প্রত্যেক ইমানদারের জন্য অন্তত্য গুরুত্বপূর্ণঃ জান্নাতের নিশ্চিত একমাত্র সরল পন্থা আসলেই কোনটি?
বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে ১৭৯ দেশের দুর্নীতির র্যাঙ্কঃ- সবচেয়ে কম দুর্নীতি পরায়ণ দেশ থেকে উপরে যে সব দেশঃ নিউজিল্যান্ড-১.....ইসরাইল-৩৫......সৌদিআরব-৫৪..... ইরান-১৪৪ ........................বাংলাদেশ-১৪৮............... পরিশেষে রয়েছে ধারাবাহিক লিস্ট। CORRUPTION PERCEPTIONS INDEX 2020
আজকে সবচেয়ে বড় প্রশ্নঃ প্রচলিত ইবাদত সংস্কৃতিতে দুর্নীতি চর্চায় কেন বিদ্যমান শুভঙ্করের ফাঁকি! বর্তমান বিশ্বে ক'জন মুসলিম বিষয়টির সাংঘাতিক পরিণতি সম্পর্কে সত্যি সত্যি একদম সজাগ/সচেতন?
মুসলিম সমাজে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ধাঁধাঃ জান্নাত লাভের শর্ত মিটাতে নামাজ,রোজার মত প্রচলিত সব ইবাদতকে কোরআন পাকে সরাসরি একেবারে না রাখার কারন বিষয়টি মুসলিম সমাজে বলতে গেলে সম্পূর্ণই উপেক্ষিত/ অনুপস্থিত/ অবহেলিত! কেন এমনটি হচ্ছে ? সেই সাথে কিন্ত সমাজে প্রচলিত জোরালো উন্মাদনা হচ্ছেঃ সমগ্র জীবনভর সৎকর্মশীল হবার সাধনা প্রায় একেবারেই ছেড়ে দিয়ে অনায়াসে কত বেশি ভুরি ভুরি পাহাড় সম উচ্চতার সওয়াব অর্জন করা যায় সে জন্যই নিরলস অর্থহীন সাধনা/ প্রতিযোগিতা। [উদাহ্ রনঃ না বুঝে অসংখ্যবার কোরআন খতম, কোটি কোটি সওয়াব লাভের প্রচলিত খতমে তারাবী , অর্থ না জেনে /বুঝে তোতা পাখির মত সব জিকির -ইবাদত ইত্যাদি।]
ইমাম হাসান আল বসরী (৬৪২-৭২৮ খৃঃ) বলেনঃ 'কুরআনকে নাযিল করা হয়েছে এর নির্দেশনা বলীর ভিত্তিতে কাজ করার জন্য কিন্ত তা না করে তারা এর [{আবৃতিকে}] কাজ হিসাবে ধরে নিয়েছে।'[রমজানে প্রচলিত খতমের ফলহীন প্রতিযোগিতা।]
বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক ভুল ধারনা যা অবশ্যই মুসলিম দেশ/ সমাজকে বিশেষভাবে প্রভাবিত এবং গভীরভাবে আলোড়িত করে চালিত করছেঃ জান্নাত লাভের জন্য ঈমান সেই সাথে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাতই সর্বসাকুল্যে যথেষ্ট, একদম বিলকুল যেন সবই। যদিও এই দাবির সমর্থনে একটি আয়াতও কিন্ত নেই, খুজে পাওয়া যাবেনা তথাপিও এই প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়ে বলতে গেলে কারও কোন মাথা ব্যাথা পর্যন্ত ময়দানে একেবারেই দেখা যায়না ! কিন্ত কেন? সাধারন গন মানুষের মধ্যে অজান্তে সব সময় যে ভ্রান্ত ধারনা ও বিশ্বাস মনের অত্যন্ত গভীরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে থাকেঃ কোন রকম ভাবে জান্নাত পাবার জন্য ইসলাম ধর্মে যেন এর বাইরে অতিরিক্ত বিশেষ কিছুর ই আর দরকার নেই/শরিয়তে আর কিছু একদম রাখাই হয়নি।কার্যতঃ দুনিয়ার সব মুসলমানের আপাত মারাত্মক এই ভ্রান্ত দৃঢ় বিশ্বাসই তাদেরকে সামগ্রিকভাবে ভীষণভাবে বিপথগামী করে বিশ্বে অধিকতর দুর্নীতিপরায়ণ দেশ/জাতি/ ধর্মের আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছেঃ 'কালেমা ,নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত এই পাচ কাজে ফাঁকি না দিলে জান্নাতে সে অনায়াসে হেলে দুলে যেতে পারবেই আর জান্নাত তার জন্য যেন অবধারিত।'জান্নাত যেন হবে তার ছেলের হাতের মোয়া!'
