Sunday, May 24, 2020

দেশে দেশে (নেদারল্যান্ড,নিউজিল্যাণ্ড, আমেরিকা ) ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি

   চলমান ইসলাম-ফোবিয়া মুলতঃ  ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি
 দেশে দেশে (নেদারল্যান্ড,নিউজিল্যাণ্ড, আমেরিকা) ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি

কোরাইশ নেতারা একসাথে আলোচনায় বসলেন- এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পায়ের নিচে আর মাটি থাকবে না। যে মুহাম্মাদের কাছে আসে সে-ই মুসলমান হয়। এখন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে, যার ফলে কেউ আর তার কাছে আসার সাহস না পায়। কিভাবে এটা করা যায়? প্রস্তাব আসে, প্রচার করতে হবে, মুহাম্মাদ একজন কবি। বাকিরা একমত না হয়ে বলেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। কুরআন কবিতার মতো নয়। লোকে এটা বিশ্বাস করবে না। তাহলে বলতে হবে, তিনি জাদুকর। ‘তিনি তো কোনো জাদু দেখান না। তা বলাও সঠিক হবে না।’ তাহলে কী বলা যায়? বলতে হবে গণক। এটাও লোকে বিশ্বাস করবে না। কারণ তিনি কখনোই গণকের মতো কাজ করেন না। তাহলে উপায়! সত্য কথাটা সবাইকে আগেভাগেই জানিয়ে দিতে হবে। তাহলে কেউ আর কাছে ঘেঁষতে সাহস  পাবে না। প্রচার করতে হবে- তার কাছে গেছ তো মরেছ। তিনি ভাইয়ে-ভাইয়ে বিরোধ বাধিয়ে দেন। পিতা-পুত্রের ভালোবাসা কেড়ে নেন। পিতা-পুত্র  একে অপরের শত্রু হয়ে যায়। আর আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, সমাজের সবাই তার দুষমন হয়, সে একঘরে হয়। এ কথা শুনে লোকজনের কৌতূহল বরং ভীষণভাবে বেড়ে যায়। কে এমন ব্যক্তি, যার কাছে গেলেই এত অঘটন ঘটে যাবে? ফলে বেশি বেশি মানুষ আসা শুরু করল এবং মুসলমান হওয়ার হারও দ্রুতগতিতে বাড়তে লাগল।
 ১) নেদারল্যান্ডে ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরইঃ 
ইসলামের বিরুদ্ধে পৃথিবীতে যেসব “মুভি” বানানো হয়েছিলো, সেগুলোর মধ্যে “Fitna” মুভিটি অন্যতম। মুভিটি নেদারল্যান্ডে বানানো হয়।
মুভিটি বানানো হয় নেদারল্যান্ড ভিত্তিক রাজনৈতিক সংগঠন PVV (Partij voor de Vrijheid) এর তত্ত্বাবধানে। Partij voor de Vrijheid একটি ডাচ পরিভাষা যার ইংরেজি অর্থ- Party For Freedom.
 এই রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন Greet Wilders , যিনি ওয়ার্ল্ডওয়াইড একজন নামকরা ইসলাম বিদ্বেষী বলে খ্যাত ছিলেন।
“Fitna” মুভিটা নির্মিত হয় এই লোকের প্ররোচনায়। বলা বাহুল্য, Party For Freedom নামের রাজনৈতিক সংগঠনটি যতোটা না রাজনৈতিক, তারচেয়ে বেশি ইসলাম বিদ্বেষী বলে পরিচিত ছিলো।
নেদারল্যান্ডে কোরআন এবং মুসলিম প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধের দাবি সর্বপ্রথম এই সংগঠনটিই তুলেছিলো।
২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠন সে বছরই নেদারল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় এবং পার্লামেন্টে ৯ টি আসন লাভ করে। এরপর, ২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে এটি লাভ করে মোট ২৪ টি আসন।
“Fitna” মুভিটা সম্পর্কে কিছুটা ধারণাঃ ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচারমূলক জঘন্য কয়েকটি মুভির মধ্যে এটি একটি।
এই মুভির সবচেয়ে জঘন্যতম দিক হলো এই, এই মুভির শুরুতেই দেখানো হয় ,- ইসলামের সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) মাথায় একটি বোমা নিয়ে দৌড়াচ্ছেন (নাউজুবিল্লাহ)।
এরপরে মুভিটিতে কোরআনের “জিহাদ” সম্পর্কিত বিভিন্ন আয়াত কোট করে সেগুলো দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় যে, ইসলাম একটি সন্ত্রাসী এবং জঙ্গীবাদী ধর্ম। সেই মুভিতে বিতর্কিত ৯/১১ এর ঘটনাকেও প্রদর্শন করা হয়। মুভিটা মুক্তি পায় ২০০৮ সালে।
Party For Freedom এর প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে যে কয়েকজন নেতা এই সংগঠনকে সামনে থেকে নের্তৃত্ব দিয়েছিলেন, Arnoud Van Doorn তাদের অন্যতম। এই লোকও ছিলেন Party For Freedom এর প্রতিষ্ঠাতা Greet Welders এর মতো প্রচন্ডরকম ইসলাম এবং মুসলিম বিদ্বেষী।
