মনে করা হয়ে থাকে।যারা ইউরোপ, আমেরিকা গিয়েছেন বা থাকেন, তাদের ধারনাও নিঃসন্দেহে এমনটিই হয়ে থকার কথা। প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক, আমাদের চলমান ধর্ম বিশ্বাস ও সংস্কৃতি কেন আমাদেরকেও সেভাবে তৈরি করতে আপাত ব্যর্থ প্রমানিত হচ্ছে,কোনো ভাবে কেন যেন পাশ্চাত্ত্যের সাথে প্রতিযোগিতায় পারছেনা।গভীর বিশ্লেষণে দেখা যাবে মূল কারন কিন্ত অত্যন্ত সুক্ষ-এক স্থানে {বেহেশত লাভের গতানুগতিক ভুলব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, শিক্ষা,প্র থা,ও নির্দেশনা।}ফলে প্রচলিত সংস্কৃ তির ঘূর্ণিপাকে যেন হাবু ডুবু খাচ্ছে সবাই। অসৎ কর্মশীল হয়ে জান্নাত লাভের কোনো সুযোগ ইসলামে একেবারে না থাকলেও কেন যেন এক শ্রেণীর মুসলিমদের ভিতরে চলে আসছে দাড়ি, টুপি, নামাজি, হাজি সেজে অঘোষিত এই দুর্নীতির প্রতিযোগিতায় নামতে। শেষ জীবনে একবার হজ করলেই যেন কেল্লাহ ফতেহঃ সারা জীবন ভর আবার সৎ থাকা কি দরকার? আসমান উচু পরিমাণ নেকী অর্জন করেওসঠিক কথা হচ্ছে, সারা জীবন যাদের হক নষ্ট করা হয়েছে নিজের অর্জিত মূলধনের সব নেকী দিয়ে তাদের সাথে বিনিময় করতে হবে। আর এভাবে পরিশোধ করতে করতে আগেই যদি নেকী সব শেষ হয়ে যায় সেক্ষত্রে প্রাপকের গুনাহ নিজের কাঁধে নিয়ে দোযোগে যেতে হবে।
কোরআনে সৎকাজকে কিভাবে মূল্যায়ন করেছে?
পবিত্র কুরআনের সূরা বাকারা আয়াত১৭৭: ‘ সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হলো এই যে, ঈমান আনবেআল্লাহর উপর, কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন,এতীম-মি সকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞাসম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও সংগ্রামের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।"
এখন আমরা বিশ্লেষণ করতে পারি, আমাদের কি বার্তা পরিবেশন করছে জান্নাত লাভের আয়াত সমূহঃ
১] আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে)। কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও। যেখানেই তোমরা থাকবে, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। [ সুরা বাকারা ২:১৪৮ ]
২] নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে এবং স্বীয় পালনকর্তার সমীপে বিনতি প্রকাশ করেছে তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।[ সুরা হুদ ১১:২৩ ]
৩] তোমাদের রব খুব ভালো করেই জানেন তোমাদের মনে কি আছে। যদি তোমরা সৎকর্মশীল হয়ে জীবন যাপন করো, তাহলে তিনি এমন লোকদের প্রতি ক্ষমাশীল যারা নিজেদের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক হয়ে আনুগত্যের নীতির দিকে ফিরে আসে।[সুরা বনী ইসরাইল ১৭ঃ ২৫]
৪]যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে,সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না।[সুরা ত্বা-হা ২০:১১২]
৫] এবং ইসমাঈল, ই'দ্রীস ও যুলকিফলের কথা স্মরণ করুন,তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সবরকারী। আমি তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম। তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ। [ সুরা আম্বিয়া ২১:৮৫-৮৬ ]
৬] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:১৪ ]
৭] সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী।[সুরা হাজ্জ্ব২২:৫০]
৮] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।[সুরা শু’য়ারা ২৬:২২৭ ]
৯] তবে যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে।[সুরা কাসাস ২৮:৬৭ ]
১০] আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল,তার বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা ঈমানদারএবংসৎকর্মী,তাদের জন্যে আল্লাহর দেয়া সওয়াবই উৎকৃষ্ট।এটা তারাই পায়, যারা সবরকারী। [সুরা কাসাস ২৮:৮০]
১১] যে সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে তদপেক্ষা উত্তম ফল পাবে এবং যে মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, এরূপ মন্দ কর্মীরা সে মন্দ কর্ম পরিমানেই প্রতিফল পাবে।[সুরা কাসাস ২৮:৮৪]
১২]আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব।[সুরা আনকাবুত ২৯:৭ ]
১৩] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব।[সুরা আনকাবুত ২৯:৯ ]