আসলে বাস্তবে কিন্ত জান্নাত লাভের সব আয়াতেই সোজা সুজি ২ টি শর্ত পালন অপরিহার্য করা হয়েছে যেথায় নামাজ-রোজার মত প্রচলিত এবাদতের প্রত্যক্ষভাবে একেবারে উল্লেখই কিন্ত নাই। আমরা পর্যালোচনা করবঃ কেন উল্লেখ নাই?
জান্নাতের পাশ হস্তগত করার জন্য মাত্র দুটি শর্ত রাখা হয়েছে যা অবশ্য অবশ্যই পুরন করতে হবে অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ জাহান্নামঃ
১) ঈমান
২) সৎকর্মশীল জীবন।
*#*@* সেক্ষেত্রে অবশ্য স্বভাবতই প্রশ্ন আসেঃ সারা দুনিয়ার মুসলিম সমাজে নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত নিয়ে তাহলে এত কঠোরতা এবং বাড়াবাড়ি কেন করা হয় যদি এ গুলো জান্নাত লাভের শর্তের মধ্যে সরাসরি অন্তর্ভুক্ত্ নাই থাকে বা করা না হয়ে থাকে? সারাজীবনভর কলেমা,নামজ,রোজা, হজ্ব,জাকাত এই সব কাজ যথাযথভাবে করেও জান্নাতের টিকিট যদি কপালে নাই জোটে তবে জান্নাত লাভের শর্ত পুরনের সবচেয়ে মৌলিক গুরুত্বপূর্ণ কাজটি একেবারে পরিহার করে এত ঘটা করে জগতের মুসলিম জাতি এসবের অহেতুক সাধনা সারাজীবনভর কেন করে চলছে তো চলছেই?
মুলত কালেমা,নামাজ,রোজা, হজ্ব ও জাকাত কে কেবলমাত্র ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ/খুঁটির সাথে তুলনা/কল্পনা করা হয়েছে,তাত্ত্বিকভাবে এর বেশি কিছু নয়। খুঁটি ছাড়া যেমন ঘরের স্থায়িত্ব/অস্তিত্ব ধারনা করা সম্ভবই নয় তেমনি এই পাচ স্তম্ভ বাস্তবে প্রাত্যহিক জীবনে ইসলামকে মজবুত করে দাড় করাতে কেবল ভুমিকা রাখে মাত্র, এর বেশি কিছু নয়। কেবল মাত্র শুধু খাম্বা দিয়েই বা কোন খাম্বা ছাড়াই ঘর তৈরি আদৌ সম্ভব নয় সেই সাথে অবশ্যই প্রয়োজন ছাদ,দরজা,জানালা, টয়লেট, রুম ইত্যাদি হরেক রকম অনেক কিছুরই। তেমনি ইসলামের পাঁচ খুঁটিই মুলত কক্ষনো চূড়ান্ত/ শেষ কথা নয় সেই সাথে আবশ্যক/ জরুরী সারাজীবন ভর ছালিহাত/ সৎচরিত্র যা অবশ্যই ব্যক্তি জীবনে ইসলামকে পূর্ণতা দিতে মূখ্য ভুমিকা পালন করে। কিন্ত গভীর লজ্জা ও হতাশা জনক সত্যঃ দুর্ভাগ্যবশত বাস্তবতা হচ্ছে দুনিয়ার প্রায় সব মুসলিমজাতি বলতে গেলে কেবলমাত্র কার্যত পাচ স্তম্ভকে ঘর ধরে নিয়ে / বানিয়ে সেই কল্পিত শর্ট কাট সংক্ষিপ্ত ইসলামের ঘরে বসবাস করে আত্মতুষ্টি লাভ করে চলছে। পরোক্ষভাবে হলেও সত্য-বর্তমানে সকলের অজান্তে মুসলিমদের ব্যবহারিক জীবনে কেবলমাত্র এই পাচ স্তম্ভের অনুশীলনের না্ম আসলে বাস্তবে কিন্ত দাঁড়িয়েছে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম।
প্রকৃতপক্ষে কিন্ত ইসলামে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাতের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে এসব সঠিক/ যথারিতি / নিষ্ঠার সাথে পালন করলে একজন ব্যক্তি সারা জীবন ধরে প্রাত্যহিক জীবনে অবশ্য অবশ্যই সৎকর্মশীল হয়ে গড়ে উঠবে এবং সে এ সবের প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে অবহেলা না করলে তার জীবনে নিঃসন্দেহে এর কোন বিচ্যুতি/ ব্যাতিক্রম হবার একেবারেই সম্ভাবনা বা সুযোগ নেই এবং কখনো হতে পারেনা। তার পরেও দুনিয়ায় মুসলিম জাতির কপালে কেন এই করুন অশনি সঙ্কেত , কেন এমন অঘটন অবিরতই মুসলিম জগতে ঘটেই চলছে?