“Fitna” মুভিটা তৈরি এবং এর প্রচার-প্রসারেও Arnoud Van Doorn এর ভূমিকা ছিলো ব্যাপক।
কিন্তু দারুন  কৌতূহলের  ব্যাপার হচ্ছে, প্রচন্ড ইসলাম-মুসলিম বিদ্বেষী এই লোক ২০১২ সালে ঘোষণা দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে ফেলেন।
এই মুভিটা তৈরির পরে একটা হিতে-বিপরীত কান্ড হয়। দেখা গেলো, এই মুভি দেখার পরে প্রচুর সংখ্যক অমুসলিম ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে এবং তারা ইসলাম এবং মুসলিমদের ব্যাপারে রিসার্চ শুরু করে। Arnoud Van Doorn ছিলেন তাদের একজন।
নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “I have heard so many negative stories about Islam, but I am not a person who follows opinions of others without doing my own research.Therefore, I have actually started to deepen my knowledge of the Islam out of curiosity.”…
ইসলাম নিয়ে পশ্চিমা মহলের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত এই লোক “Fitna”র মতো ইসলাম বিদ্বেষী মুভির প্রডিউচারদের একজন ছিলেন।
কিন্তু, ইসলাম নিয়ে যখন তিনি নিরপেক্ষ গবেষণা শুরু করলেন, তখন তিনি দেখলেন যে, এতোদিন তাদেরকে ইসলাম নিয়ে যা যা জানানো হয়েছে এবং দেখানো হয়েছে, তা আদতে অপপ্রচার। ইসলাম কোন সন্ত্রাসী ধর্ম নয়, জঙ্গীবাদী ধর্ম নয়। ইসলাম একটি শাশ্বত, পরিপূর্ণ জীবন বিধান।
ইসলামের প্রতি আসক্ত হবার পরে যখন তিনি পুরোদাগে ইসলাম নিয়ে পড়াশুনায় নিমজ্জিত হন, তখন ২০১১ সালে Party For Freedom ভেঙে যায়।
২০১৩ সালে Arnoud Van Doorn মক্কা যান হজ্ব করার জন্য। সেখানে Saudi Gezzete কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উনি বলেন,- “I found myself among these faithful hearts. I hope that my tears of regret will wash out all my sins after my repentance”
তিনি আরো বলেন, “I felt ashamed standing in front of the Prophet’s grave. I thought of the grave mistake which I had made by producing that sacrilegious film. I hope that Allah will forgive me and accept my repentance.
বর্তমানে তিনি European Daw’ah Foundation চেয়ারম্যান এবং Canadian Daw’ah Association এর এ্যাম্বাসেডর।উনার আগের ভুল (Fitna Movie) সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন,- “I feel an urge and a responsibility to correct the mistakes I have done in the past. I want to use my talents and skills in a positive way by spreading the truth about Islam. I am trying to make a new movie about Islam and the life of Prophet Muhammad (peace be upon him). It would show people what examples the Prophet set in his life and the movie would invite younger people to Islam.”
কাহিনীর এখানেই সমাপ্তি নয়। বাবার ইসলাম গ্রহণের পরে, বাবাকে পুরোপুরি পাল্টে যেতে দেখে উনার ২২ বছর বয়সী ছেলেও ইসলাম গ্রহণ করে। বাবার পরিবর্তন সম্পর্কে বলতে গিয়ে সে (উনার ছেলে) বললো,- “I saw my father become more peaceful after converting to Islam. That’s when I realised there is something good in this religion and it made me change my perception of Muslims. I started studying the Holy Quran and going through lectures of important scholars”
এই হচ্ছে একজন চরম ইসলাম বিদ্বেষীর ইসলামে দাখিল হবার গল্প।“বলুন, সত্য এসেছে আপনার র’বের পক্ষ থেকে। এবার যাদের ইচ্ছা হয় বিশ্বাস করুক আর যাদের ইচ্ছা প্রত্যাখ্যান করুক”- আল কাহাফ, ২৯
২) নিউজিল্যাণ্ডে ইসলাম-ফোবিয়া ইতিহাসেরইঃ
@ নিউজিল্যাণ্ডে পৌচাশিকতার কারণে নিউজিল্যাণ্ডের পার্লামেন্টের অধিবেশন কুরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হয়েছে।
@ নিউজিল্যাণ্ডের পুলিশ মসজিদে গিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করছে।
@ ক্ষতিগ্রস্থ মুসলমানদেরকে নিউজিল্যাণ্ডের রাষ্ট্রীয় তহবীল সহায়তা দিচ্ছে।
@ নিউজিল্যাণ্ডের প্রচলিত অস্ত্র আইনের সংস্কার হচ্ছে।

