Wednesday, October 10, 2018

বুশ কেন নাইন ইলেভেন মঞ্চস্থ করেন?

   বুশের নাইন ইলেভেন মঞ্চস্থের আসল কারন জেনে আপনি নিশ্চিত অবাক হবেন!  
    { লেখাটির সমাপ্তি্তে আছেঃ ট্রাম্পকে  কেন  বলা যায় ‘মডার্ন ডে Nostrodomas  '         US Presidential hopeful Donald Trump "warned" of the horrific September 11 attack on the World Trade Center in a book published less than two years before the world's worst terror strikes happened,  it is being claimed. By JON AUSTIN PUBLISHED: 03:42,   Tue, Feb 23, 2016 | }

নয়-এগারোর ঘটনার ১৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইএসআই বা ইউরোপিয়ান সায়েন্টিফিক ইন্সটিটিউটের প্রকাশনা 'ইউরোপিয়ান সায়েন্টিফিক জার্নাল'  বলছে: অব্যাহত নানা অনুসন্ধানের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে মার্কিন বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ার্স ধ্বংস করা হয়েছিল নিয়ন্ত্রিত ধ্বংস-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে সামগ্রিকভাবে  গত ১৭ বছরে  যে  জিনিষ গুলো বাস্তবে একেবারেই পরিষ্কারঃ
) BLDG. # 7, সম্পুর্ণ controlled demolition, এটা এখন বিতর্কের উর্ধে
) কোন বিমান Pentagon কে আঘাত করেনি, ওটা ছিল missile, যা সবসময় আমেরিকার Air Force অথবা Navy এর নিয়ন্ত্রণে। তাছাড়া Pentagon এর কোন অংশে Renovation চলছে এটা বাইরের কারও জানার কথা না
 ৯/১১ অজুহাত দিয়ে আমেরিকার সরকার জনমত সৃষ্টকরে ইরাকে আর আফগানিস্তানে এক মিলিয়নের বেশী মানব নিধন করে আর ৯/১১ এর পর আইন পাশ করে মানুষের মুখ চেপে ধরে রাখলেও তিনটা ঘটনা ৯/১১ কে বিতর্কিত করেছে। Building #7- ৪৭ তালা ভবন, কোন বিমান আঘাত করেনি অথচ পরিষ্কার ওটা ছিল controlled demolition, Free Fall, তারপর পেন্টাগনে যাত্রীবাহী বিমান ধংসের যাত্রীদের মালামাল আর মৃতদেহের কোন প্রমান সরকার দেখাতে পারেনি। আর Shanksville, Pennsylvania-তেও কোন যাত্রীবাহী বিমান ধ্বংসের নমুনা CNN, ABC, FOXNEWS  তুলে ধরতে পারেনি।আসলে কিন্ত টুইন টাওয়ার ঘটনার আসল কারন/রহস্য ফাঁস হবে/ বেরিয়ে আসবে যদি বুশ- আল্ গোরের মধ্যকার  জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কে্র  বিষয়ের দিকে অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিবন্ধ করা হয়।।
                       প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বুশ আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী আলগোরের মধ্যকার টেলিভিশন  বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি ছিল খুবই ইউনিক ও রোমাঞ্চকর। বিতর্কের একটি বিষয় থেকে এটা স্পষ্ট যে পরবর্তীকালে কেন বুশ সেই বিতর্কিত ক্রুসেডের ঘোষক এবং নাইন-ইলেভেনের পরিকল্পক হয়েছিলেন? ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আল গোর ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেছে নিলেন গোঁড়া ইহুদি লিবারম্যানকে। বুশে্র কাছে দিন রাতের মতোই পরিষ্কার  হলো, ইহুদি সব ভোট আল গোরের পাল্লায়  যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদি লবি খুবই সক্রিয় ও সুসংগঠিত আবার  সাধারণত খ্রিষ্টান ভোট দুই ভাগে প্রায় সমানভাবে বিভক্ত হয়ে ভোটের ভারসাম্য  মোটামুটি বজায় রাখে দুই দলের মধ্যে। এতদিন ধরে দেখা যায় , ইহুদি ভোট যে দিকে মোড় নেয় তারাই বিজয়ের হাসি  দিতে  নির্বাচনে  সুবিধাজনক অবস্থায় থাকে।