[এ কথা সত্য ইসলামের মত অন্য সব ধর্মেও ধর্মাচরনের আসল লক্ষ্য হচ্ছে প্রাত্যহিক জীবনে অবশ্যই সততার সাথে জীবন গঠন ও পরিচালনা করা।
লেখা পড়া তথা শিক্ষার একমাত্র উদ্দেশ্য কিন্ত জ্ঞান অর্জন্ আর সেই অর্জিত জ্ঞানকে বাস্তব জীবনে কাজে লাগানো।জ্ঞান যদি অর্জিত না হয় তা হলে সেটি কখনও শিক্ষা অর্জন হতে পারেনা।
তেমনি যে কোনো ধরনের খাদ্য গ্রহণের লক্ষ্য হচ্ছে দেহকে প্রয়োজনীয় শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করা। যে সব খাদ্য শক্তি ও পুষ্টি যোগাতে পারেনা তা খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত হতে পরেনা।
একই যুক্তিতেঃ নামাজ রোজা পালন করলো কিন্ত বাস্তবে প্রাত্যহিক জীবনে এর কোনোই সুফল দেখা গেলোনা অর্থাৎ সারা জীবন সে 'অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত' থেকে সৎকর্মশীল হতে পারলোনা ,তার নামজ রোজা একেবারেই প্রশ্নবিদ্ধ এবং শুভঙ্করের ফাঁকি নয় কি? ]
কোরআন পাকে জান্নাত লাভের সব আয়াতে বিশ্বাসের সাথে সৎকর্ম শীল হওয়াটা্ অত্যাবশ্যকীয় ধরা হয়েছে। দিনের ২৪ ঘণ্টার আংশিক কিছু সময় সৎ থেকে অন্য/বাকি সময়ে অসৎ থাকলে সৎকর্মশীল হিসেবে বাস্তবে পরিচয় দেবার কোনো সুযোগ একেবারেই কিন্ত নেই। আসলে দিনের ২৪ ঘণ্টার সব কাজে / সব মুহূর্তে সৎ কর্মশীল হতে হবে/ হবার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবেই।। শেষ বিচারের দিন খুটিনাটি সব কিছুই দিবালোকের মত ফাঁস হয়ে যাবে।তখন বাঁচার কিন্ত আর কোনো উপায়ই অবশিষ্ট থাকবেনা।
দৃশ্যত বাহ্যিক দৃষ্টিতে প্রচলিত অর্থে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে- দুনিয়ার বাকি সব ধর্ম, দেশ, জাতি জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সৎ হবার তাগিদ/ সবক দেয়, যে কারনে তারা তুলনামুলক ভাবে মুসলিম দেশ থেকে কম দুর্নীতিপরায়ণ। অপরদিকে অভ্যাস/প্রথাগতভাবে মুসলিম জাতি প্রচলিত অর্থে চরিত্রবান বলতে সারা জীবনভর প্রতিটি কাজেই সততা না বুঝিয়ে কেবলমাত্র বিশেষভাবে যৌন জীবনে সৎ থাকার গুরুত্ব অত্যাধিক দিয়ে থাকে। ফলে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ ব্যাবহারিক জীবনে দৈনন্দিন/প্রাত্যহিক প্রতিটি কাজে সততাকে সামাজিক জীবন থেকে বাদ দিয়ে সমাজ জীবনকে অনায়াসে কলুষিত করার সুজোগ সৃষ্টি হয়েছে মুসলিম দুনিয়ায়।সম্ভবত সে কারনে মুসলিম দেশ/জাতি অন্যদের থেকে দুর্নীতিতে বর্তমান জগতে সগৈরবে একধাপ এগিয়ে থাকলেও জাতি হসাবে মোটেও কিন্ত একটুও অনুশোচনা করেনা,একেবারেই সচেতন নয় - কেন বিশ্বে তাদের ধর্মের অনুসারীদের এই অধঃপতন ও পশ্চাৎপদতা অন্যদের থেকে ?