@ নিউজিল্যাণ্ডে পৌচাশিকতার কারণে সারা পশ্চিমা বিশ্বে যে আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে ও মুসলমানদের প্রতি সহানুভুতির হাত প্রসারিত হয়েছে, তা মুসলমানরা নিজেরা কঠোর পরিশ্রম করেও হয়তো আগামী এক শ' বছরে পারতো না।
৩) বুশের সাড়া জাগান বিশ্ব আলোড়ন সৃষ্টিকারী 'নাইন -ইলেভেন'    ইতিহাসেরইঃ
বুশের নাইন-ইলেভেনের ঐতিহাসিক নাটকের পরও এমন কিছু একটা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
নয় এগারোর ঘটনার ১৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইএসআই বা ইউরোপিয়ান সায়েন্টিফিক ইন্সটিটিউটের প্রকাশনা 'ইউরোপিয়ান সায়েন্টিফিক জার্নাল' বলছে: অব্যাহত নানা অনুসন্ধানের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে মার্কিন বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ার্স ধ্বংস করা হয়েছিল নিয়ন্ত্রিত ধ্বংস-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে সামগ্রিকভাবে গত ১৬ বছরে যে জিনিষ গুলো বাস্তবে একেবারেই পরিষ্কারঃ
১) BLDG. # 7, সম্পুর্ণ controlled demolition, এটা এখন বিতর্কের উর্ধে।
২) কোন বিমান Pentagon কে আঘাত করেনি, ওটা ছিল missile, যা সবসময় আমেরিকার Air Force অথবা Navy এর নিয়ন্ত্রণে। তাছাড়া Pentagon এর কোন অংশে Renovation চলছে এটা বাইরের কারও জানার কথা না।
Building #7- ৪৭ তালা ভবন, কোন বিমান আঘাত করেনি অথচ পরিষ্কার ওটা ছিল controlled demolition, Free Fall, তারপর পেন্টাগনে যাত্রীবাহী বিমান ধংসের যাত্রীদের মালামাল আর মৃতদেহের কোন প্রমান সরকার দেখাতে পারেনি। আর Shanksville, Pennsylvania-তেও কোন যাত্রীবাহী বিমান ধ্বংসের নমুনা CNN, ABC, FOXNEW তুলে ধরতে পারেনি।
টুইন টাওয়ার হামলার প্রায় দুবছর আগে ভাগে ট্রাম্প তার বইতে (‘The America We Deserve’প্রকাশিত জানুয়ারি ২০০০) Nostrodomas এর মত ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন~~ ও সামা বিন লাদেন টুইন টাওয়ারে হামলা চালাবেন। US Presidential hopeful Donald Trump "warned" of the horrific September 11 attack on the World Trade Center in a book published less than two years before the world's worst terror strikes happened, it is being claimed. By JON AUSTIN PUBLISHED: 03:42, Tue, Feb 23, 2016 | ট্রাম্পকে তাই বলা হচ্ছে ‘মডার্ন ডে নসটডোমাস।’
Alex Jenes Radio Show সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, “আমি ওই বইতে বলেছি, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এই ব্যাক্তি ওসামা বিন লাদেন সম্পর্কে।’’ ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণে সামগ্রিকভাবে দেখা যায় আসলে টুইন টাওয়ারে হামলা ছিল আভ্যন্তরীণ বিষয় (পরিকল্পনা) মাত্র।
ক্লিনটন তখন মসনদে। আমি বাল্টিমোরে, ঘুম থেকে উঠে একদিন এক অবিশ্বাস্য নাটকীয় সংবাদ জানতে পারি। হোয়াইট হাউজে ইসলামের চাঁদতারা পতাকা উড়ছে। ভয়ের কিছু ছিল না, কারণ আলকায়েদার জন্ম তখনো হয়নি এবং বিন লাদেনেরও পাত্তা ছিল না, যিনি হোয়াইট হাউজে এসে এ ধরনের অঘটন ঘটানোর হিম্মত রাখেন। তবে সে সময় এখানকার মিডিয়ায় একটি ঝড় বয়ে যাচ্ছিল- যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত সম্প্রসারণশীল ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। এ সময়টিতে আমি বাল্টিমোর জন হপকিন্সে গবেষণা করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল রিসার্চ ইউনিভার্সিটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাল্টিমোরের হোমউড ক্যাম্পাসের লাইব্রেরির বেসমেন্টের ওয়ালের একটি তথ্য আমার চোখে পড়ে- প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে এক লাখ মানুষ ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করছে। মিডিয়ার অন্য সূত্রে জানতে পারি, এই এক লাখ নওমুসলিমের মধ্যে মহিলার সংখ্যা বেশি। পাশ্চাত্য ভাবধারায় লালিতপালিত মুক্ত হাওয়ায় বেড়ে ওঠা মেয়েরা এত ঝুঁঁকি নিয়ে কেন ইসলামকে পছন্দ করছে যেখানে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, আত্মসমর্পণ ও ভিন্ন রূপ হওয়ার বিধান। হয়।
আমেরিকার স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় জনসংখ্যার বেশির ভাগ ছিল খ্রিষ্টান। এরপর ছিল ইহুদি। অন্যান্য ধর্মের লোক আনুপাতিকভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল না। সরকারিভাবে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, খ্রিষ্টান ও ইহুদি এই দুই ধর্মের পতাকা হোয়াইট হাউজে ওড়ানো হবে। হোয়াইট হাউজে ক্লিনটনের সময়  থেকে ইসলামের পতাকাও স্থান করে নেয়।


