সবচেয়ে সহজ প্রকান্ড ভারী ইবাদতের খোঁজে।
খুব সহজ কিন্ত সবচেয়ে কার্যকর একটি ইবাদত যা একেবারে অতি সহজে অনায়াসেই করা সম্ভব হলেও সঠিকভাবে না জানার কারনে প্রায় সবাই সাধারণত উপেক্ষা করে থাকে আর যার গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা বেশীরভাগই বিশেষভাবে অসচেতন। এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতটি জিকরুল্লাহ (আল্লাহকে স্মরণ)। সবচেয়ে সুবিধাজনক ইবাদত হচ্ছে এটি, কারন এ জন্য অজু, গোসল বা পবিত্রতার জন্য নেই কোনো বাধ্যবাধকতা। বসে, দাড়িয়ে, শুয়ে, ভ্রমণে যে কোনো পরিস্থিতিতে, সময়ে বা যে কোনো যায়গায় অনায়াসে এই জিকরুল্লাহ পালন সম্ভব কার্যত প্রকৃতিতে আল্লাহ পাকের অগণিত সৃষ্টি রহস্য দেখে। শুধু শর্ত একটিঃ সকল পরিস্থিতিতে প্রকৃতির সবকিছুতে সৃষ্টিকর্তার আয়াত (নিদর্শন) খুজতে গভীর মনোযোগ সহকারে জ্ঞান ও চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। 'যারা দাড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর জিকির করে এবং চিন্তা -গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে; তারা বলে হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সব পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে তুমি আগুনের শাস্তি থেকে বাচাও' [ইমরান -১৯১] এখানে আল্লাহ তায়ালার জিকির করার অর্থ হলো পৃথিবী ও পৃথিবীর বাইরের জগত সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করা।
=================
শুরুতে আমরা আমাদের নিজের সাড়ে তিন হাত দেহটা পরখ করে আরম্ভ করি।
--------------------------------
**এক~~ মানব ব্যাকটেরিয়া না
ব্যাকটেরিয়া মানব!
**************************
*আমাদের কেবল মুখের ভিতরে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হচ্ছে বর্তমানে এই দুনিয়ায় যত মানুষ তার সমান!
*প্রাপ্ত বয়স্কদের দেহে গড়ে ৩০ ট্রিলিয়ন কোষ রয়েছে।
আর ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা হবে ৪০ ট্রিলিয়ন। অর্থাৎ মানব দেহ কোষের চেয়ে ব্যাকটেরিয়া বেশী- {১:১.৩}
* আমাদের প্রতি পায়ের পদতলে ১ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া থাকে ।
*দেহের স্কিনের প্রতিইঞ্চি যায়গায় ৩২মিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া থাকে।
*মানব দেহের ৩ থেকে ৫ পাউনড ব্যাকটেরিয়া দিয়ে গঠিত।
*প্রতিদিন ১০০ মিলিয়ন থেকে ১ বিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া দেহে জন্মা নিতে পারে । তবে তাদের বেশির ভাগ ক্ষতি করেনা বরং অংশবিশেষ উপকারী।
** দুই~ ~পরিপাকতন্ত্রঃ
*********************
* আমাদের পরিপাকতন্ত্রের এসিড রেজর ব্লেডকে গলিয়ে ফেলে।
* তার পরেও একেবারে গলে না যেয়ে অবিকৃত থেকে কাজ চালিয়ে যায় পাকস্থলি !