মুসলিম দুনিয়ায় বাস্তবে ধর্মীয় শিক্ষা, ওয়াজ - নসিহত,সমাবেশ, দ্বীনের কার্যক্রমে সচরাচর সার্বিকভাবে কখনও কিন্ত অতি জোর দিয়ে ফলাও করে গুরুত্ব সহকারে বলিষ্ঠ কণ্ঠে প্রচারের সংস্কৃতি গড়ে উঠেনি কথাটি বলার- ' জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে সৎকর্ম। আর সব গুণ থাকলেও অসৎকর্মশীল ব্যক্তি প্রবেশ করাতো দুরের কথা জান্নাতের সীমানার ধারে্র কাছেও কিন্ত কক্ষনো ঘেষতে পারবে না।'
ছালিহাত শব্দটি কোরআনে ৬৪ বার ব্যাবহার করা হয়েছে জান্নাত পাবার অন্যতম শর্ত হিসাবে, ঈমানের সাথে এটি না থাকলে জান্নাতে যায়গা তো দুরের কথা ঘ্রাণও কিন্ত জুটবেনা। একমাত্র সংশ্লিষ্ট বিষয়টি জথাযত গুরুত্ব না দেওয়া ও ব্যাপক প্রচারের অভাবে মুসলিম জাতি সামগ্রিকভাবে সৎকর্মশীল হবার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে সম্পূর্ণ উদাসিন, যার ভয়াবহ ফল সংক্রমিত হয়েছে জাতি সত্তায়।এছাড়া সৎকর্মশীল না হলে ধর্ম কর্ম করে কোনই লাভ নেই, জান্নাত তো জুটবেনাইনা উপরন্ত জাহান্নামে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায়ও নাইঃ এই সত্যের আওয়াজ বজ্রকন্ঠে চারিদিকে ধ্বনিত ও প্রচারিত হলে এই জাতির অভ্যন্তরীণ দৈনন্দিন পরিবেশেও পরিবর্তন সংগঠিত হয়ে অপর বিজাতীয় জাতি,ধর্ম ও দেশের মতই সৎকর্মশীল মানব তৈরি হতে দেখা যেত।
আসলে কিন্ত নামাজি, ঈমানদার, দ্বীনদার হওয়ার মূল কথা হচ্ছে নির্ভেজাল সৎকর্মশীল হওয়া। বাহ্যিকভাবে যত বড় বুজর্গ, পীর, মস্তবড় দ্বীনদার হোক না কেন একমাত্র ঈমানদার সৎকর্মশীলরাই জান্নাতে যায়গা পাবে।জান্না্ত পেতে হলে্ অবশ্য অবশ্যই কেবল আংশিক নয় বরং সারাজীবন ফুলটাইমই সৎকর্মশীল হতে হবে, শেষ বিচারের মাঠে সে ক্ষেত্রে কোনো রকম ছাড় কিন্ত নেই।
'নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।'-সূরা আনকাবূত (২৯:৪৫)
"রোজা হলো (পাপাচার থেকে রক্ষার) ঢাল স্বরূপ।........ " (বুখারী-১৮৯৪)
"যে ব্যক্তি মিথ্যা পরিত্যাগ করলো না, আল্লাহ তা'য়ালা তার পানাহার ত্যাগ কবুল করেন না" (বুখারী-১৯০৩)
অসৎ ব্যাক্তির ইবাদত মূল্যহীন আর জান্নাত লাভে কোনো কাজেই আসবেনা। জান্নাতের জন্য সমগ্র জীবন ঈমানের সাথে সৎকাজ করার দৃঢ় মানসিকতা অবশ্য থাকতেই হবে যেটা কোরআন পাকে বিভিন্ন আয়াতে তাগিদ করা হয়েছে।দৃশ্যত এ বিষয়ে কোন রকমই ছাড় কিন্ত রাখা হয়নি।
আসমান উচু পরিমাণ নেকী অর্জন করেও প্রকৃত সঠিক কথা হচ্ছে, সারা জীবন যাদের হক নষ্ট করা হয়েছে নিজের উপার্জিত মূলধনের সব নেকী দিয়ে তাদের সাথে বিনিময় করতে হবে। আর এভাবে পরিশোধ করতে করতে আগেই যদি নেকী সব শেষ হয়ে যায় সেক্ষত্রে প্রাপকের গুনাহ নিজের কাঁধে নিয়ে জাহান্নামের ভয়াবহ আগুনে জ্বলতে হবে।
হাদিসে এসেছেঃবিড়ালের সাথে সঠিক আচরণ না করার জন্য জনৈক দ্বীনদার মহিলাকে পর্যন্ত জাহান্নামে যেতে হয়।
আর সৃষ্টির সেরা যে কোন বনি আদমের সাথে দুর্নীতির ঘোমটার আড়ালে অযাচিত ব্যাবহার বা আচরণ করা হলে তার পরিণাম কি হতে পারে সহজে অনুমেয়, সে বিষয়টি দুনিয়ার মুসলিমগন সবিশেষ গুরুত্ব সহকারে কখন ও একটিবারও ভেবে দেখেছে/ প্রচার করেছে কি? তাহলে কি আজকে দুর্নীতিপরায়ণ দেশ/ জাতির তকমা পেত?