ইমাম গাজ্জালি 'নপুংসক ঈমানদার' বলতে কি বুঝাতে চেয়েছেন?

ইমাম গাজ্জালি 'নপুংসক ঈমানদার' বলতে কি বুঝাতে চেয়েছেন?..........

.
নপুংসক বুঝাতে তিনি কোন জেন্ডার উল্লেখ না করে সব ঈমানদারদের শ্রেণী/স্তর বর্ণনা করেছেন মাত্র।
সেই মধ্যযুগে ইমাম গাজ্জালি 'খুলুকে মুসলিমীন' গ্রন্থে লিখেছেন, "মহাকাশের তারকা, নক্ষত্র সম্পর্কে যাদের কোন ধারনা নেই তাদের ঈমানের উপমা হচ্ছে একজন Impotent (নপুংসক) ব্যক্তির সমতুল্য যাদের লাভ মেকিং এর অপার মজা/ ফুর্তি/স্বাদ সম্পর্কে কোনো অনুভূতিই নেই।"
একটু চিন্তা করে প্রশ্ন করিঃ বর্তমান যুগে বসে তিনি এই কথাটি কিভাবে উপস্থাপন করতেন? তাঁর মতেঃ প্রকৃত ঈমানের সত্যিকার স্বাদ পেতে জরুরী মহাকাশ ধারনাও। তাহলে দেখিঃ সর্বশেষ বিজ্ঞানে আজকের মহাকাশ ঈমান বাড়াতে, সুদৃঢ় করতে ঈমানদারদের জন্য কি বার্তা দেয়?
প্রসঙ্গক্রমে এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্যঃ ‘আমরা এখন আকাশে যে নক্ষত্র ও তারকাগুলো দেখি, সেগুলোর মধ্যে অসংখ্য তারকার নাম আরবিতে, কারণ মুসলিমরাই এগুলো আবিষ্কার করে এবং তারাই এগুলোর নাম দেন। আমরা ক’জন ওয়াকিবহাল, সে সময়ে সমরকন্দ, দামেস্ক, কায়রো আর করদ্যোভায় প্রথম বড় বড় মান-মন্দির গড়ে তোলেন আরব মুসলমানেরা। মুসলিম জ্যোতির্বেত্তারা এমন সব পর্যবেক্ষণ চালিয়েছেন, যেসব ১২ বছরের ওপরে দীর্ঘায়িত হয়েছিল।
সে সময়ের মুসলিম বিশ্বের জ্যোতির্বিজ্ঞান কোন অবস্থানে পৌঁছেছিল তার বর্ণনা একটি ঘটনায় ফুটে ওঠে: সন্ন্যাসী গারভাট (দ্বিতীয় সিলভেস্ট নামে তিনি ৯৯৯ সালে পোপ হন) যখন করডোভার মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে খ্রিষ্ট ধর্মাচরণে পুনরায় ফিরে এলেন তখন লোকে বলে, তিনি নাকি সেখানে শয়তানের সাথে দহরম পর্যন্ত করে এসেছেন। ইতিহাস সাক্ষ দিচ্ছে,মহাকাশ গবেষণাকে তখন পশ্চিমাদের কাছে অনেকটা শয়তানি ফালতু কাজ হিসাবে বিবেচিত হত।’
আমাদের সূর্য একটি অতি সাধারণ তারকা। এর আকার তারকাগুলোর গড় আকারের মতোই। আমাদের বাসভূমির তারকা সূর্যের ব্যাস ১৪ লাখ কিলোমিটার। এর অর্থ হলো ১০৯টি পৃথিবী সূর্যের পৃষ্ঠে সাজিয়ে রাখা যায়। এটি এত বড় যে, ১৩ লাখ পৃথিবী এর মধ্যে ভর্তি করা যায়। আমাদের সৌরগ্রহগুলো সূর্যের চতুর্দিকে চাকতির মতো জায়গাজুড়ে আছে, যার দূরত্ব সূর্য থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন কিলোমিটার। একটি তারকার বর্ণনা যদি এমন হয়, সে ক্ষেত্রে মহাবিশ্বে তারকার সংখ্যা কত? বাস্তবে বিশাল সংখ্যার তারকা নিয়ে একটি ছায়াপথ। তাহলে মহাবিশ্বে তারকা ও ছায়াপথ আসলে কয়টি?
Kornreich মহাবিশ্বে ১০ ট্রিলিয়ন ছায়াপথ ধরে একটি মোটামুটি হিসাব বের করেছেন- ছায়াপথের ১০ হাজার কোটি তারকার সাথে এই সংখ্যা গুণ করলে হয় ১০০ অকটিলিয়ন (octillion) তারকা। তার মানে দাঁড়ায়, এক-এর সাথে ২৯টি শূন্য। Kornreich জোর দিয়ে বলেন, এটা সাধারণ হিসাব- তবে গভীর পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মহাবিশ্বে ছায়াপথের সংখ্যা আরো বেশি।
১৩ অক্টোবর ২০১৬, নাসা থেকে পাওয়া তথ্য হচ্ছে, দুই ট্রিলিয়ন ছায়াপথ আছে মাত্র ১০ শতাংশ মহাবিশ্বের মধ্যে; কিন্তু ছায়াপথগুলোর ৯০ শতাংশের খোঁজ এখনো বাকি। ছায়াপথ হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম, যেখানে মিলিয়ন থেকে বিলিয়ন সংখ্যক তারা মাধ্যাকর্ষণের টানে একসাথে আটকে থাকে। গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘অদৃশ্যমান’ ছায়াপথগুলোকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন। কেননা, এসব ছায়াপথ টেলিস্কোপের আওতায় আসে না। সেখান থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, মানুষের ধারণারও বাইরে রয়ে গেছে আরো লাখ লাখ ছায়াপথ (সূত্র:গার্ডিয়ান)।
এর অর্থ দাঁড়ায়, মহাবিশ্বে ২০ ট্রিলিয়ন ছায়াপথও ছাড়িয়ে যেতে পারে! আবার দেখা যায়, সবচেয়ে বড় তারকাগুলো সূর্যের চেয়ে ৫০০ গুণ শুধু বড় নয়, সেই সাথে এক লাখ গুণ বেশি উজ্জ্বল। ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত যে কৃষ্ণ গহ্বর বা ব্ল্যাকহোল, তার ভর ৩০ লাখ সূর্যের সমান হয়ে থাকে। যদি প্রতি সেকেন্ডে একটি করে তারকা গণনা করা হয়, সেক্ষেত্রে এই হারে সব তারকা গুণতে পাঁচ হাজার বছর লাগবে।
ছায়াপথগুলো মহাকাশে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে না থেকে সঙ্ঘবদ্ধভাবে একে অপর থেকে বহু দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করে। সব ছায়াপথ এক করলে তারা মহাশূন্যের ১০ লাখ ভাগের এক ভাগ স্থান দখল করবে, যার অর্থ দাঁড়ায় বাস্তবে মহাশূন্য এত বিশাল যে, বিজ্ঞানের সুপার কল্পকাহিনী পর্যন্ত এর আওতার অনেক বাইরে।
★ছায়াপথ কত বড়ঃ এত বড় যে, বড় ধরনের ছায়াপথের আড়াআড়ি দূরত্ব ১০ লাখ আলোকবর্ষেরও বেশি হবে। এক আলোকবর্ষ = ৯.৪ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার।
এক বছরে প্রতি সেকেন্ডে এক লাখ ৮৬ হাজার মাইল বেগে যে দূরত্ব অতিক্রম করা যায় সেটি হলো ১ আলোকবর্ষ।
আমরা এমন একটি ছায়াপথে থাকি,
যেটা আড়াআড়ি মাপে প্রায় এক লাখ আলোকবর্ষ। আমাদের ছায়াপথটি ধীর গতিতে ঘূর্ণায়মান। এর সর্পিল বাহুগুলোয় অবস্থিত তারকাগুলো প্রায় কয়েকশ মিলিয়ন বছরে একবার করে কেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। সবচেয়ে ছোট ছায়াপথের নাম ডর্ফ, যার প্রশস্থতা কয়েক হাজার আলোকবর্ষের দূরত্বের। অ্যান্ড্রোমেডা ছায়াপথটির এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব হবে দুই লাখ ৫০ হাজার আলোকবর্ষ।
মজার বিষয় হচ্ছে, এই মুহূর্তে মহাবিশ্বের দিকে তাকালে দূর অতীতের মহাবিশ্বকে আমরা আসলে কিন্তু দেখতে পাবো, কেননা এই সময়ে দূর তারকা ছায়াপথ থেকে আলো এসে কেবল আমাদের কাছে পৌঁছেছে। যে কোয়াসারগুলো এখন আমরা দেখছি, সেই আলো আমাদের কাছে পৌঁছতে শত শত কোটি বছর লেগে গেছে।
সমুদ্র তীরের বালুকণার  হিসাব বের করে প্রমান করা যায়=              বালুকনার   চেয়ে তারা   বেশি।   ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের               জ্যোতির্বিজ্ঞানী  অধ্যাপক গ্যারি গিলমোরঃ
বেশিরভাগ ছায়াপথে আমাদের ছায়াপথের মতোই তারা থাকে। মহাবিশ্বের তারারমোট সংখ্যা পৃথিবীর বালুকণার চেয়ে বেশি’ এমন দাবি করেছেন একজন অ্যামেরিকান   জ্যোতির্বিজ্ঞানী
আশির দশকের নিজের জনপ্রিয় টিভি শো কসমস- তিনি  কথা বলেছিলেন।কিন্তু এটা কতটা সত্যি?