* পাকস্থলির কোষ সাথে সাথে নতুন ভাবে তৈরিহয়।
* যেটা এত স্বল্প ব্যাবধানে ঘন ঘন ঘটে যে
* প্রতি তিন চার/দিনের মধ্যে আমরা আর একটা নতুন পাকস্থলী ব্যবহার করতে পারি।
*প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পাকস্থলী ২ লিটার এসিড তৈরি করে।
** তিন~~ব্রেইন :
****************
* ব্রেইনে প্রতি সেকেন্ডে ১০০,০০০ রাসায়নিক ক্রিয়া ঘটে।
* ব্রেইন দেহের ২ ভাগ মাত্র।
* কিন্ত দেহের সব অক্সিজেন ও ক্যালরির ২০ ভাগ সে একাই কাজে লাগায়।
* দেহের ৭৫% পানি দিয়ে হলেও ব্রেইনের ৮০ % কিন্ত পানি দিয়ে গঠিত।
*ব্রেইনের ১০০ বিলিয়ন স্নায়ুকোষ রয়েছে যারা দেহের মধ্যে সংবাদ আদান প্রদান করে ।
*ব্রেইনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাজ গুলো ছাড়িয়ে দেয়া হলেএকটা বালিশের আকার পাবে।
*ব্রেইন থেকে সংকেত স্নায়ুর মাধ্যমে ঘণ্টায় ১৭০মাইল বেগে ভ্রমণ করে।
একজন মানুষের ব্রেইনের ক্ষমতা কয়েক শ সুপার কম্পিউটারের চাইতেওবেশি।
* মানব ব্রেইন ৩ থেকে১০০০ টেরাবাইট তথ্য ধারন করতে সক্ষম।
*যেখানে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল আর্চিবের পরিমাণ হচ্ছে৭০ টেরাবাইট তথ্য (যুক্তরাজ্যের ৯০০বছরেরইতিহাস সংরক্ষিত রয়েছে যে স্থানে )।
** চার~~ ফুসফুসঃ
******************
শ্বাস প্রশ্বাস চালানোর জন্য দেহের অনেক যায়গা দরকার হয়।
*ফুসফুসে২৪০০কিমিঃ(১৫০০মাইল) বায়ুপথ থাকে এবং ৩০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন গর্ত থাকে।তার মানে
*যদি ফুসফুসের সব শিরা ও গর্ত ভাজমুক্ত করে একের সাথে অপরের জোড়া লাগিয়ে সাজানো হয় তবে এটা ৯৯২ কিমি লম্বা হবে।
*আমাদের ফুসফুসের মধ্যে ৩০০ মিলিয়ন কৈশিকনালী আছে যা আমেরিকাকে আড়াআড়িভাবে বেষ্টন করবে।
*ফুসফুসের ভিতরে যে যায়গা রয়েছে সেটিএকটি টেনিস কোর্টের এক দিকের প্রায় সমান হবে।
*প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ফুসফুস ২৩,০০০ বার নিশ্বাসনেয়।
**পাঁচ~~ হার্ট ও ডিএনএঃ
***********************
*হাতের মুষ্টির মত দেখতে হার্ট যেটা ৬০হজার মাইল রক্তনালীর মধ্য দিয়ে রক্ত সরবরাহ করে থাকে।
* দৈনিক আমাদের হার্ট১০০বার করে আমাদের দেহে রক্ত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রবাহিতকরে।
*এক দিনে রক্ত ১৯,৩১২ কিঃমিঃ দূরত্ব অতিক্রমকরে।
* দিনে হার্ট স্পন্দিত হয় ১00,000 বার ,বছরে ৩৫মিলিয়ন বার।
* হার্ট মিনিটে ৫.৫ লিটার রক্ত পাম্পিং করে। দিনে ২হাজার গ্যালন।
শরীরের সব DNA পেচমুক্ত করলে লম্বা হবে প্রায় বিলিয়ন মাইল-
*যে দূরত্বটা হচ্ছে পৃথিবী থেকে প্লুটো যেয়ে ফিরে আসার সমান।.
* রিচার্ড ডকিন্স DNA সম্পর্কে বলেছেন,
[‘There is enough information capacity in a single human cell to store the Encyclopaedia Britannica, all 30 volumes of it , three or four times over’
একটি DNA তে এতো পরিমাণ স্পেস আছে যেখানে চাইলে৩০ ভলিউমের ৩-৪ টি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা লিখে রাখা সম্ভব।]
** ছয়~~আমাদের দেহ প্রতিনিয়ত কি হারাচ্ছে?
*********************
প্রাপ্ত বয়স্করা প্রতি মিনিটে সেল হারাচ্ছে ৪ কোটিরও বেশি (৪১৬৬৬৬৬৬)।
*প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ বিলিয়ন দেহ কোষ নষ্ট হয়। *যে সবের বেশির ভাগ হচ্ছে রক্ত ও স্কিন কোষ যারা প্রতিনিয়ত আবার তৈরী হচ্ছে।
