Friday, March 22, 2019

নিউজিল্যাণ্ডে ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি

নিউজিল্যাণ্ডে ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি
@ নিউজিল্যাণ্ডে পৌচাশিকতার কারণে নিউজিল্যাণ্ডের পার্লামেন্টের অধিবেশন কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হয়েছে।
@ নিউজিল্যাণ্ডের পুলিশ মসজিদে গিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করছে।
@ ক্ষতিগ্রস্থ মুসলমানদেরকে নিউজিল্যাণ্ডের রাষ্ট্রীয় তহবীল সহায়তা দিচ্ছে।
@ নিউজিল্যাণ্ডের প্রচলিত অস্ত্র আইনের সংস্কার হচ্ছে।
@ নিউজিল্যাণ্ডে পৌচাশিকতার কারণে সারা পশ্চিমা বিশ্বে যে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে ও মুসলমানদের প্রতি সহানুভুতির হাত প্রসারিত হয়েছে, তা মুসলমানরা নিজেরা কঠোর পরিশ্রম করেও হয়তো আগামী এক শ' বছরে পারতো না।
চলমান ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি
কোরাইশ নেতারা একসাথে হয়ে আলোচনায় বসলেন- এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পায়ের নিচে আর মাটি থাকবে না। যে মুহাম্মাদের কাছে আসে সে-ই মুসলমান হয়। এখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে, যার ফলে কেউ আর তার কাছে আসার সাহস না পায়। কিভাবে এটা করা যায়? প্রস্তাব আসে, প্রচার করতে হবে, মুহাম্মাদ একজন কবি। বাকিরা একমত না হয়ে বলেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। কুরআন কবিতার মতো নয়। লোকে এটা বিশ্বাস করবে না। তাহলে বলতে হবে, তিনি জাদুকর। ‘তিনি তো কোনো জাদু দেখান না। তা বলাও সঠিক হবে না।’ তাহলে কী বলা যায়? বলতে হবে গণক। এটাও লোকে বিশ্বাস করবে না। কারণ তিনি কখনোই গণকের মতো কাজ করেন না। তাহলে উপায়! সত্য কথাটা সবাইকে আগেভাগেই জানিয়ে দিতে হবে। তাহলে কেউ আর কাছে ঘেঁষতে সাহস করবে না। প্রচার করতে হবে- তার কাছে গেছ তো মরেছ। তিনি ভাইয়ে-ভাইয়ে বিরোধ বাধিয়ে দেন। পিতা-পুত্রের ভালোবাসা কেড়ে নেন। একে অপরের শত্রু হয়ে যায়। আর আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সমাজের সবাই তার দুষমন হয়, সে একঘরে হয়। এ কথা শোনে লোকজনের কৌতূহল বরং ভীষণভাবে বেড়ে যায়। কে এমন ব্যক্তি, যার কাছে গেলেই এত অঘটন ঘটে যাবে? ফলে বেশি বেশি মানুষ আসা শুরু করল এবং মুসলমান হওয়ার হারও দ্রুতগতিতে বাড়তে লাগল।
বুশের নাইন-ইলেভেনের ঐতিহাসিক নাটকের পরও এমন কিছু একটা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
নয় এগারোর ঘটনার ১৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইএসআই বা ইউরোপিয়ান সায়েন্টিফিক ইন্সটিটিউটের প্রকাশনা 'ইউরোপিয়ান সায়েন্টিফিক জার্নাল' বলছে: অব্যাহত নানা অনুসন্ধানের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে মার্কিন বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ার্স ধ্বংস করা হয়েছিল নিয়ন্ত্রিত ধ্বংস-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে সামগ্রিকভাবে গত ১৬ বছরে যে জিনিষ গুলো বাস্তবে একেবারেই পরিষ্কারঃ
১) BLDG. # 7, সম্পুর্ণ controlled demolition, এটা এখন বিতর্কের উর্ধে।
২) কোন বিমান Pentagon কে আঘাত করেনি, ওটা ছিল missile, যা সবসময় আমেরিকার Air Force অথবা Navy এর নিয়ন্ত্রণে। তাছাড়া Pentagon এর কোন অংশে Renovation চলছে এটা বাইরের কারও জানার কথা না।
Building #7- ৪৭ তালা ভবন, কোন বিমান আঘাত করেনি অথচ পরিষ্কার ওটা ছিল controlled demolition, Free Fall, তারপর পেন্টাগনে যাত্রীবাহী বিমান ধংসের যাত্রীদের মালামাল আর মৃতদেহের কোন প্রমান সরকার দেখাতে পারেনি। আর Shanksville, Pennsylvania-তেও কোন যাত্রীবাহী বিমান ধ্বংসের নমুনা CNN, ABC, FOXNEW তুলে ধরতে পারেনি।
টুইন টাওয়ার হামলার প্রায় দুবছর আগে ভাগে ট্রাম্প তার বইতে (‘The America We Deserve’প্রকাশিত জানুয়ারি ২০০০) Nostrodomas এর মত ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন~~ ও সামা বিন লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলা চালাবেন। US Presidential hopeful Donald Trump "warned" of the horrific September 11 attack on the World Trade Center in a book published less than two years before the world's worst terror strikes happened, it is being claimed. By JON AUSTIN PUBLISHED: 03:42, Tue, Feb 23, 2016 | ট্রাম্পকে তাই বলা হচ্ছে ‘মডার্ন ডে নসটডোমাস।’