এটা কি আসলে গণনা করা সম্ভব?

আমরা এখন সেটাই মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করব :   
                          সাগর তীরের অংক

শুরুতেই ধরে নিতে হবেবিশ্বের সব সাগরের তীরে ঠিক কি  পরিমাণ বালু থাকে।

এজন্য সমুদ্র পৃষ্ঠের দৈর্ঘ্যপ্রস্থ এবং গভীরতা পরিমাপ করতে হবে।

সেজন্য সাগরের তীরের হিসাব করলে হবে নাহিসাব করতে হবে উপকূলীয় এলাকার   পরিমাপের।

 নিয়ে অবশ্য বিশেষজ্ঞরা একমত হতে পারেন না তেমনকারণ উপকূলীয় এলাকার মাপ বাড়ে  কমেস্থির থাকে না।

তারপরেও বিবিসি একজনের সঙ্গে কথা বলেছে যিনি একটি সংখ্যা জানিয়েছেন উপকূল নিয়ে  গবেষণা করে এমন  প্রতিষ্ঠান ডেল্টারসের গবেষক জেনাডি ডনসিটস বলছেনপুরো পৃথিবীর উপকূলের  পরিমাপ করা বিশাল দুঃসাধ্য এক কাজ।

ওপেন স্ট্রীটম্যাপের মতো ফ্রিম্যাপ ব্যবহার করে কম্পিউটার ডাটার মাধ্যমে দেখা যাচ্ছেবরফাচ্ছন্ন এলাকাসহ উপকূলীয়  এলাকার দৈর্ঘ্য ১১ লাখ কিলোমিটারের মতো।

যার মধ্যে তিন লাখ কিলোমিটার এলাকা বালুময় সৈকত।
যেখানে   বালুকণার সংখ্যা হবে চার সেক্সটিলিয়ন।

আখন আমরা দেখব তারকার সংখ্যাঃ দেখা যাবেমহাবিশ্বে তারার সংখ্যা১০ সেক্সটিলিয়ন

তাহলে এটি ঠিকই যে মহাবিশ্বে বালুকণার চেয়ে তারার সংখ্যা বেশি। সূত্র : বিবিসি

                                                     ছায়পথের সংখ্যাঃ অধ্যাপক গ্যারি গিলমোর ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানীযিনি মহাবিশ্বে তারার সংখ্যা গণনা করছেন অনেক বছর যাবত।

যুক্তরাজ্যের চালানো প্রকল্প গাইয়া নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।এর মধ্যে রয়েছে একটি ইউরোপীয় মহাকাশযানযেটি এখন আকাশের মানচিত্র তৈরির    কাজ করছে। আমাদের মহাবিশ্বে কত তারা আছে,তা গণনার জন্য গাইয়া দল এখন তাদের ডাটা ব্যবহার করে মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথের একটি বড় ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছে।

অধ্যাপক গিলমোর বলছেনপ্রতিটি তারার পরস্পরের থেকে দূরত্ব অনুযায়ী পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে দুইশো কোটির চেয়ে বড় তারা রয়েছে।অর্থাৎ ইউরোপের অংশে যদি মোট তারার এক শতাংশ থাকেতাহলে আমাদের ছায়াপথে হয়তো সব মিলে কুড়ি হাজার কোটি  তারা আছে। কিন্তু এতো কেবল একটি ছায়াপথেরহিসাব।

                                সার্বজনীন চিত্র

সৌভাগ্যজনকভাবেমহাবিশ্বে আমাদের ছায়াপথ একটি   টিপিক্যাল বা সাধারণ ধরণের।বেশিরভাগ ছায়াপথে   আমাদের  ছায়াপথের মতোই তারা থাকে।অধ্যাপক গিলমোর বলছেনসে কারণে আমরা একে গড়   হিসাব তৈরির কাজে লাগাতেপারি।

অর্থাৎ যদি মোট ছায়াপথের সংখ্যা ধারণা করা যায়,তাহলে তারার সংখ্যা বের করা সম্ভব হবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য সেটা হয়তো বড় সমস্যা নয়।

মহাবিশ্বে যদি দশ হাজার ছায়াপথ থাকেমনে রাখতে হবে একেকটিতে হয়তো কুড়ি   হাজার করে তারা আছে


তাহলে এটি ঠিকই যে মহাবিশ্বে বালুকণার চেয়ে তারার সংখ্যা বেশি। সূত্র : বিবিসি
 ‘মানুষের সৃষ্টি অপেক্ষা নভোমন্ডল ভূ-মন্ডলের সৃষ্টি কঠিনতর। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না।' [ সুরা মুমিন ৪০:৫৭ ] 