ক্লিনটন তখন মসনদে। আমি  মেরিল্যান্ডের বাল্টিমোরে একদিন ঘুম থেকে উঠে  এক অবিশ্বাস্য নাটকীয় সংবাদ জানতে পারি। হোয়াইট হাউজে ইসলামের চাঁদতারা পতাকা উড়ছে। ভয়ের কিছু ছিল না। কারণ আলকায়দার জন্ম তখনো হয়নি এবং বিন লাদেনেরও পাত্তা ছিল না, যিনি হোয়াইট হাউজে এসে এ ধরনের অঘটন ঘটানোর হিম্মত রাখেন। তবে সে সময় এখানকার মিডিয়ায়  প্রচণ্ড ঝড় বয়ে যাচ্ছিল- যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত সম্প্রসারণশীল ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। এ সময়টিতে আমি বাল্টিমোর জনস হপকিন্সে গবেষণা করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হোমউড ক্যাম্পাসের লাইব্রেরির বেসমেন্টের দেয়ালে  একটি তথ্য/লেখা আমার চোখে পড়ে- প্রতি বছর মুস্যলমানের সংখ্যা  যুক্তরাষ্ট্রে একশত হাজার(১০০,০০০)করে বাড়ছে। উল্লেখ্যঃ স্বাধীনতার  পর  থেকে দুটি ধর্মের পতাকা হোয়াইট হাউজে উঠানো হতো যেহেতু এই দু' ধর্মের লোক অন্য সব ধর্মের চেয়ে সংখ্যায় অনেক বেশি ছিল। দেখতে দেখতে মুসলমানদের সংখ্যা ইহুদিদের টপকিয়ে  যায়। মুসলমানদের সংখ্যা ইহুদিদের চেয়ে আর কম না হওয়ায় সরকারি ভাবেই  সিদ্ধান্ত  নেওয়া হয়, এখন থেকে তিন ধর্মের পতাকা হোয়াইট হাউজে  স্থান পাবে/উড়বে। ।       
                      প্রেসিডেন্ট নির্বাচন:
ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো ইহুদি (অখ্রিষ্টান) হোয়াইট হাউজের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।স্পষ্টতঃ বাস্তবতা  হচ্ছে আল্ গোরের প্যানেল সব ইহুদী ভোট পাচ্ছে কেননা এই প্যানেলে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী একজন ইহুদী।   পরিশেষে   বুশ জয়ের বিকল্প পথ খোলা না দেখে দিশেহারা হয়ে মুসলমানদের দ্বারস্থ হন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই প্রথম একজন প্রার্থী  জাতীয়  বিতর্কের সময়ে  মুসলমানদের কাছে ভোট ভিক্ষা চান। সেই সময়ে মুসলমানদের প্রাণের একমাত্র দাবি ছিল, জননিরাপত্তা আইনে সংযুক্ত ‘সিক্রেট এভিডেন্স’ রহিত করা। আইনটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংযুক্ত হয়েছিল মুসলমানদেরকে সামাজিকভাবে  চেপে রাখা ও কোণঠাসা করারই মানসে। এই সিক্রেট এভিডেন্সের দোহাই দিয়ে বা এর ফাঁকফোকড় তৈরি করে শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের জেলে পাঠানো হতো। বুশ দেখলেন, এ বিষয়ে কথা বললে সব মুসলমান ভোটারের ভোট অতি সহজে অনায়াসেই পাওয়া যাবে।  প্রেসিডেন্ট  বিতর্কের সময় তিনি সরাসরি বলেন : ‘নিরাপত্তা আইনে সিক্রেট এভিডেন্সকে discriminatory/বৈষম্যমূলক মনে করি। ক্ষমতায় গেলে এটি বাতিল  করব।  জবাবে আল গোর বলেন : ‘আমি এটাকে বৈষম্যমূলক মনে করি না।’  [ আমি তখন যুক্তরাষ্ট্রে  টিভিতে  লাইভ বিতর্ক দর্শক।]
মুসলমান ভোটারদের মনে হলো, বুশ তাদের পক্ষ নিয়েছেন। এই প্রথম মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে জোটবদ্ধভাবে একদিকে ভোট প্রয়োগ করেন।
আগে বিতর্ক ছিল, এদেশে ভোট প্রয়োগ জায়েজ কিনা? পরিস্থিতি এবং বুশের আশ্বাস  সবকিছু পাল্টে দিলো।এমনকি বুশের পক্ষে সক্রিয়ভাবে নির্বাচনী প্রচারে জড়িয়েও পড়েন তারা। শেষে ইহুদি লবির সাথে প্রতিযোগিতায় বিজয় ছিনিয়ে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, মুসললমানরা ও মার্কিন মাটিতে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনে  এখন সক্ষম। মুসলিম ভোট ব্যাংকের শক্তির মহড়া কে বরং দেখা হলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে। প্রচারমাধ্যম এটা লুফে নিলো। ইনভেস্টরস বিজিনেস ডেইলি এক নিবন্ধে লিখে ‘আমেরিকান মুসলমানদের জন্য এটা ছিল বিজয়ের চেয়ে অনেক বেশি।’ [যেন বুশের  নয় বিজয়টা   মুসলমানদের] ।   ক্ষমতায়  যেয়ে বুশ অবশ্য তার কথা আদৌ রক্ষা করেননি বরং কার্যত নাইন ইলেভেনেরই  রুপকার হলেন যাতে আমেরিকার রাজনীতিতে মুসলমানদের ভুমিকা  অদূর ভবিষ্যতে  চিরতরে নির্মূল  করা যায়।
নাইন-ইলেভেনে মাত্র ১৫ মিনিটের ব্যবধানে দু’টি যাত্রীবাহী বিমান আছড়ে পড়েছিল নিউ ইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রে। অতঃপর আগুন, ধোঁয়া; তাসের ঘরের মতো দু’টি টাওয়ার ভেঙে পড়ে। ‘নয়-এগারো’র ভয়াল সন্ত্রাসী হামলার দশক পূর্তির পরেও বিবিসি, রয়টার, এএফপি পরিবেশিত সংবাদে প্রশ্ন করা হলো : আসলে কী ঘটেছিল ২০০১-এর এই দিনে? সত্যিই কি আলকায়েদা মার্কিন শৌর্যে আঘাত হেনেছিল, নাকি সবই পাতানো?
যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিভেন জোন্সের নেতৃত্বে ৭৫ জন শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবীর অভিযোগ নিউইয়র্ক ও পেন্টাগনে সে হামলা যাত্রীবাহী বিমানের নয়, এটা ছিল ভেতর থেকেই সংঘটিত। নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে অধ্যাপক স্টিভেন বলেন, ভেঙে পড়া টুইন টাওয়ারে ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষার পর নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেছে সেখানে ভবন ধসানোর  বিস্ফোরক ব্যবহারের। জোন্স বলেন, আফগান গুহায় বসে কিছু লোক এবং ১৯ জন বিমান ছিনতাইকারী এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আমরা মনে করি না। সরকারের এই তত্ত্বের বিরুদ্ধে আমরা চ্যালেঞ্জ করছি।কানাডার দি গেজেট পত্রিকায় ডেভিড গোল্ডস্টেইন টুইন টাওয়ার ধ্বংসের জন্য খোদ বুশকে দায়ী করে একাধিক বাস্তবসম্মত যুক্তি দিয়ে বলেছেন এ কাজ কোনোভাবেই বিন লাদেনকে দিয়ে সম্ভব নয়। ওদিকে আবার
টুইন টাওয়ার হামলার প্রায় দুবছর আগে ভাগে ট্রাম্প তার বইতে (‘The America We Deserve’প্রকাশিত জানুয়ারি ২০০০) Nostrodomas এর মত ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেনঃ ওসামা বিন লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলা চালাবেন। US Presidential hopeful Donald Trump "warned" of the horrific September 11 attack on the World Trade Center in a book published less than two years before the world's worst terror strikes happened, it is being claimed. By JON AUSTIN PUBLISHED: 03:42, Tue, Feb 23, 2016 | 
ট্রাম্পকে  সেজন্যে বলা হয় ‘মডার্ন ডে  Nostrodomas '।’
Alex Jenes Radio Show সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি ওই বইতে বলেছি, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এই ব্যাক্তি ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে।’’ ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে সামগ্রিকভাবে দেখা যায় আসলে টুইন টাওয়ারে হামলা  ছিল আভ্যন্তরীণ বিষয় (পরিকল্পনা) মাত্র।
              লেখকঃসাবেক শিক্ষক, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়।

Monday, October 1, 2018

দুনীতিতে শীর্ষে কিন্ত শতভাগ নিশ্চয়তার দাবি জান্নাতের! মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ


দুনীতিতে শীর্ষে কিন্ত শতভাগ নিশ্চয়তার দাবি জান্নাতের!

মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ                                          
                                                  মুহাম্মাদ আলীরেজা
তুলনামুলক ভাবে পশ্চিমা বিশ্বের লোকদের আমাদের চেয়ে অধিক সামাজিক এবং সাধারণভাবে সৎকর্মশীল হিসাবে মনে করা হয়ে থাকে।যারা ইউরোপ, আমেরিকা গিয়েছেন বা থাকেন, তাদের ধারনাও নিঃসন্দেহে এমনটিই হয়ে থাকে।প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক, আমাদের প্রচলিত গতানুগতিক ধর্ম বিশ্বাস ও সংস্কৃতি কেন আমাদেরকেও সেভাবে তৈরি করতে আপাত ব্যর্থ প্রমানিত হচ্ছে,কোনো ভাবেই কেন যেন পাশ্চাত্যের সাথে প্রতিযো গিতায় পারছেনা? গভীর বিশ্লেষণে দেখা যাবে মূল কারন কিন্ত অত্যন্ত সুক্ষ-এক স্থানে{বেহেশত লাভের ত্রুটিপূর্ণ গতানুগতিক ভুল ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ,শিক্ষা,প্রথা,ওনির্দেশনা} ফলে প্রচলিত সংস্কৃতির  ঘূর্ণিপাকে যেন হাবু ডুবু খাচ্ছে  সবাইঅসৎ কর্মশীল হয়ে জান্নাত লাভের কোনো রকম সুযোগ ইসলামে একেবারেই না থাকার পরেও কেন যেন এদেশের জনতার ভিতরে সেরা দুর্নীতি পরায়ণ হবার  সংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে চলছে তো চলছেইএর অন্যতম একটি কারনঃ সার্বিক বিষয় এবং পরিবেশ বিবেচনায় না এনে ওয়াজ মাহফিলে বা প্রাত্যহিক ধর্মীয় আলোচনায় শর্ট কাট সামান্য কিছু ইবাদতের মাধ্যমে  বেহেশতের ১০০% গ্যারান্টি লাভের ভ্রান্ত ধারনা  সৃষ্টি/জাগ্রত করে মানুষকে সামগ্রিকভাবে অসৎ কর্মশীল হতে পরোক্ষভাবে মনস্তাত্ত্বিক ভাবে বিশেষভাবে উৎসাহিত অনুপ্রাণিত করা হয়ে থাকে। এত সহজে এবং অনায়াসেই যদি ১০০% গ্যারান্টি সহ বেহেশত পাবার সুযোগ থাকে তাহলে প্রাত্যহিক জীবনে সার্বক্ষণিক ২৪ ঘণ্টা একনাগারে জীবনভর সৎকর্মশীল হয়ে এত কষ্ট সাধনা করার  প্রয়োজনটা কোথায়,কি বা আছে দরকারের। নিরবিচ্ছিন্নভাবে জীবনভর গাধার মত এই পরিশ্রম করার কোন মানে হয় কি? সারাজীবনে কেবলমাত্র একটি হজ, শবে কদরের এক রাত, মসজিদ-মাদ্রাসায় কিছু দান খয়রাত,হাতে গোনা কিছু ভালোকাজ (সাথে নাম প্রচার) এরকম কিছু কিছু গুটিকয়েক বাছাই করা  যৎসামান্য সহজ কাজ পদ্ধতির মাধ্যমে চিরস্থায়ী নিবাস বেহেশত পাওয়া গেলে আর কি চাই? সবচেয়ে কম বিনিয়োগে সর্বাধিক প্রাপ্তি-অনন্ত জীবনের সুখ শান্তি আর কি! মসজিদের দেশ যার প্রতিটি যায়গায় আজান শুনা যায়, যে দেশে জুমাহ এবং তারাবীহ তে মসজিদ কানায় কানায় ভর্তি হ্য়, সে দেশ যদি দুর্নীতিতে সমগ্র বিশ্বে শিরোপা লাভের একবারও যদি দুর্ঘটনাক্রমে হলেও কখনও কৃতিত্ব অর্জন করতে  সক্ষম হয়, তার অর্থ দাঁড়ায় বিশ্বের বাকি সব দেশ থেকে বেশি অসৎকর্মশীল মানুষ দেশেই থাকে, তৈরি হয় বা জন্ম নেয় (made in Bangladesh)দেশটি যেন  বিশ্বের দুর্নীতিবাজদের অভয়ারণ্যের বৃহত্তম মিলন মেলা,সমাবেশ কেন্দ্র। জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে সৎকর্ম আর সব গুণ থাকলেও অসৎকর্মশীল ব্যক্তি জান্নাতের ধারেকাছেও যেষতেই পারবে না নামাজি, দ্বীনদার হওয়ার মূল কথা হচ্ছে সৎকর্মশীলতা বাহ্যিকভাবে যত বড় বুজর্গ,মোল্লা, পীর, দ্বীনদার হোক না কেন একমাত্র ঈমানদার সৎকর্মশীলরাই জান্নাতে যাবে জান্নাতে যাওয়ার শর্ত হচ্ছে সারাজীবন পার্টটাইম নয় ফুলটাইমই সৎকর্মশীল হতেই হবে কারণ প্রতিটি কাজের, মুহূর্তের এবং নিয়তের ওপরই নির্ভর করবে সে কোন ধরনের সৎকর্মশীল সুবিধাবাদী সৎকর্মশীল না মন-মানসিকতা কাজে কর্মে  প্রকৃত অর্থে পরিপূর্ণভাবেই সার্বিক  জীবনে  সৎকর্মশীল!
ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইসলামের বুনিয়াদ বা ভিত হলেও কুরআনে একটি আয়াতও পাওয়া যাবে না যেখানে বলা হয়েছে, এই পাঁচটি কাজের মাধ্যমে জান্নাত পাওয়া যাবে? কুরআন পাকে জান্নাত লাভের শর্ত হিসেবে যত আয়াত দেখা যায়, সেগুলোতে আরো একটি গুণের অধিকারী হতেই হবে জান্নাতের জন্য না হলে জান্নাত কখন কপালে জুটবেই না জান্নাত লাভের জন্য তাকে অবশ্যই সৎকর্মশীল হতেই হবে কিন্ত দুর্ভাগ্য বশত এদেশে প্রচলিত ধরাবাঁধা বিশ্বাস ও ধারনা হচ্ছে কলেমা, নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতেই কেল্লাহ ফতেহ। কারও যেন ভাববার একটুও সময়/অবকাশই নেই যে শুধু এসব দিয়ে কপালে জান্নাত জুটার  কোনো সম্ভাবনাই নেই। মূলত নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে সৎকর্মশীল হিসেবে তৈরি করা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘(হে নবী!) আপনি নামাজ কায়েম করুন নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে’[২৯: ৪৫]
জান্নাত লাভের শর্ত হিসেবে বিশ্বাসের সাথে সর্বত্র সৎকর্মের কথা জুড়ে দেয়া হয়েছে জান্নাত লাভের সব আয়াতেই বিশ্বাসের সাথে সৎকর্মশীল হওয়াটা জরুরি ধরা হয়েছেঅসৎ দুর্নীতিপরায়ণ লোকদের কোনো ক্ষমা নেই স্পষ্ট ভাবে থাকার পরেও প্রচলিত বিশ্বাস হচ্ছে-একবার হজে সারাজীবনের গুনাহ মাফ হ্য়ে যাবে শুনতে শুনতে সমাজ জীবনে এমন ধারনা/ বিশ্বাস জন্ম নিয়েছেসারা জীবন অপকর্ম করে শেষ জীবনে হজ করলেই নিশ্চিত জান্নাত কিন্ত প্রচলিত ধারনামতে সবচেয়ে সহজ গুনাহ গীবতের মত কাজ গুলোও কি মাফ হবে? ‘ গীবত জিনার চেয়েও বড় পাপজিনার সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় সাহাবীরা অবাক বিস্ময়ে জানতে চাইলেন- তা কি করে হতে পারে? রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেন যে, জিনাহ (যেটা অবশ্যই রেপ নয়) করে আল্লাহ পাকের দরবারে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ইচ্ছা করলে ক্ষমা করেও দিতে পারেন এটা আল্লাহর সাথে বান্দার বিশেষ সম্পর্কের ব্যাপার কিন্ত গীবতের ক্ষেত্রে আর একটি পক্ষ জড়িত- যার গীবত করা হয়েছে তার থেকে মাফ অর্জন করে আনতে হবে তা নাহলে নীতিগত ভাবে আল্লাহ নিজের থেকে গুনাহ মাফ করবেননা প্রশ্ন করা হল  যদি এটা সত্য হয়! উত্তর হল সত্য হলেই সেটা গীবত আর মিথ্যা হলে অপবাদ প্রদান যেটা আরও জঘন্য ধরণের অপরাধ, শাস্তিও সেরূপ।সমাজজীবনে গীবতের মত  নিত্তনৌমিত্তিক ডালভাতের মত সাধারণ পাপের ব্যাপারটা যদি এরকম হয়, সে ক্ষত্রে ভীষণভাবেই এটি ভাববার /চিন্তার বিষয় নয় কি যে – ‘দুর্নীতির পাপের পাল্লাটা তুলনামূলক ভাবে কত সহস্র লক্ষ কোটি গুন বেশি ভারী হবে বা হতে পারে’? কিন্ত সত্ত্বেও এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খোজার সামগ্রিক কোনো প্রচেষ্টা বলা চলে এ দেশে কিন্ত কোনো মহলকে আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নীয়ে বা কর্মসূচী নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছেনা।সমাজে চলছে সব কিছুতে, সব যায়গায় দুর্নীতির সুপার প্রতিযোগিতা।বিশ্বের বাকি সব দেশকে টপকিয়ে  মুসলিমদের এদেশে কিন্ত কেন এই নোঙরা প্রতিযোগিতা? যেন কারও কোনো মাথা ব্যাথা নেই-‘তোমরা মুমিন নও যদি পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীল না হও?’ শুনে সাহাবীরা বলেন, ‘আমরা তো সবাই একে অপরের প্রতি  সহানুভুতিশীলপ্রকৃত অর্থে সহানুভূতি দেখাতে হবে সবার প্রতি কেবলমাত্র আত্মীয়স্বজন মুসলমানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না ব্যাখ্যা করে রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেন  কাজেই কোনো শব্দের বা কথার অর্থ অনুধাবন করার জন্য একান্তভাবে প্রয়োজন সার্বিক পরিস্থিতি বা অবস্থার প্রেক্ষাপট সাপেক্ষে মূল বিষয়টা বিবেচনা করা সব কথা বক্তব্যকে কেবলমাত্র গ্রহণযোগ্য মনে করা হবে যখন ইসলামের মূল স্প্রিটের সাথে সেটি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা  সে বিষয়টা প্রমানিত হলে একদা রাসুলুল্লাহ(দঃ) বলেন- বুড়াদের বেহেশতে যায়গা নেই শুনে এক বুড়ী কেঁদে ফেললেন কান্নার কারন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আনেক বয়স হয়ে গেছে, বুড়ী হয়ে গেছি কপাল খারাপ আগে যদি মারা যেতাম বেহেশত কপালে জুটত তখন তাকে সান্তনা দিয়ে বলা হল- ভয়ের কোনো কারণই নেই বেহেশতে সকলেই চির যৌবন প্রাপ্ত হবে সেই অর্থে কেবল বুড়া / বুড়ী দের জান্নাতে স্থান মিলবেনা তাই কোন শব্দের প্রকৃত অর্থ অনুধাবনের জন্য চাই কোন প্রেক্ষাপটে, পরিবেশে প্রসঙ্গে কথাটা বলা হয়েছে তাও যথার্থ ভাবে অনুধাবন করতে হবে ইসলামের মূল শিক্ষা ও স্প্রিট কে বিরুদ্ধাচরণ করে এমন কোন কিছু গ্রহণের সুযোগ একেবারেই নেই।
১] সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ করবে; বরং বড় সৎকাজ হলো ঈমান আনবে আল্লাহর ওপর, কিয়ামত দিবসের ওপর, ফেরেশতাদের ওপর এবং সব নবী-রাসূলের ওপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্মীয়স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিুক্ষুক মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্য আর যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে যুদ্ধের সময় ধৈর্যধারণকারী, তারাই হলো সত্যাশ্রয়ী আর তারাই পরহেজগার’ [-১৭৭]