Alex Jenes Radio Show সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি ওই বইতে বলেছি, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এই ব্যাক্তি ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে।’’ ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে সামগ্রিকভাবে দেখা যায় আসলে টুইন টাওয়ারে হামলা ছিল আভ্যন্তরীণ বিষয় (পরিকল্পনা) মাত্র।
ক্লিনটন তখন মসনদে। আমি বাল্টিমোরে, ঘুম থেকে উঠে একদিন এক অবিশ্বাস্য নাটকীয় সংবাদ জানতে পারি। হোয়াইট হাউজে ইসলামের চাঁদতারা পতাকা উড়ছে। ভয়ের কিছু ছিল না, কারণ আলকায়েদার জন্ম তখনো হয়নি এবং বিন লাদেনেরও পাত্তা ছিল না, যিনি হোয়াইট হাউজে এসে এ ধরনের অঘটন ঘটানোর হিম্মত রাখেন। তবে সে সময় এখানকার মিডিয়ায় একটি ঝড় বয়ে যাচ্ছিল- যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত সম্প্রসারণশীল ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। এ সময়টিতে আমি বাল্টিমোর জন হপকিন্সে গবেষণা করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাল্টিমোরের হোমউড ক্যাম্পাসের লাইব্রেরির বেসমেন্টের ওয়ালের একটি তথ্য আমার চোখে পড়ে- প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে এক লাখ মানুষ ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করছে। মিডিয়ার অন্য সূত্রে জানতে পারি, এই এক লাখ নওমুসলিমের মধ্যে মহিলার সংখ্যা বেশি। পাশ্চাত্য ভাবধারায় লালিতপালিত মুক্ত হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মেয়েরা এত ঝুঁঁকি নিয়ে কেন ইসলামকে পছন্দ করছে যেখানে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, আত্মসমর্পণ ও ভিন্ন রূপ হওয়ার বিধান। হয়।
আমেরিকার স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় জনসংখ্যার বেশির ভাগ ছিল খ্রিষ্টান। এরপর ছিল ইহুদি। অন্যান্য ধর্মের লোক আনুপাতিকভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল না। সরকারিভাবে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, খ্রিষ্টান ও ইহুদি এই দুই ধর্মের পতাকা হোয়াইট হাউজে ওড়ানো হবে। হোয়াইট হাউজে ক্লিনটনের সময়  থেকে ইসলামের পতাকাও স্থান করে নেয়।

Thursday, March 7, 2019

The Qur'an and Outer SPACE , the LOWEST JANNAT & TASTE OF IMAN [faith]


The Qur'an and Outer 
SPACE , the LOWEST JANNAT [paradise] & TASTE OF IMAN [faith] 
                                                                                                   M. Ali Reza 

Imam Gazzali wrote in the middle ages: A person who has no knowledge of space/universe, his taste of Iman is comparable to an impotent man who has no feelings of making love's extraordinary extreme enjoyment. After completion of the punishment of Jahannam, hell, the least person would get space of Jannat [paradise] that is 10 times the size of the world. Then could we imagine the size of space for the best rank of heavenly people.
LATEST SCIENCE ABOUT THE UNIVERSE:
Three fourth part of Earth is water; half of the earth's people live on one hundredth part of the land of Earth (recent report of NASA).Our Sun is an average ordinary star. The Sun is the closest star to Earth and the center of our solar system. The sun has been producing light energy for about 4.6 billion years and will do so for another 5 billion or so. The Sun measures 1.4 million km in diameter which means that 109 Earths could fit across its surface and 1.3 million Earths would fit inside it. The Sun is nothing but a star. On the other hand, a galaxy is a vast group of stars built together. It is estimated that there are 100-125 billion in the Universe . They are not scattered randomly but exist in clusters, vast distances apart. All the galaxies together take up just two millionths of space.
