Saturday, August 5, 2017

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টপ অব দ্য ওয়ার্ল্ড ও ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ!

ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের টপ অব দ্য ওয়ার্ল্ড  ও ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ!
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাথে ইসলামের তুলনা নয়,এখানে করা হয়েছে টপ অব দ্য ওঅ্যাল্ড এর সাথে  পাঁচ স্তম্ভের। বালটিমোরে  ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটি বিল্ডিং রয়েছে, দর্শকদের আকৃষট করার জন্য প্রচারপত্রে লেখা-TOP OF THE WORLD.  । বিল্ডিং এর উপরে রক্ষিত টেলিস্কোপের দ্বারা সম্পূর্ণ শহর দেখার সুযোগ রয়েছে। মণে প্রশ্ন জাগল- এটা কী করে TOP OF THE WORLD হয়? বিল্ডিংটা বড়জোর ৩৯ তলা আর এটা কিনা TOP OF THE WORLD? বিশ্বে ১০১ তলা বিল্ডিং থাকার পরে এই পূচকী বিল্ডিং কিভাবে TOP OF THE WORLD’ , বিষয়টা তাহলে কী? আর চুপ থাকা সম্ভব হলোণা। প্রশ্ন করে জানতে পারলাম এ বিল্ডিং  চারকোনা আকৃতির ণয়। এটা হচ্ছে বিশ্বের সব চেয়ে উঁচু PENTAGONAL BUILDING. র সেই জন্য এই নামকরণটি।
মূলত ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একদম ভুল ব্যাখ্যা সাধারন জনমনে প্রচলিত।প্রচলিত ধারনা এই পাঁচটি কাজ বা দায়িত্ব পালনের নাম ইসলাম। আসলে হাদিসে উপমাটি দ্বারা ইসলামকে একটি বাড়ির সাথে তুলনা করে বলা হয়েছে স্তম্ভ ছাড়া যেমন কোনো বাড়ির কল্পনা সম্ভব নয় তেমনি ইসলাম পাঁচ (বিশ্বাস,নামাজ,রোজা, হজ্জ,জাকাত)স্তম্ভের উপর দাড়িয়ে আছে।প্রশ্ন আসে-শুধু স্তম্ভ থাকলেই কি বাড়ির অস্তিত্ব বাস্তবে কল্পনা করা যায়?বাড়ির পরিপূর্ণতার জন্য দরকার ছাদ, দেয়াল,জানালা-দরজা, আসবাবপত্র, পাকঘর,শয়নকক্ষ আরও কত কি? এ সব কিছু মিলেই না হয় একটা বাড়ি!তবে সব কিছুর আগে ভাগেই দরকার স্তম্ভ যার উপর গড়ে উঠবে বাড়িটি।বিশ্বাস,নামাজ,রোজা,হজ্জ,জাকাত সামগ্রিক ইসলামের বুনিয়াদ/ভিত  অর্থা আংশ বিশেষ।কোরআনের মাত্র একটি আয়াত ও পাওয়া যাবেনা যেখানে বলা হয়েছে এই পাঁচটি কাজের মাধ্যমে জান্নাত পাওয়া যাবে? কোরআন পাকে জান্নাতে যাবার শর্ত হিসাবে যত আয়াত দেখা যায় সে গুলোতে আর ও একটি  গুনের আধিকারী হতেই  হবে  জান্নাত লাভের জন্য।না হলে জান্নাত কপালে জুটবেনা। জান্নাত লাভের জন্য তাকে অবশ্য অবশ্যই সকর্মশীল হতেই হবে। মূলত নামাজ,রোজা,হজ্জ,জাকাতের  লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে কর্মশীল হিসাবে তৈয়ারি করা।‘নিশ্চয় সালাত তোমাদেরকে আন্যায় খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।’ জান্নাত লাভের শর্ত হিসাবে বিশ্বাসের সাথে সর্বত্র সকর্মের কথা জুড়ে দেয়া হয়েছে। জান্নাত লাভের সব আয়াত গুলিতেই বিশ্বাসের সাথে সকর্মশীল হওয়াটা জরুরী ধরা হয়েছে।