জান্নাত লাভের জন্য ঈমান আনার সাথে সাথে সৎকর্ম করার কথা যে সব আয়াতে রয়েছে, তার একটি তালিকাঃ
] আর সবার জন্যই রয়েছে কেবলা একেক দিকে, যে দিকে সে মুখ করে (এবাদত করবে) কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও যেখানেই তোমরা থাকবে, আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে সমবেত করবেন নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল [:১৪৮]
] যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে, সে জুলুম ক্ষতির আশঙ্কা করবে না [২০:১১২ ]
]  এবং ইসমাঈল, 'দ্রীস যুলকিফলের কথা স্মরণ করুন, তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সবরকারী আমি তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ [২১:৮৫-৮৬ ]
]  যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয় আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন       [২২:১৪ ]
] সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী        [২২:৫০]
] তবে যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে[২৮:৬৭]
] আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল, তার বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা ঈমানদার এবং সৎকর্মী, তাদের জন্যে আল্লাহর দেয়া সওয়াবই উৎকৃষ্ট এটা তারাই পায়, যারা সবরকারী [২৮:৮০ ]
] যে সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে তদপেক্ষা উত্তম ফল পাবে এবং যে মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, এরূপ মন্দ কর্মীরা সে মন্দ কর্ম পরিমানেই প্রতিফল পাবে [২৮:৮৪]
১০]আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব [২৯:]
১১] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব [২৯:]
১২] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত সেখানে তারা চিরকাল থাকবে কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের [২৯:৫৮]
১৩] যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে সমাদৃত হবে; [৩০:১৫]
১৪] যারা বিশ্বাস করেছে সৎকর্ম করেছে যাতে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে প্রতিদান দেন নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন না [৩০:৪৫ ]
১৫] যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত [৩১: ]
১৬] সেখানে তারা চিরকাল থাকবে আল্লাহর ওয়াদা যথার্থ তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় [৩১: ]
১৭] যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে [৩১:২২]
১৮]  যারা ঈমান আনে সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়নস্বরূপ বসবাসের জান্নাত              [৩২:১৯ ]
১৯]  তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি [৩৩:৩১ ]
২০]তিনি পরিণামে যারা মুমিন সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা সম্মান জনক রিযিক [৩৪:]
২১] আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি [৩৭:৮০]
২২] এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি       [৩৭:১২১]
২৩]যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে [৪০:৪০]
২৪] অন্ধ চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক [৪০:৫৮ ]
২৫] নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার [৪১:]
২৬] যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ, তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?  [৪১:৩৩ ]
২৭] যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না[৪১:৪৬ ]
২৮]যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে         [৪৫:১৫]
২৯] যারা বিশ্বাস করে সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয় আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে তাদের বাসস্থান জাহান্নাম [৪৭:১২]
৩০] যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী [৫২:২১ ]
৩১]কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার [৮৪:২৫ ]
৩২] যারা ঈমান আনে সৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ এটাই মহাসাফল্য [৮৫:১১ ]
৩৩] ‘যারা ঈমান আনে সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।’ [৯৮: ]
৩৪]‘তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।’ [৯৮: ]
 এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে   সৎকর্মশীল ব্যক্তিকে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে কাজে সৎ হতে হবে বা সততার পরিচয় দিতে হবে সৎকর্মশীলতার প্রতিযোগিতা সারাজীবন করে যেতে হবে দিনের কিছু সময় সৎ থেকে অন্য সময় অসৎ থাকলে সৎকর্মশীল হিসেবে পরিচয় দেবার সুযোগ একেবারেই নেই দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই সৎ হতে/থাকতে হবে দিনের কিছু কাজে সৎ আর বাকিটায় অসৎ এই প্রতারণার সুযোগ একেবারেই নেই সৎকর্মশীল মানুষ সারাজীবন সৎকর্মের ওপর অবিচল থাকবে শেষ বিচারের দিন সব ফাঁস হয়ে পড়বে এত গুলো আয়াত থাকার পরও বাংলাদেশ কেন বাকি সব দেশের লোকদের থেকে দুর্নীতিপরায়ণতায় জাহান্নামের দিকে সবার অগ্রভাগে?