Size & shape of galaxies:
The largest are more than a million light years across (One light year =9.4 trillion km).The smallest, called dwarf galaxies, are a few thousand light-years wide.
Andromeda measures 250,000 light-years from side to side. Trillions of stars are arranged in one of four basic shapes: spiral, barred spiral, elliptical, or irregular. Each star follows its own orbit around the center of the galaxy. Stars in a spiral galaxy typically take a few hundred million years to make an orbit. A single galaxy is made of billions or trillions of stars. The most distant object that can be seen by the naked eye from the Earth is Andromeda galaxy which is 2.9 million light years from us.
Expanding Universe:
In astronomical observations of stars, galaxies and other sources of light, we can determine how fast the sources are moving, either directly away from us or directly towards us, by measuring the Doppler shift of the light that reaches us. If a certain star were at rest relative to us, we would detect light from it with a certain proper frequency. However, if the star is moving either directly away from us or directly toward us, the light we detect has a frequency that is shifted from the proper frequency. This is due only to its motion directly toward us or away from us. If the source is moving away from us, the Doppler shift is called a red shift that is the wavelength increased. Thus it is possible to measure the relative speeds at which galaxies are approaching us or receding from us by measuring the shifts in the wavelength of the light they emit. If we look only at distant galaxies, beyond our immediate galactic neighbors, we find a astonishing fact. They are all moving away (receding) from us. In 1992 Hubble established a connection between the apparent speed of recession of a galaxy and its distance from us – namely, that they are directly proportional. It shows,  a galaxy a million light years from us is rushing away at about 22.4 kilometers per second, while another galaxy two million light-years distant is flying away from us twice as fast, at 44.8 kilometers per second.. The discovery of the expanding of the Universe is one of the greatest revolutionary discoveries of the twentieth century.
More importantly, Al Quran narrates, “With power did We construct the Universe. Verily, We are able to extend the vastness of space thereof.” : Surah 51-Adh-Dhariyat; Ayat 47.

Again we see, all the galaxies together take up just two millionth of space. Even in the present context of the universe, 10 times of the Earth for the lowest one is nothing but a simple matter.

মানুষ এক আদিমাতার সন্তান


মানুষ এক আদিমাতার সন্তান
১৪ আগস্ট ২০১৪, বৃহস্পতিবার,
এই সময়ে বিশ্বে জনসংখ্যা ৭২০ কোটিতে পৌঁছেছে। আমাদের মা-বাবা অদ্বিতীয়, এর অর্থ আমরা সবাই ভাই-বোন, নিগ্রো-ককেশিয়ান এক আদি মায়েরই সন্তান। বিশ্ব ইতিহাসে সাড়া জাগানো ডারউইনের বিপ্লবী বিবর্তনবাদের সূত্র ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে আসছিলেন মানবজাতির পূর্বপুরুষদের এ ধরাপৃষ্ঠে আবির্ভাব হয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে। বিবর্তনের ধারা হিসেবে তার অর্থ দাঁড়ায় আমাদের পূর্বপুরুষদের সংখ্যা স্বভাবতই হবে অগণিত। বেবুন, গরিলা, শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং এমনি সব প্রজাতির এক ধাপ থেকে অপর ধাপে উত্তোরণের মাধ্যমে বিবর্তনের শেষ ধাপ ছিল আমাদের। তাই ধরে নেয়া হয়েছিল আমাদের আদি মা-বাবার সংখ্যা ছিল অসংখ্য, যার কারণে বলা হতো জাতিতে জাতিতে, বংশ ও গোত্রের মধ্যে কাঠামোগত, আকৃতিগত, চর্মবর্ণ, চুলের রঙ ইত্যাদিতে এত পার্থক্য। এত দিনের বিবর্তনের এসব জল্পনাকল্পনাকে ভেস্তে দিয়ে বিজ্ঞানাগারে প্রমাণিত হলো, আমাদের মা-বাবা অদ্বিতীয়। প্রশ্ন উঠতে পারে, আমরা কি তা হলে বিবর্তনের ফসল নই? নাকি ভিনগ্রহ, সেই পৌরাণিক বেহেশত থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের আগমন?