রাসুলুল্লাহ(দঃ)কে তার সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল- গীবত কি জিনার চেয়েও মারাত্মক? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, কারণ কোনো ব্যক্তি জিনার পর (বিশুদ্ধ) তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু গীবতকারীকে যার গীবত করা হয়েছে, তিনি মাফ না করলে আল্লাহ মাফ করবেন না। (মুসলিম)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত , হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান গীবত কাকে বলে? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল (সঃ) ভালো জানেন।
তিনি বলেন, তোমার কোনো ভাই সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তাই গীবত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যে দোষের কথা বলি সেটা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসুল সাল্লাল্লাহ (সঃ) বলেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তবে তুমি অবশ্যই গীবত করলে আর তুমি যা বলছো তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছো।(মুসলিম)
ইসলামে অপবাদ কারীর শাস্তি কিন্ত অত্যন্ত ভয়াবহ কঠোর। আবার সার্বিকভাবে দেখলে কিন্ত গীবতকে বলা যায় অনেক দুরথেকে পরোক্ষ ভাবে গুনাহ করা। আর তার থেকেই যদি কোন পরিত্রাণ না জোটে তবে ভেবে দেখা জরুরী, মানুষের সাথে প্রত্যক্ষভাবে ঘটে যাওয়া দুর্নীতির সাজা কত কঠিন/ ভয়াবহ হবে?
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা কি বলতে পার অভাবী লোক কে? তাঁরা বললেন, আমাদের মাঝে যার দিরহাম (টাকা কড়ি) ও ধন-সম্পদ নেই সে তো অভাবী লোক। তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে প্রকৃত অভাবী লোক, যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন সলাত, সাওম ও যাকাত নিয়ে আসবে; অথচ সে এ অবস্থায় আসবে যে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে অপবাদ দিয়েছে, অমুকের সম্পদ ভোগ করেছে, অমুককে হত্যা করেছে ও আরেকজনকে প্রহার করেছে। এরপর সে ব্যক্তিকে তার নেক ‘আমাল থেকে দেয়া হবে, অমুককে নেক ‘আমাল থেকে দেয়া হবে। এরপর যদি পাওনাদারের হাক্ব তার নেক ‘আমাল থেকে পূরণ করা না যায় সে ঋণের পরিবর্তে তাদের পাপের একাংশ তার প্রতি নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৬৪৭৩)
নবী (দঃ) বলেছেন, "আসল সর্বহারা আর রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, কেয়ামতের দিন রোজা, নামাজ, অনেক হজ্ব, দান খয়রাত নিয়ে হাজির হবে কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না দেয়া,মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে রিক্ত হস্তে জাহান্নামে যাবে।"
, "ঋণ সম্পর্কীয় কঠিন বিধান। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহর পথে শহীদ হয়, তারপর পুনর্জীবিত হয়ে আবার আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়, তারপর পুনর্জীবিত হয়ে আবার আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয় তথা তিনবার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করে, আর তার অনাদায়ী ঋণ থেকে যায়, তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ তার ঋণ পরিশোধ না করা হয়।" (আবু দাউদ, মিশকাত পৃষ্ঠা. ১৬৩)
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাজায় যে প্রশ্ন করতেনঃ
রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "শহীদের সব গুনাহই ক্ষমা করে
দেওয়া হবে। মাফ হবে না শুধু ঋণ।" (মুসলিম)
বাস্তবতা হচ্ছেঃ সত্যিই পরিতাপের বিষয়,মুসলিম দেশ ও জাতি বর্তমান বিশ্বে অপর সব দেশ ও জাতি থেকে দুর্নীতির প্রতিযোগিতায় এগিয়ে। সব দেশ গুলোর দুর্নীতির সুচক এটা প্রমান করে চোখে আঙুল দিয়ে মুসলিম দেশ ও জাতিকে দেখিয়ে দিচ্ছে।
বিশ্বে সবেচেয়ে বেশি দুর্নীতি হওয়া দেশের তালিকায় টানা পাঁচ বছর শীর্ষ অবস্থানে ছিল সমগ্র বিশ্বে মসজিদের দেশ হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশ।
এবারের সিপিআই অনুযায়ী ৬৮ স্কোর এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী গতবারের মতই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ভুটান। এর পরের অবস্থানে ৪১ স্কোর নিয়ে ৮০তম স্থানে রয়েছে ভারত। এরপরে শ্রীলঙ্কা ৩৮ স্কোর নিয়ে ৯৩ তম অবস্থানে রয়েছে। ৩২ স্কোর পেয়ে ১২০তম অবস্থানে রয়েছে ইসলামী রিপাবলিক পাকিস্তান। অন্যদিকে ২৯ স্কোর পেয়ে ১৩০তম অবস্থানে মালদ্বীপ। বাংলা দেশের অবস্থান?