*প্রতিদিন ১লক্ষ ৯০ হাজার ব্রেইন সেল নষ্ট হয়।
*তার ভিতর নিউরন হচ্ছে৯হাজার।
** সাত~আমাদের দেহ প্রতিনিয়ত কি কি তৈরি করছে?
**************************
*সারা জীবন আমরা যে থুথু তৈরি করি যা দিয়ে
২টি সুইমিংপুল ভরাট হয়।
*আমাদের পায়ে অর্ধমিলিয়ন ঘর্ম নির্গত গ্রন্থি রয়েছেযেটা
দিনে ১০ আউন্স তরল নির্গত করে।
*গড়ে সাধারণত একজন মানুষ৩০মিনিটে যে তাপ
তৈরী করতে পারে যা দিয়ে *অর্ধগ্যালন পানি ফুটানো যায়।
*আমাদের নাক ৪০হাজার ভিন্ন ধরনের ঘ্রান চিন্থিত করতেসক্ষম।
* দেহে প্রতিদিন ৩০০ বিলিয়ন নতুন কোষ তৈরি হয়।
*একজন পুরুষ প্রত্যেক দিনে ১০ মিলিয়নের মত শুক্র তৈরী করে।
*একজন মহিলা অর্ধ মিলিয়ন এগ তৈরী করে।
**প্রতি মিনিটে ১৮০ মিলিয়ন লাল রক্ত কনিকা (RBC)দেহে তৈরী হচ্ছে।
*প্রতি বছর ৩ মিলিয়ন লিটার রক্ত দেহ যুক্ত করে।
*যকৃত প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১,৫০০ লিটার রক্ত শোধনকরে।
* আমাদের দেহের স্কিন প্রতি ২৭ দিনে পুনর্গঠিত হয়।
** আট~দেহের কয়েকটি বিশেষ চাঞ্চল্যকর ঘটনাঃ
***********************
** বিকেলের চেয়ে সকালে আমরা ১ সেন্টিমিটার বেশিলম্বা হই
*কারন দিনে কাজ কর্মের সময় আমাদের হাঁটুর তরুণাস্থিএবং অন্যান্য যায়গা ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়।
** মুখ দিয়ে কোন খাদ্যের স্বাদ উপলব্ধির জন্য সর্বপ্রথম দরকার এটা গলিয়ে ফেলা। জিহ্বা শুষ্ক থাকলে ক্যান্ডির স্বাদ কিন্ত বোঝা যাবেনা ।
*মাত্র .০০১ সেঃ এর ভিতরেই দেহ স্বাদের ধরন নির্ণয় করতে পারে যেটা চোখের পলকের চেয়েও দ্রততর যদিও চোখ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ২৩ হাজার বার পলক ফেলে। ** মানুষের আঙ্গুল এত ক্ষুদ্র জিনিষের অনুভূতি পেতেপারে যেটা
*চুলের ব্যাসের ৭৫০০ গুনের চেয়েও ছোট হবে (১৩ন্যানোমিটার )
** আমরা যখন হাসি তখন আমাদের দেহে
*ক্লান্তি সৃষ্টিকারী হরমোন গুলো কাজ করতে পারে না !
*সে কারনে আমাদের তখন আরও বেশি সজীব এবং সতেজ দেখায়।
**একই মাপের ষ্টীল বারের চেয়ে মানুষের হাড় ৫গুন বেশি শক্ত তবে এটা আঘাতে ভঙ্গুর হতে পারে।
** স্বপ্ন দেখে বেশি IQসম্পন্ন লোকজন ।
** পায়ে ৫২ হাড় থাকে যা সমগ্র দেহের হাড়ের চার ভাগের একভাগ।
**বেশিরভাগ শিশু নীল চোখ নিয়ে জন্ম গ্রহণ করলেও সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি ও মেলানিন পরবর্তীতে চোখের আসল রঙ নির্ধারণ করে।
**বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের রঙ হালকা হয়ে যায়।
** আমাদের হাতের নখ যা দিয়ে তৈরি ঠিক সেই পদার্থ দ্বারা চুল তৈরি।
**হাতের নখ এবং চুল উভয় একই পদার্থের তবে দুটির ঘনত্ব আলাদা।
মানুষের একটি চোখ ৭০০ টি সুপার ডিজিটাল ক্যামেরার সমান।
No comments:
Post a Comment