★              সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বঃ
                                      সূরা আয্যারিয়ার ৪৭ আয়াতে নভোমণ্ডল প্রসারিত হচ্ছে উল্লিখিত হয়েছে। 
‘নভোমণ্ডল নির্মাণ করেছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহাসম্প্রসারণকারী।’ 
মহাবিশ্ব প্রসারমান, এই আবিষ্কারটি বিংশ শতাব্দীর বৃহত্তম বৌদ্ধিক বিপ্লবগুলোর অন্যতম। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে আমরা কি কখনো ভাবার সুযোগ পাই ছায়াপথগুলো প্রায় ৭০ কিমি/সেকেন্ড গতিতে দূরাপসরণ করছে?
নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ধারণার চেয়ে পাঁচ থেকে নয় শতাংশ দ্রুতগতিতে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ ঘটে চলেছে। এডউইন হাবল ১৯২৯ সালে প্রকাশ করেন যে, মহাবিশ্ব স্থিতাবস্থায় নেই। যে ছায়াপথটি যত দূরে অবস্থিত তার দূরাপসারণের গতিও তত বেশি। প্রতিনিয়ত মহাবিশ্ব কত বিস্তৃতি লাভ করছে!
আবার যেহেতু সব ছায়াপথ মহাকাশের দশ লাখ ভাগের মাত্র এক ভাগ জায়গা দখল করে আছে, সে ক্ষেত্রে ১০ পৃথিবীর সমান নিম্ন স্তরের জান্নাত হওয়াটা একেবারে সাধারণ ঘটনা নয়কি?
মহাবিশ্বের সব কিছুকে পর্যবেক্ষণ ও রহস্য উদ্ঘাটনের মাধ্যমেই কেবল আল্লাহকে খুঁজে পাওয়া ও তার নৈকট্য লাভ করা যেতে পারে।
ঈমান বাড়ানোর পথ বা উপায় হলো সৃষ্টি রহস্য নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করা।
হাদিস শরিফে আছেঃ সৃষ্টি রহস্য নিয়ে কিছু সময় চিন্তা ভাবনা করা, সারা রাত নফল এবাদত থেকেও উত্তম। মহাবিজ্ঞানী আইন স্টাইনের ভাষায়: ‘নিশ্চয়ই এর পেছনে রয়েছে এক অকল্পনীয় মহা জ্ঞানী সত্তার এক রহস্যময় অভিপ্রেত।
বিজ্ঞানীর দুরভিসারি জিজ্ঞাসা সেখানে বিমূঢ় হয়ে যায় বিজ্ঞানের সমাগত চূড়ান্ত অগ্রগতিও সেখান থেকে স্তব্ধ হয়ে ফিরে আসবে; কিন্তু সেই অনন্ত মহাজাগতিক রহস্যের প্রতিভাস বিজ্ঞানীর মনকে এই নিশ্চিত প্রত্যয়ে উদ্বেল করে তোলে, এই মহাবিশ্বের একজন নিয়ন্তা রয়েছেন। তিনি অলৌকিক জ্ঞানময়, তাঁর সৃষ্টিকে অনুভব করা যায় কিন্তু তাকে কল্পনা করা যায় না।’