এরপর ২০১৮ এর সমান স্কোর ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৪৬ তম অবস্থানে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের পরে ১৬ স্কোর পেয়ে সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী ১৭৩ তম অবস্থানে রয়েছে তালেবান স্বর্গ ভুমি আজকের-আফগানিস্তান। অর্থাৎ সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশ সিপিআই সূচক অনুয়ায়ী ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোর মধ্যে সপ্তমবারের মত এবারওদ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে। এই হচ্ছে মসজিদের দেশ তাবলীগের মারকাজ বাংলাদেশের সার্বিক গৌরবময় চিত্র। ইসলামের কেন্দ্র ভূমি সৌদি আরবের অবস্থান ৫১। আর ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল ৩৫। তার অর্থ, স্পষ্টতই দুর্নীতিতে ইসরাইল থেকে ১৬ পয়েন্ট এগিয়ে সৌদি আরব।বাস্তবতা হচ্ছেঃ ইহুদি, খ্রিষ্টান সব ধর্মের কাছেই মুসলিম দেশ, জাতি ও ধর্মের শোচনীয় গৈরবময় নতি স্বীকার।
অপরদিকে মাত্র [{১}] হচ্ছে নিউজল্যান্ড, ডেণ্ মার্ক, ফিনল্যান্ড এর মত দেশগুলো।
এ ক্ষেত্রে কোরআনের স্পষ্ট ফয়সালা কি?
আসলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জান্নাত লাভের প্রায় সব আয়াতেই স্পষ্টত সরাসরি উল্লেখিত হয়েছে 'ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ' কথাটি। ঈমান আনবে কিন্ত সেই সাথে দুর্নীতি পরায়ণ জীবন লালন করবে সেই ইমানদারের জন্য জান্নাত নেই। সে জন্য জান্নাত লাভের সব আয়াতেই ঈমানের সাথে সৎকর্মশীল হবার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
১] ' .....কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও।.........' [ সুরা বাকারা ২:১৪৮ ]
২]'সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে .............' [সূরা বাকারা আয়াত ২ঃ১৭৭]
৩]'যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে আমি কাউকে তার সামর্থ্যের চাইতে বেশী বোঝা দেই না। তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা তাতেই চিরকাল থাকবে। [ সুরা আরাফ ৭:৪২ ]
৪] 'নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ............. তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।' [ সুরা হুদ ১১:২৩ ]
৫] আর যারা তাঁর কাছে আসে এমন ঈমানদার হয়ে যায় সৎকর্ম সম্পাদন করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে সুউচ্চ মর্তবা। [ সুরা ত্বা-হা ২০:৭]
যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে, সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। [ সুরা ত্বা-হা ২০:১১২]
৬]যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:১৪]
৭] সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবংসম্মানজনক রুযী।[সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫০]
৮] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ। [সুরা শু’য়ারা ২৬:২২৭ ]
৯] তবে যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে।[ সুরা কাসাস ২৮:৬৭ ]
১০] আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল, তার বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা ঈমানদার এবং সৎকর্মী, তাদের জন্যে আল্লাহর দেয়া সওয়াবই উৎকৃষ্ট। এটা তারাই পায়, যারা সবরকারী। [সুরা কাসাস ২৮:৮০ ]
১১] যে সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে তদপেক্ষা উত্তম ফল পাবে এবং যে মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, এরূপ মন্দ কর্মীরা সে মন্দ কর্ম পরিমানেই প্রতিফল পাবে। [সুরা কাসাস ২৮:৮৪ ]
১২] আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব। [ সুরা আনকাবুত ২৯:৭ ]
১৩] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব। [ সুরা আনকাবুত ২৯:৯ ]
১৪] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের।[ সুরা আনকাবুত ২৯:৫৮ ]
১৫] যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে সমাদৃত হবে; [ সুরা রূম ৩০:১৫ ]
১৬] যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে যাতে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে প্রতিদান দেন। নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন না। [সুরা রূম ৩০:৪৫ ]
১৭] যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। [ সুরা লুকমান ৩১:৮ ]
১৮] যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে।[ সুরা লুকমান ৩১:২২ ]