সাম্প্রতিক গবেষণায় একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যা এএফপি, আলজাজিরাসহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ১৮ লাখ বছরের পুরনো একটি খুলির ওপর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলছেন, মানুষের পূর্বসূরি আদি প্রজাতি (হোমিনয়েড) আসলে তিনটি নয়, বরং একটিই ছিল।
সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
২০০৫ সালে জর্জিয়ার দামিনিসি প্রতœস্থলে খুবই ভালো অবস্থায় থাকা পাঁচটি হোমিনিড খুলি উদ্ধার করা হয়। এগুলোর একটির সাথে ২০০০ সালে পাওয়া একটি চোয়ালের হাড় ঠিকঠাক মিলে যায়। এতে একটি পরিপূর্ণ খুলি নিয়ে গবেষণার সুযোগ পান বিজ্ঞানীরা। ওই খুলির ধারকের মস্তিষ্কের আকার ছিল আধুনিক মানুষের মস্তিষ্কের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।
সংশ্লিষ্ট গবেষক এবং সুইজারল্যান্ডের জুরিখে অবস্থিত অ্যানথ্রোপলজিক্যাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড মিউজিয়ামের বিশেষজ্ঞ মার্সিয়া পোন্স দো লিয়ঁ বলেন, চোয়ালজুড়ে সম্পূর্ণ করা খুলিটি হচ্ছে ওই যুগের সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ করোটি।
গবেষকেরা বিস্ময়ের সাথে ল করেন, হোমিনয়েডের পাঁচটি খুলির গঠনে বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে। অথচ সেগুলো একই সময়ের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে। তবে কিছু পার্থক্যের কারণে সেগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির বলে ধরে নেয়া হয়েছিল। এরা খুলিগুলোর চোয়াল, ভ্রƒ ও গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক পার্থক্য বিশ্লেষণ করেন। এতে সব খুলি একই প্রজাতিভুক্ত আদি প্রাণীর হতে পারে বলে জোরালো সম্ভাবনা দেখা যায়।
বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল নিউজ উইক জানুয়ারি ১১, ১৯৮৮ সংখ্যায় ‘আদম হাওয়ার অনুসন্ধানে’ শিরোনামে একটি নাতিদীর্ঘ বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। (২০০১ সালে আমি যুক্তরাষ্ট্রে মিডিয়ার একটি টকশোতে জানতে পারি ১১/১/১৯৮৮ সংখ্যার নিউজ উইকের কথাটি। আমি ডাইরিতে নোট করি। স্থানীয় এক লাইব্রেরি থেকে আমি প্রবন্ধটির কপি সংগ্রহ করি)
প্রবন্ধটির মূল বক্তব্যটি ভাষান্তর করা হচ্ছে :
আমাদের এজমালি মা : ‘পৌরাণিক কাহিনীর বর্ণনাকারীদের উপাখ্যান এখন বিজ্ঞানীদের মৌলিক গবেষণার ফলাফলের সাথে একীভুত হতে যাচ্ছে। আমরা সবাই অতীতের এক স্থানে অভিন্ন পূর্বপুরুষের অংশ ভাগ করি।’ এ আবেগময় বক্তব্যটি করেছেন নিউজ উইকে প্রকাশিত নিবন্ধ ‘The Search for Adam and Eve-এর লেখকেরা। এরা আস্থার সাথে বলেছেন, ‘এই সময়ে কিন্তু এই প্রমাণগুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে নতুন প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে যারা গবেষণা করেছিলেন আফ্রিকার চিড়ধরা শুষ্ক উপত্যকায় না বসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যামেরিকান ল্যাবরেটরিতে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, আমাদের সর্বজনীন মা হচ্ছেন এক মহিলা, যিনি ধরাপৃষ্ঠে দুই লাখ বছর আগে বাস করতেন এবং রেখে গেছেন ‘জিন’, যেটি মানবজাতির সবাই নিজ দেহে বহন করে চলছে। বর্তমান পৃথিবীতে যত লোক বাস করছে সবাই এসেছে তার থেকে।’