 ‘যারা ঈমান আনে ও সকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা। তাদের পালন কর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নিঝ্ররনী প্রবাহিত।তারা সেখানে থাকবে আনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তষট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তষট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় করে।’ [৯৮(৭,৮)] ‘স শুধু এই নয় যে পূর্ব পশ্চিম দিকে মুখ করবে, বরং সকাজ হল ……………..।’[২(১৪৭)]
‘যে সকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যই করে, আর যে অসকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই জুলুম করেন না’ [৪১(৪৬)]
‘নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করে ও সকর্ম করে,তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।’[৪১(৮)]
জান্নাত লাভের জন্য ঈমান আনার সাথে সাথে সকর্ম করার কথা যে সব আয়াতে রয়েছে তার একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলঃ
সূরা      আয়াত
২০---   ১১২ 
২১---   ৮৫,৮৬ 
 ২২---   ১৪,৫০ 
২৮---  ৬৭,৮০,৮৪
২৯---  ৭,৯,৫৮
৩০---  ১৫,৪৫
৩১--- ৮,৯,২২
৩২---  ১৯
৩৩--- ৩১
৩৪---  ৪
৩৭--- ১৯,৮০,১২০,১২১,১৩০-৩২
৪১--- ৮,৩৩,৪৬
৪৪--- ৪০,৫৮
৪৫--- ১৫
৪৭--- ১২
৫২--- ২১
৮৪--- ২৪
৮৫--- ১১
৯৮--- ৭,৮
এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছেঃ সকর্মশীল ব্যাক্তিকে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এবং কাজে স হতে হবে বা সততার পরিচয় দিতে হবে।সকর্মশীলতার প্রতিজোগিতা সারা জীবনভর করে যেতে হবে। দিনের কিছু সময় স থেকে আন্য সময় অস থাকলে সকর্মশীল হিসাবে পরিচয় দেবার সুযোগ একেবারেই নেই।দিন রাতের ২৪ ঘণ্টাই স হতে হবে।দিনের কিছু কাজে স আর বাকিটায় অস এই প্রতারনার সুযোগ একেবারেই নেই।সকর্মশীল মানুষ সারাজীবন স কর্মের উপর অবিচল থাকবে। শেষ বিচারের দিন সব ফাঁস হয়ে পড়বে। মসজিদের দেশ যার প্রতিটি জায়গায় আজানের ধ্বনি শুনা যায় সে দেশ যদি দুনীতিতে শিরোপা লাভের সৈভাগ্য অর্জন করতে পারে তার অর্থ দাড়ায় বিশ্বের সব দেশ থেকে বেশি অসকর্মশীল মানুষ এদেশে বাস করে।দুর্নীতিবাজদের আখরা। জান্নাতে যাবার আন্যতম শর্ত হচ্ছে সকর্ম। আর সব গুন থাকলেও অসকর্মশীল ব্যাক্তি জান্নাতের ধারের কাছেও ঘেষতে পারবেনা।নামাজি, দ্বীনদার হবার মূল কথা হচ্ছে সকর্মশীলতা।বাহ্যিক ভাবে যত বড় বুজরগ,পীর, দ্বীনদার হোক না কেনো একমাত্র ঈমানদার ও সকর্মশীলরাই জান্নাতে যাবে। জান্নাতে যাবার শর্ত হচ্ছে সারা জীবন পার্ট টাইম না হয়ে ফুল টাইম সকর্মশীল হতে হবে।কারন প্রতিটি  মূহুর্ত,কাজ এবং নিয়তের উপরই নির্ভর করবে সে কোনপ্রকার সকর্মশীল।সুবিধাবাদী  সকর্মশীল না মন মানসিকতা ও কাজে প্রকৃত আর্থে জীবনের সার্বক্ষণিক ব্যাপারেই সকর্মশীল।


প্রায় এক যুগ আগে উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশ কম্যিউনিটির একটি সমাবেশের শুরুতে আমি এ বিষয়ের উপর সংক্ষিপ্ত দরস দিয়েছিলাম। মনে পড়ে- পরবর্তী বক্তারা এর উপর পজিটিভ প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। 
x