১৪]যারা বিশ্বাস স্থাপন করেওসৎকর্ম করে,আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব,যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত।সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের।[সুরা আনকাবুত ২৯:৫৮ ]
১৫] যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে সমাদৃত হবে;[সুরা রূম ৩০:১৫ ]
১৬] যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে যাতে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে প্রতিদান দেন। নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন না।[সুরা রূম ৩০:৪৫ ]
১৭] যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত।[সুরা লুকমান ৩১:৮ ]
১৮] সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ। তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।[সুরা লুকমান ৩১:৯ ]
১৯] যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে।[সুরা লুকমান ৩১:২২]
২০]যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়নস্বরূপ বসবাসের জান্নাত।[সুরা সাজদা৩২:১৯]
২১] তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি।[সুরা আহযাব ৩৩:৩১]
২২]তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [সুরা সা’বা ৩৪:৪ ]
২৩] তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। [সুরা সা’বা ৩৪:৩৭ ]
২৪] আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।[সুরা সাফফাত ৩৭:৮০ ]
২৫]এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।[সুরা সাফফা৩৭:১২১]
২৬]যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। [সুরা মু’মিন ৪০:৪০]
২৭] অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী। তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক। [সুরা মু’মিন ৪০:৫৮]
২৮] নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা হা-মীম৪১:৮]
২৯] যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ,তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?[সুরা হা-মীম ৪১:৩৩]
৩০] যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না।[সুরা হা-মীম ৪১:৪৬]
৩১]যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে।অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।[সুরা যাসিয়া ৪৫:১৫]
৩২] যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।[সুরা মুহাম্মাদ ৪৭:১২]
৩৩]যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।[সুরা তুর ৫২:২১ ]
৩৪]কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা ইনশিকাক ৮৪:২৫]
৩৫] যারা ঈমান আনেওসৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।[ সুরা বুরূজ ৮৫:১১ ]
৩৬]‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।’[সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৭ ]
৩৭]‘তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।’ [সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৮]
নবী(স) বলেছেন, "আসল সর্বহারা আর রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, যারা কেয়ামতের দিন রোজা, নামাজ, অনেক হজ্জ্ব, দান খয়রাত নিয়ে হাজির হবে কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না দেয়া, মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে রিক্ত হস্তে জাহান্নামে যাবে।"
ইসলামের দুটি অংশ, একটি হচ্ছে বিশ্বাসের প্রকাশ্য ঘোষণা যাকে 'ঈমান' বলা হয়, আর একটি হচ্ছে বিশ্বাসের অন্তর্গত বিষয় যাকে 'এহসান' বলা হয়,-- যা ন্যায়গতভাবে সঠিক সামাজিক নিয়ম কানুন মেনে চলার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়। দুটোকে একত্রে প্র্য়োগ না করলে ইসলাম অসম্পূর্ন থেকে যায় যা প্রতিটি নামের মুসলমান দেশে হচ্ছে।
ধর্মীয় বিধি নিষেধ মানা যার যার ব্যক্তিগত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং এটি আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার বিষয়। কিন্তু সামাজিক বিধি নিষেধ মেনে চলা একজন বান্দার সাথে অন্য বান্দার মধ্যকার বিষয়। অন্য কথায় ইসলামিক নীতিমালা যদি মুসলমানরা নিজেদের জীবনে ব্যবহারিক প্রয়োগ না করে, মুসলিম সমাজ দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে যার ভয়াবহ চিত্র মুসলিম দেশ গুলোতে।
আল্লাহ আমাদেরসকলকে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যেয়ে জান্নাত লাভের তৈফিক দিন। আমীন।
No comments:
Post a Comment