আণবিক জীববিদ্যায় প্রশিক্ষিত বিজ্ঞানীরা তল্লাশি চালিয়েছিলেন আন্তর্জাতিকভাবে বিভক্ত বিভিন্ন শ্রেণীর জিনের মাঝে। আর পরীা করে তাদের মধ্য থেকে কুড়িয়ে নিচ্ছিলেন একটি ডিএনএ, যেটা আমাদের একজনমাত্র মহিলার দিকেই নিয়ে যায়, যার কাছ থেকে আমরা সবাই এসেছি।
আমাদের এজমালি মাকে খুঁজে বের করার ল্েয গবেষক রেবেকা ক্যান ১৪৭ জন গর্ভবতী মহিলাকে রাজি করান তাদের গর্ভের ফুল বিজ্ঞানকেন্দ্রে দেয়ার জন্য। তিনি বার্কলের উইলসন ল্যাবে জীববিজ্ঞানী মার্ক স্টোন কিংয়ের সাথে কাজ করছিলেন। ক্যান বাছাই করেন কিছু আমেরিকান মহিলাকে, যাদের পূর্বপুরুষ এসেছিলেন আফ্রিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়া থেকে। নিউগিনি ও অস্ট্রেলিয়ায় তার সহযোগী হিসেবে যারা কাজ করছিলেন তারা খুঁজে পেলেন সেখানকার আদিবাসীদের। শিশুরা জন্ম নিল, গর্ভের ফুল সংগ্রহ করে হিমায়িত করা হলো এবং বার্কের উইলসন ল্যাবে বিশ্লেষণ করা হলো। ব্লেন্ডারের সাহায্যে টিস্যুগুলো পরিণত করা হলো স্যুপে। সেন্ট্রিফিউজ কোষ বিভাজন ডিটারজেন্টের সাথে মেশানো হলো, স্ফুর জ্যোতির্ময় দিয়ে শুকিয়ে আবারো সেন্ট্রিফিউজ করা হলো। ফলে পাওয়া গেল স্বচ্ছ তরল পদার্থ, যেটা ছিল ডিএনএ’র খাঁটি উপাদানে তৈরি। বিস্ময়কর ব্যাপার যেটা নজরে পড়ল, তা হচ্ছেÑ এই ডিএনএ সেই ডিএনএ নয়, যা শিশুর দেহকোষের নিউকিয়াসে এবং শিশুর দৈহিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে থাকে। এটি উত্তরাধিকার সূত্রে আসে কেবল মা থেকে। বার্কলের গবেষকেরা প্রতিটি ডিএনএ নমুনাকে টুকরো টুকরো করে কর্তন করলেন, যাতে এগুলোকে অপর সব শিশুর ডিএনএ’র সাথে তুলনা করা সম্ভব হতে পারে। যে ফল পাওয়া গেল, তাতে দেখা যায় বিভিন্ন জাতির মধ্যকার পার্থক্যটা বিস্ময়কররূপে অতি সামান্য। স্টোন কিং বলেন, ‘বিভিন্ন জাতির মধ্যে জেনেটিক পার্থক্যটা বাস্তবিকই খুব কম হয়ে থাকে।’
নিউগিনিদের ডিএনএতে দেখা গেল তাদের ডিএনএ অপরাপর নিউগিনিদের চেয়ে বরং আর সব এশিয়ানদের অনেক বেশি কাছের। এটা অদ্ভুত মনে হতে পারে জাতি অথবা বংশগত বাস্তব পার্থক্য সত্ত্বেও। বাস্তবে দেখা যায়, জাতিগত অনেক পার্থক্যই মূলত গতানুগতিক, নিতান্ত সাধারণ।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মানুষের ত্বকের রঙ কালো হয়ে থাকে আবহাওয়ার সাথে বড় ধরনের সামঞ্জস্যতা রেখে। আফ্রিকানদের কালো রঙ সূর্যের রশ্মি প্রতিরোধের জন্য হয়ে থাকে। তেমনি ইউরোপিয়ানদের গায়ের রঙ সাদা হওয়ার কারণ হচ্ছে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি শোষণ যেটা ভিটামিন ‘ডি’ তৈরিতে সাহায্য করে। ত্বকের রঙের পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন হয় কয়েক হাজার বছরের। পান্তরে শত শত হাজার বছরের দরকার পড়ে ব্রেইন সাইজের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনে। প্রতিটি শিশুর ডিএনএ গঠন শেষ পর্যন্ত মিলে যায় একজন মাত্র মহিলার সাথে। জেনেটিক উত্তরাধিকার এমন একটি বিষয়, যেটা এমনকি পরিসংখ্যানবিদদের কাছেও তেমন বিস্ময়কর কিছু নয়। উইলসন ল্যাবের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ‘অবশ্যই একজন ভাগ্যবতী মা ছিলেন।’ ইলোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডগলাস অলেস পরিচালিত গবেষণায় একদল প্রজনন বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন যোগসূত্র থেকে ধারণা করেন, দুনিয়ার প্রথম এই মহিলার আবির্ভাব হয়ে থাকবে এশিয়া মহাদেশে। বিশ্বের চারটি মহাদেশে ৭০০ মানুষের রক্ত থেকে সংগৃহীত মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ’র ওপর ভিত্তি করে তারা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেন। ‘ডিএনএ’ টুকরো টুকরো করে খণ্ডিত করার জন্য তারা বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন এবং সেগুলোকে বংশতালিকায় সাজান। এই তালিকা পরিশেষে অতীতের একজন মহিলার কাছে গিয়ে থেমে যায় যিনি দেড় থেকে দুই লাখ বছর আগে এই ধরাপৃষ্ঠে বাস করতেন, তাদের হিসেবে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্ম বিজ্ঞানী স্টেফন জে গোল্ডের মতে, ‘এটা আমাদের এই বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করে যে, বিশ্বের সব মানুষ তাদের বাহ্যিক ও আকৃতির পার্থক্য সত্ত্বেও একটিমাত্র সত্তা থেকে এসেছে এবং মানব বংশের উৎপত্তি খুব কাছের একটিমাত্র জায়গায়। সব মানুষের মধ্যে জীবতাত্ত্বিক ভ্রাতৃত্ববোধ অনেক বেশি গভীর, যার ধারণা আগে কখনো ছিল না।’
দৈনিক বাল্টিমোর সান পত্রিকা Geneticists Reveal Human Family Trees শিরোনামে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করে। আমি এখানে তার ভাষান্তর করছি।
মানবজাতির পিতা : মানবদেহের জীবকোষে যে ‘ণ’ ক্রোমোজম রয়েছে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে এমন সঙ্কেত পাওয়া যায় যে, গোটা মানবজাতির আদি পিতা মাত্র একজন। গবেষণার এই রিপোর্টটি উদঘাটন করেছে, আজকের প্রত্যেকটি পুরুষ যে ‘ণ’ ক্রোমোজম ধারণ করছে, তার লক্ষণ  থেকে এটা স্পষ্ট, এটি এসেছে একজন মাত্র পুরুষের কাছ থেকে, যিনি এ পৃথিবীতে বাস করতেন প্রায় এক লাখ নব্বই হাজার বছর আগে।
এ নতুন গবেষণার ফলাফল এ ধারণাটাই সমর্থন করে, আধুনিক মানুষের আবির্ভাব ঘটেছিল পৃথিবীর মাত্র একটি স্থানে। এ পুরনো ধারণা আর সঠিক নয় যে, পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশের একাধিক স্থানে মানবজাতির পূর্বপুরুষদের উদ্ভব ঘটেছিল। এই দৃষ্টিভঙ্গিটা আগে বিশ্বাস করা হতো। ডারউইনের ঐতিহাসিক বিবর্তনবাদ অনুসারে অনেক বিজ্ঞানী বিশ্বাস করতেন, আধুনিক মানুষের আবির্ভাব হয়ে থাকবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে। ‘ণ’ ক্রোমোজম হচ্ছে মানব বংশানুগতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক উপাদান ‘জিন’, যে ২৪ ধরনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুতা দিয়ে গঠিত। তার একটি হচ্ছে এটা একমাত্র বাবা থেকে ছেলের দেহে সঞ্চারিত হয়। গবেষক মি. হেমার ‘ণ’ ক্রোমোজমের অতি ুদ্র অংশের গঠনের বিশদ তুলনা করেন। সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থার মধ্যে লালিত আটজন আফ্রিকান, দু’জন অস্ট্রেলিয়ান, তিনজন জাপানি এবং দু’জন ইউরোপীয়দের কাছ থেকে। গবেষকদের মনে যে ধারণাটি কাজ করছিল তা হলোÑ বিভিন্ন জাতির মধ্যে ক্রোমোজমের সামগ্রিক বিন্যাসের রকমফের কেমন ভিন্নরূপ গ্রহণ করে, তা পর্যবেণ করা। তারপর নির্ণয় করা, যে বৈচিত্র্য ধরা পড়ল তার বিবর্তনের জন্য কতটা সময়ের দরকার। যে ফল পাওয়া গেল, তাতে দেখা যায়, যত মানবসন্তান আজকের দুনিয়ায় বাস করছে, তাদের সবারই ‘ণ’ ক্রোমোজমের যোগসূত্র মেলে কেবলমাত্র একজন পুরুষের সাথে, যিনি জীবিত ছিলেন এক লাখ ৮৮ হাজার বছর আগে।
লেখক : সাবেক পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়