সৎকর্মশীল হবার জন্য হাদিস শরীফে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তুমি মুমিন হবে তখন , যখন তোমার ভালো কাজ তোমাকে আনন্দ দেবে , আর মন্দ কাজ দেবে মনোকষ্ট [ আহমদ ]
যে ভালো কাজের আদেশ করেনা এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করেনা , সে আমার লোক নয় [ তিরমিযী ]}
 “রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : তোমাদের মধ্যে যখন কাউকে অন্যায় কাজ করতে দেখো, তাকে দুই হাত দিয়ে বাধা দাওঅথাৎ শক্তি প্রয়োগ করে সাথে সাথে বিরত করো,
আর  একান্ত তা করতে না পারলে জবান দিয়ে প্রতিরোধের সব উপায় বের কর-অথাৎ বিক্ষোভ তিরষ্কার কর, আর তাও করতে  অপারগ হলে অন্তর দিয়ে প্রচেষ্টা কর -অথাৎ মেধা,বুদ্ধি খাটিয়ে/চিন্তা করে উপায় ও পন্থা বের কর যাতে সমাজ ও দেশ থেকে উক্ত অন্যায় সমুলে চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়
বহুল আলোচিত গুরুত্বপূর্ণ হাদিছটির গলদ /ভ্রান্ত ভাবধারা, বিশ্বাস ও অনুবাদ আমাদের দেশে বহুল প্রচলিত যেহেতু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ৩টি উপায়ের প্রত্যেকটির সাথেইইউগাইয়েরহুশব্দটি জড়িত যার অর্থ  হবে অন্যায়/জুলুম সংঘটিত হতে দেখলে পরিবর্তন করে দাও দুইহাত বা শক্তি দিয়ে,মুখ বা জবান দিয়ে কিংবা অন্তর দিয়ে যাতে অন্যায় সমুলে বন্ধ হয়ে যায় ঘৃনা করলে অন্যায় কখনও বন্ধ হতে পারেনা সমাজে সুদ,ঘুষ,যৌতুক,অশ্লীল নোঙরা সংষ্কৃতি বিচারহীনতা চলছে তো চলছেই
বাংলাদেশ থেকে এখন বছরে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে সমাজের মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের কাছে চলে যাওয়া টাকা শেষ পর্যন্ত দেশে না থেকে পাচার হয়ে যায়।১৭ জুলাই ২০১৮,মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে, ‘ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট স্টেট করাপশনশীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন দেশের বেশিরভাগ মানুষ প্রান্তিক দুর্নীতির সরাসরি ভুক্তভোগী বলে সেটা সম্পর্কে কম-বেশি ধারণা রাখে। দুর্নীতি দেশে কতটা বীভৎস পর্যায়ে চলে গেছে সেটা তারা অনেকেই জানে না। এই রাষ্ট্রের কাছ থেকে শিক্ষা-স্বাস্থ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতসহ অন্য খাতে তাদের যা যা প্রাপ্য সেসব তারা পায় না সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কারণেই।
                     বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টির লক্ষ্যে  রাঘববোয়াল পুঁজি লুটেরাদের কথা।  ১২ সেপ্টেম্বর  ২০১৮ প্রথম আলোয় প্রকাশিতবিশ্বে অতি ধনীর উত্থানে শীর্ষে বাংলাদেশশিরোনামের প্রতিবেদনটি একটি বড় দুঃসংবাদ। মার্কিন গবেষণা সংস্থাওয়েলথ এক্স’-এর ২০১৮ সালের ওয়ার্ল্ড আলট্রা ওয়েলথ রিপোর্টের গবেষণা মোতাবেক ২০১২ সাল থেকে ২০১৭এই পাঁচ বছরে অতি ধনী লোকের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের সব ধনী দেশকে পেছনে ফেলে শীর্ষ স্থান অধিকার করেছে। ওই সময় বাংলাদেশে ধনকুবেরের সংখ্যা বেড়েছে ১৭. শতাংশ হারে। অতি ধনীর এই দ্রুততম প্রবৃদ্ধির হার বাংলাদেশের বাদ বাকি মানুষের জন্য মহা বিপৎসংকেত হিসেবে বিবেচিত হওয়ার কথা