Sunday, May 10, 2020

জান্নাত লাভের জন্য প্রচলিত ইবাদত সংস্কৃতিতে শুভঙ্করের ফাঁকি

জান্নাত লাভের জন্য প্রচলিত ইবাদত সংস্কৃতিতে শুভঙ্করের ফাঁকি ।

সহজ কথায়- মুসলিম সমাজে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ধাঁধাঃজান্নাত লাভের শর্ত মিটাতে নামাজ,রোজার মত প্রচলিত সব ইবাদতকে কোরআনে সরাসরি একেবারে না রাখার কারন বিষয়টি মুসলিম সমাজে সম্পূর্ণ উপেক্ষিত/ অনুপস্থিত।
প্রচলিত সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক ভুল ধারনা যা অবশ্যই মুসলিম দেশ/ সমাজকে বিশেষভাবে প্রভাবিত এবং গভীরভাবে বশীভূত করে রেখেছেঃ জান্নাত লাভের জন্য ঈমান সেই সাথে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাতই সর্বসাকুল্যে যথেষ্ট/একদমই যেন সব। সাধারন মানুষের মনের অজান্তে সব সময় যে বিশ্বাস মনের অত্যন্ত গভীরে কাজ করে থাকেঃ জান্নাত পাবার জন্য বাড়তি আর কিছুই যেন দরকারই নেই।বাস্তবে কিন্ত জান্নাত লাভের সব আয়াতেই সোজা সুজি ২ টি শর্তপালন অপরিহার্য করা হয়েছে যেথায় নামাজ-রোজার মত প্রচলিত সব এবাদতের উল্লেখই কিন্ত একেবারেই নাই। জান্নাতে যাবার জন্য যে দুটি শর্ত অবশ্যই পুরন করতেহবেঃ
১) ঈমান ২)সৎকাজ।
# তাহলে প্রশ্ন আসেঃ মুসলমানেরা নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত নিয়ে এত কঠোরতা এবং বাড়াবাড়ি কেন করে যদি এ সব কিছু জান্নাত লাভের শর্তের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নাই থাকে? মুলত কালেমা,নামাজ,রোজা, হজ্ব ও জাকাত কে ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ/খুঁটির সাথে তূলনা/ কল্পনা করা হয়েছে। খুঁটি ছাড়া যেমন ঘরের স্থায়িত্ব ধারনা করা কক্ষনও সম্ভব না তেমনি এই পাচ স্তম্ভ ইসলামকে মজবুত করে দাড় করাতে কেবল ভুমিকা রাখে মাত্র। শুধু খাম্বা দিয়ে ঘর তৈরি হয়না সেই সাথে অবশ্যই দরকার ছাদ,দরজা,জানালা, টয়লেট, কামরা ইত্যাদি ইত্যাদি হরেক রকম অনেক কিছুরই। তেমনি ইসলামের পাঁচ স্তম্ভই শেষ কথা নয় সেই সাথে জরুরী সারাজীবন ভর ছালিহাত/ সৎচরিত্র যা মূলত ব্যক্তি জীবনে বাস্তবে ইসলামকে পূর্ণ রুপ দিতে সরাসরি কিন্ত ভুমিকা রাখে।
আসলে কিন্ত ইসলাম ধর্মে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাতের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে এসব সঠিক/ যথারিতি / নিষ্ঠার সাথে পালন করলে একজন ব্যক্তি সারা জীবন ভর অবশ্য অবশ্যই সৎকর্মশীল হয়ে গড়ে উঠবেই। সে জন্য কোরআন পাকে জান্নাত লাভের সব আয়াতেই বিশ্বাসের সাথে সৎকর্মশী হওয়াটা্ অত্যাবশ্যকীয় ধরা হয়েছে। দিনের ২৪ ঘণ্টার আংশিক কিছু সময় সৎ থেকে অন্য সময়ে/বাকি সময়ে অসৎ থাকলে সৎকর্মশীল হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কোনো সুযোগ একেবারেই কিন্ত নেই। দিনের ২৪ ঘণ্টায়ই সব কাজে / সব মুহূর্তে সৎ থাকতে হবে। শেষ বিচারের দিন খুটিনাটি সব কিছুই দিবালোকের মত ফাঁস হয়ে যাবে।তখন কোনো উপায় অবশিষ্ট থাকবেনা।
জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে সৎকর্ম। আর সব গুণ থাকলেও অসৎকর্মশীল ব্যক্তি জান্নাতের সীমানার ধারে্র কাছেও ঘেষতে পারবে না।ছালিহাত শব্দটি কোরআনে ৬৪ বার ব্যাবহার করা হয়েছে জান্নাত পাবার অন্যতম শর্ত হিসাবে, ঈমানের সাথে এটি না থাকলে জান্নাতে যায়গা হবে না। আসলে কিন্ত নামাজি, দ্বীনদার হওয়ার মূল কথা হচ্ছে সৎকর্মশীল হওয়া। বাহ্যিকভাবে যত বড় বুজর্গ, পীর, মস্তবড় দ্বীনদার হোক না কেন একমাত্র ঈমানদার ও সৎকর্মশীলরাই জান্নাতে যায়গা পাবে।জান্না্ত পেতে হলে্ অবশ্য অবশ্যই কেবল আংশিক নয় বরং সারাজীবন ফুলটাইম সৎকর্মশীল হতে হবে, সে ক্ষেত্রে কোনো রকম ছাড় কিন্ত নেই। কোন ফাঁকি/ চালাকি বরদাশত করা হবে না।
'নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।'-সূরা আনকাবূত (২৯:৪৫)
"রোজা হলো (পাপাচার থেকে) রক্ষার ঢাল স্বরূপ।........ " (বুখারী-১৮৯৪) 
"যে ব্যক্তি মিথ্যা পরিত্যাগ করলো না, আল্লাহ তা'য়ালা তার পানাহার ত্যাগ কবুল করেন না" (বুখারী-১৯০৩)
অসৎ ব্যাক্তির ইবাদত মূল্যহীন আর জান্নাত লাভে কোনো কাজেই আসবেনা। জান্নাতের জন্য সমগ্র জীবন ধরে ঈমানের সাথে সৎকাজ করার দৃঢ় মানসিকতা অবশ্য থাকতেই হবে যেটা কোরআন পাকে বিভিন্ন আয়াতে এসেছে।
আসমান উচু পরিমাণ নেকী অর্জন করেও আসল/ সঠিক কথা হচ্ছে, সারা জীবন যাদের হক নষ্ট করা হয়েছে নিজের অর্জিত মূলধনের সব নেকী দিয়ে তাদের সাথে বিনিময় করতে হবে। আর এভাবে পরিশোধ করতে করতে আগেই যদি নেকী সব শেষ হয়ে যায় সেক্ষত্রে প্রাপকের গুনাহ নিজের কাঁধে নিয়ে দোযোগে ভয়াবহ আগুনে জ্বলতে হবে।হাদিসে এসেছেঃ
বিড়ালের সাথে সঠিক আচরণ না করার জন্য জনৈক দ্বীনদার মহিলাকে পর্যন্ত জাহান্নামে যেতে হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তার সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল গীবত কি জেনার চেয়েও মারাত্মক? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, কারণ কোনো ব্যক্তি জেনার পর (বিশুদ্ধ) তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু গীবতকারীকে যার গীবত করা হয়েছে, তিনি মাফ না করলে আল্লাহ মাফ করবেন না। (মুসলিম)  
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত , হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান গীবত কাকে বলে? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তাই গীবত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যে দোষের কথা বলি সেটা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তবে তুমি অবশ্যই গীবত করলে আর তুমি যা বলছো তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছো।(মুসলিম)  
ইসলামে অপবাদ কারীর শাস্তি কিন্ত  অত্যন্ত ভয়াবহ।
নবী(স) বলেছেন, "আসল সর্বহারা আর রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, যারা কেয়ামতের দিন রোজা, নামাজ, অনেক হজ্ব, দান খয়রাত নিয়ে হাজির হবে কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না দেয়া, মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে রিক্ত হস্তে জাহান্নামে যাবে।" বাস্তবতা হচ্ছেঃ সত্যিই পরিতাপের বিষয়,মুসলিম দেশ ও জাতি বর্তমান বিশ্বে অপর সব দেশ ও জাতি থেকে দুর্নীতিতে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে।সব দেশ গুলোর দুর্নীতির সুচক এটা প্রমান করে। এবারের সিপিআই অনুযায়ী ৬৮ স্কোর এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী গতবারের মতই ২৫তম অবস্থান নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ভুটান। এর পরের অবস্থানে ৪১ স্কোর নিয়ে গতবারের তুলনায় দুই ধাপ অবনতি হয়ে ৮০তম স্থানে রয়েছে ভারত। এরপরে শ্রীলঙ্কা ৩৮ স্কোর পেলেও ৪ ধাপ পিছিয়ে ৯৩তম অবস্থানে রয়েছে। ৩২ স্কোর পেয়ে তিন ধাপ পিছিয়ে ১২০তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান অন্যদিকে, ২০১৮ এর তুলনায় ২ পয়েন্ট কম ২৯ স্কোর পেয়ে ৬ ধাপ পিছিয়ে ১৩০তম অবস্থানে নেমে গিয়েছে মালদ্বীপ। এরপর ২০১৮ এর সমান স্কোর ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৪৬তম অবস্থানে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের পরে ১৬ স্কোর পেয়ে সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী ১৭৩তম অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ সিপিআই সূচক অনুয়ায়ী ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোর মধ্যে সপ্তমবারের মত এবারও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে
প্রসঙ্গতঃ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জান্নাত লাভের প্রায় সব আয়াতেই স্পষ্টত সরাসরি উল্লেখিত হয়েছে 'ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ' কথাটি।
১] ' .....কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও।.........' [ সুরা বাকারা ২:১৪৮ ]
২]'সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে .............' [সূরা বাকারা আয়াত ২ঃ১৭৭]
৩] 'নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ............. তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।' [ সুরা হুদ ১১:২৩ ]
৪] তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মনে যা আছে তা ভালই জানেন। যদি তোমরা সৎ হও, তবে তিনি তওবাকারীদের জন্যে ক্ষমাশীল।সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:২৫ ]
৫]আর যারা তাঁর কাছে আসে এমন ঈমানদার হয়ে যায় সৎকর্ম সম্পাদন করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে সুউচ্চ মর্তবা। [ সুরা ত্বা-হা ২০:৭৫ ]যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে, সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। সুরা ত্বা-হা ২০:১১২ ]
৬]এবং ইসমাঈল, ই'দ্রীস ও যুলকিফলের কথা স্মরণ করুন,তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সবরকারী। আমি তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম। তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ।  [সুরা আম্বিয়া ২১:৮৫-৮৬ ]
৭] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও  সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।সুরা হাজ্জ্ব২২:১৪ 
৮] সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী। সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫০ ]
৯] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।সুরা শু’য়ারা ২৬:২২৭ ]
১০] তবে যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে। সুরা কাসাস ২৮:৬৭ ]
১১] আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল, তার বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা ঈমানদার এবং সৎকর্মী, তাদের জন্যে আল্লাহর দেয়া সওয়াবই উৎকৃষ্ট। এটা তারাই পায়, যারা সবরকারী।সুরা কাসাস ২৮:৮০ ]
১২] যে সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে তদপেক্ষা উত্তম ফল পাবে এবং যে মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, এরূপ মন্দ কর্মীরা সে মন্দ কর্ম পরিমানেই প্রতিফল পাবে।সুরা কাসাস ২৮:৮৪ ]
১৩] আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব। সুরা আনকাবুত ২৯:৭ ]
১৪] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব।সুরা আনকাবুত ২৯:৯ ]
১৫] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের। সুরা আনকাবুত ২৯:৫৮ ]
১৬] যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে সমাদৃত হবে;সুরা রূম ৩০:১৫ ]
১৭] যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে যাতে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে প্রতিদান দেন। নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন না। সুরা রূম ৩০:৪৫ ]
১৮] যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। [ সুরা লুকমান ৩১:৮ ]
১৯] যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। [ সুরা লুকমান ৩১:২২ ]
২০] যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়নস্বরূপ বসবাসের জান্নাত।[সুরা সাজদা৩২:১৯]
২১] তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি। [সুরা আহযাব ৩৩:৩১]
২২] তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [সুরা সা’বা ৩৪:৪ ]
২৩] তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। [সুরা সা’বা ৩৪:৩৭ ]
২৪] আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।[সুরা সাফফাত ৩৭:৮০ ]
২৫] এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।[সুরা সাফফা৩৭:১২১]
২৬] যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। [সুরা মু’মিন ৪০:৪০]
২৭] অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী। তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক। [সুরা মু’মিন ৪০:৫৮]
২৮] নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা হা-মীম৪১:৮]
২৯] যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ,তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?[সুরা হা-মীম ৪১:৩৩]
৩০] যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না।[সুরা হা-মীম ৪১:৪৬]
৩১]যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে।অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।[সুরা যাসিয়া ৪৫:১৫]
৩২] যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।[সুরা মুহাম্মাদ ৪৭:১২]
৩৩]যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।[সুরা তুর ৫২:২১ ]
৩৪]কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা ইনশিকাক ৮৪:২৫]
৩৫] যারা ঈমান আনেওসৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।[ সুরা বুরূজ ৮৫:১১ ]
৩৬]  তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।[সুরা তীন ৯৫ঃ৬]
৩৭] ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।’[সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৭ ]
৩৮] ‘তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।’[সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৮]
ধর্মীয় বিধি নিষেধ মানা যার যার ব্যক্তিগত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং এটি আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার বিষয়। কিন্তু সামাজিক বিধি নিষেধ মেনে চলা একজন বান্দার সাথে অন্য বান্দার মধ্যকার বিষয়। অন্য কথায় ইসলামিক নীতিমালা যদি মুসলমানরা নিজেদের জীবনে ব্যবহারিক প্রয়োগ না করে, মুসলিম সমাজ দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে যার ভয়াবহ চিত্র মুসলিম দেশ গুলোতে।
আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যেয়ে জান্নাত লাভের তৈফিক দিন। আমীন।