১৯] যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়নস্বরূপ বসবাসের জান্নাত।[সুরা সাজদা৩২:১৯]
২০] তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি। [সুরা আহযাব ৩৩:৩১]
২১] তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [সুরা সা’বা ৩৪:৪ ]
২২] তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। [সুরা সা’বা ৩৪:৩৭ ]
২৩] আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।
[সুরা সাফফাত ৩৭:৮০]
২৪] এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। [সুরা সাফফা৩৭:১২১]
২৫] যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। [সুরা মু’মিন ৪০:৪০]
২৬] অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী। তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক। [সুরা মু’মিন ৪০:৫৮]
২৭] নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা হা-মীম৪১:৮]
২৮] যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ,তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার? [সুরা হা-মীম ৪১:৩৩]
২৯] যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না। [সুরা হা-মীম ৪১:৪৬]
৩০]যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে।অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। [সুরা যাসিয়া ৪৫:১৫]
৩১] যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।[সুরা মুহাম্মাদ ৪৭:১২]
৩২]কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার। [সুরা ইনশিকাক ৮৪:২৫]
৩৩] যারা ঈমান আনেওসৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।[সুরা বুরূজ ৮৫:১১]
৩৪] তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।[সুরা তীন ৯৫ঃ৬]
৩৫] ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।’ ‘তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।’ [সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮: ৭-৮]
ধর্মীয় বিধি নিষেধ মানা যার যার ব্যক্তিগত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং এটি আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার বিষয়। কিন্তু সামাজিক বিধি নিষেধ মেনে চলা একজন বান্দার সাথে অন্য বান্দার মধ্যকার বিষয়। অন্য কথায় ইসলামিক নীতিমালা যদি মুসলমানরা নিজেদের জীবনে ব্যবহারিক প্রয়োগ না করে, মুসলিম সমাজ দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে যার ভয়াবহ চিত্র মুসলিম দেশ গুলোতে।
লক্ষ, নিযুত, কোটি ছওয়াব পাবার ধান্ধায় যদি মুল এবাদত প্রক্রিয়া থেকে সৎকর্মশীল হওয়ার এবাদতকে ঝাটিয়ে বাদ রাখা হয় সে ক্ষেত্রে পরকালে কারও কপালে জান্নাত তো জুটবেইনা বরং ইহকালে দুর্নীতিপরায়ণ দেশ ও জাতি হিসাবে বিশ্বে পরিচিত হয়ে আজকের মত সুনাম কুড়াতে হবে!
আল্লাহ মুসলিম জাতি ও মুসলিম দেশ সমূহকে হেফাজত করে আমাদের মুসলিম উম্মাহর সকলকে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যেয়ে জান্নাত লাভের তৈফিক দিন। আমিন।
২০২০ সালে দুর্নীতিপরায়ণ দেশের তালিকা সবচেয়ে কম থেকে ধারাবাহিকভাবে বেশি।
CORRUPTION PERCEPTIONS INDEX 2020
https://www.transparency.org/en/cpi/2020/index/nzl
CORRUPTION PERCEPTIONS INDEX 2020
1. New Zealand
2. Denmark
3. Finland
4. Singapore
5. Switzerland
6. Sweden
7. Norway
8. Netherlands
9. Luxembourg
10. Germany
11. Iceland
12. Canada
13. United Kingdom
14. Australia
15. Austria
16. Hong Kong
17. Belgium
18. Ireland
19. Estonia
20. Japan
21. Uruguay
22. United Arab Emirates
23 France
24. United States
25.Bhutan
26.Chile
27.Taiwan
28.Bahamas
29. Spain
30. Barbados
31.Portugal
32. Qatar
33. Botswana
34. Brunei
35. Israel
36. Slovenia
37. Lithuania
38. Saint Vincent and the Grenadines
39. South Korea
40. Poland
41. Cyprus
42. Cape Verde
43. Czech Republic
44. Georgia
45. Latvia
46. Costa Rica
47. Dominica
48. Saint Lucia
49. Malta
50. Rwanda
51. Grenada
52. Italy
54.Saudi Arabia
55. Malaysia
56. Namibia
57. Oman
58.Mauritius
59. Slovakia
60. Greece
61. Jordan
62. Cuba
63. Croatia
64. São Tomé and Príncipe
65. Montenegro
66. Senegal
67. Belarus
68. Argentina
69. Romania
70. South Africa
71. Suriname
72. Hungary
73. Jamaica
74. Tunisia
75. Bulgaria