  কিছুসংখ্যক নামাজী ঘৃনা করে মাথা নিচু করে চললে তা কোনভাবে কোনোদিনই বন্ধ হতে পারেনা বা হবেনা বরং মৌন সমর্থনের সুযোগে আরও বহু বেগে ছড়িয়ে পড়বে এবং পড়ছেও।
উক্ত হাদিছসুত্রে ঈমানদার বা মুমিনগন  ৩ টি শ্রেনীতে  বিভক্তঃ
. প্রথম শ্রেণীর  ঈমানদারযারা অন্যায় প্রতিরোধে দেশের আইনের দিকে লক্ষ্য  রেখে  সর্বশক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে, প্রচেষ্টা চালায়।
,দ্বিতীয় শ্রেণীর ঈমানদারযারা শক্তিপ্রয়োগে অপারগ হয়ে শেষে বিক্ষোভ , তিরষ্কারের  ভাষা ও প্রকৃতির মাধ্যমে সামাজিক মানসিক চাপ সৃষ্টি করার পরিবেশ তৈরি করে।
, তৃতীয় শ্রেণীর ঈমানদারযারা শক্তি জবান প্রয়োগের সুযোগ না পেয়ে অন্তত:পক্ষে চিন্তা-ফিকির করে সংঘবদ্ধ হয়ে প্রচার প্রোপ্যাগান্ডার মাধ্যমে জনমত গড়ে তোলে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে। আমাদের ভেবে দেখতে হবেঃ যে ব্যাক্তি এইটুকুও করতে পারলনা বা করার জন্য  আন্তরিকভাবে সর্বাত্মক চেষ্টাই করলোনা সে কোন যুক্তিতে কি ভাবে ঈমানের দাবি করতে পারে?
পবিত্র কোরআনের সুরা আল ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “তোমাদের (মুসলিমদের) উত্থান ঘটানো হয়েছে সমগ্র মানব জাতির জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ জাতির মডেল রূপে তোমরা প্রতিষ্ঠা করো ন্যায়ের এবং নির্মূল করো অন্যায়ের এবং তোমরা ঈমান রাখো আল্লাহর উপরউপরুক্ত আয়াত থেকে কি বুঝা যায়? মুসলিমদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতির মর্যাদা কি এজন্য যে, তারা বেশী বেশী নামায পড়ে, রোযা রাখে বা পাড়ায় পাড়ায় মসজিদ গড়ে? বরং সর্বশ্রেষ্ঠ জাতির মর্যাদা কি এজন্য যে, তারা অন্যায়কে নির্মূল করে এবং ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করে এবং মহান আল্লাহতায়ালার উপর অটল বিশ্বাস রাখে একাজে ব্যর্থ্য হলে বাড়ে অসভ্যতা বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বার বার বিশ্বে প্রথম হয়ে প্রমাণ করেছে তারা ব্যর্থ্য হয়েছে
পরিতাপের বিষয়,স্বাধীনতা প্রাপ্তির তিন যুগ  টপকিয়ে যাচ্ছে আর সুদ,ঘুষ, নোঙরা  অপসংষ্কৃতিও অরাজকতা উচ্ছেদ তো দুরের কথা যারা ব্যাপারে  কার্যকরী পদক্ষেপ/ভুমিকা নেয় তাদেরকেই সমাজ কোনঠাসা করে রাখে এবং এড়িয়ে চলে। এক্ষেত্রে  রাসুল (সাঃ)এর অপর একটি হাদিছ আমাদের সমাজের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্যঃ
“আমি সেই সময়ের কথা ভেবে উৎকন্ঠিত যখন মসজিদ ভর্তি মানুষ জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করবে অথচ তাদের মধ্যে একজনও ঈমানদার নয় এমনকি ঈমাম সাহেব নন
ইয়া আল্লাহ্‌, আপনি আমাদেরকে  দয়া করে দ্বীনের সত্যিকার সঠিক জ্ঞান দান করুন এবং সমাজ ও দেশকে পরিশুদ্ধ  করার মাধ্যমে গজব মুক্ত হওয়ার ও প্রকৃতঅর্থে ঈমানদার হবার তাওফীক দান করুন, ছুম্মা আমীন
লেখকঃ সাবেক শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।