76. Solomon Islands
77. Bahrain
78. Armenia
79. Morocco
80. India
81.Ghana
82. Benin
83. China
84. Burkina Faso
85.Kuwait
86.Indonesia
87. Guyana
88. Lesotho
89. Trinidad and Tobago
90. Serbia
91. Turkey
92. East Timor
93. Sri Lanka
94. Ecuador
95. Vietnam
96.Colombia
97. Tanzania
98. Ethiopia
99.Gambia
100. Bosnia and Herzegovina
101. Panama
102. Kosovo
103.Thailand
104. Peru
105. Egypt
106. Ivory Coast
107. Mongolia
108. North Macedonia
109. Albania
110. Brazil
111.Algeria
112. Philippines
113.Zambia
114. El Salvador
115.Kazakhstan
116.Nepal
117. Sierra Leone
118. Niger
119. Pakistan
120. Moldova
121. Bolivia
122. Malawi
123. Gabon
124. Djibouti
125. Ukraine
126. Azerbaijan
127. Kyrgyzstan
128. Myanmar
129. Mexico
130. Mali
131.Maldives
132. Togo
133. GuineaLaos
134. Liberia
135. Dominican Republic
136. Paraguay
137. Russia
138. Lebanon
139. Papua New Guinea
140. Mauritania
141. Uganda
142. Kenya
143. Honduras
144. Iran
145. Guatemala
146. Nigeria
147. Mozambique
148. Bangladesh
149.Angola26Increase
150.Comoros
151.Uzbekistan
152. Tajikistan
153. Central African RepublicCameroon
154. Madagascar
155. Zimbabwe
156. Eritrea
157. Nicaragua
158. Cambodia
159. Chad
160. Iraq
161. Turkmenistan
162. Republic of the Congo
163. Burundi1
164. Haiti
165. DR Congo
166. Guinea-Bissau
167. Libya
168. North Korea
169. Venezuela
170. Afghanistan
171. Sudan
176. Yemen
177. Syria
178. South Sudan
179. Somalia
https://www.transparency.org/en/cpi/2020/index/nzl
Abdul Wahab
এই লেখাটা বোঝার মত নিরপেক্ষ মানস মুসলিম উম্মার মধ্যে খুব কম লোকের আছে।
মন মানসিকতা চিন্তা-চেতনা একটা অন্ধকার গহ্বরে থাকার কারণে এই অবস্থা।
Zobayer Enamul Karim
Raza Vai, JajakAllah Khair for ur Excellent contribution, may the Muslim ummah able to take lessons from this beautuful write-up.
Tareque Rahman
Salaam respected Reza Bhai. Delighted seeing ur presentation. The very significant issue is offered here. Shukran. Mubarakan
Jamil Ahmad
Thanks to you for true understanding of lslam
Mohammed Shah Alam
বেশ তাৎপর্যপূর্ণ কথাগুলো অনেক সুন্দর করে, সহজ করে বলেছেন রেজা ভাই
Mohammed Rahman
মানুষের কর্মজীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে সমাজ, রাষ্ট্র, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সকল পর্যায়ে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করার নাম এক কথাই প্রকাশ ছিল আল্লাহর এবাদত করা।
সেই মূল concept থেকে সময়ের ব্যবধানে মুসলিম উম্মাহ সরতে সরতে কিছু প্রথাগত আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে যেমন তোতা পাখির মতো কুরআন তেলাওয়াত করা, পাহাড় সমান নেকী লাভের আশায় নামাজ পড়া, অর্থ ও উদ্দেশ্য না বুঝে মন্ত্র পাঠ করার মতো তওবার তাসবিহ করা সহ নানা পদের মন্ত্র পাঠের মত কাজ কর্মকে এবাদতের চুড়ান্ত পর্যায় বা চুড়ান্ত রূপ হিসেবে পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
এক কথায় দুনিয়ার জীবনের কর্মের এবাদতকে মন্ত্র পাঠের এবাদতে রূপান্তর করে ফেলা হয়েছে। অর্থ ও উদ্দেশ্য না বুঝে তওবার মন্ত্র পাঠ করা থেকে শুরু করে, মন্ত্র জপ করার মত এক এক তাসবিহ পাঠের এমন ভাবে ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে যে, তা জপতে পারলে জীবনের সকল গুনাহ মাফ তো হবেই, আর জান্নাত তো তাকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ধরবে।
এবাদতের এই ভ্রান্ত ও কুধারণা মুসলিম সমাজে লাগামহীন দুর্নীতি ও লুটপাট করা সহ সকল ধরনের অপরাধ করতে অনেক বেশি সাহসী করে তুলেছে। কারণ ঝুঁকি মুক্ত ও সহজলভ্য মন্ত্র পাঠের চুড়ান্ত এবাদতের মাধ্যমে সকল অপরাধ থেকে নিশ্চিত মুক্তির নিশ্চয়তা তো হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।
এই সর্বনাশা ভ্রান্ত ও কুধারণা থেকে মুক্ত করতে আসল উৎস কুরআনের জ্ঞানে আলোকিত করতে এ ধরনের লেখা লেখি ও তার বহু মুখি প্রচার করা অত্যান্ত জরুরী। সে লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসা দরকার।
এ লেখার মাধ্যমে সেই উদ্যোগ নেয়ার জন্য প্রিয় রেজা ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।