Sunday, May 10, 2020

জান্নাত লাভের জন্য প্রচলিত ইবাদত সংস্কৃতিতে শুভঙ্করের ফাঁকি

জান্নাত লাভের জন্য প্রচলিত ইবাদত সংস্কৃতিতে শুভঙ্করের ফাঁকি ।

সহজ কথায়- মুসলিম সমাজে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ধাঁধাঃজান্নাত লাভের শর্ত মিটাতে নামাজ,রোজার মত প্রচলিত সব ইবাদতকে কোরআনে সরাসরি একেবারে না রাখার কারন বিষয়টি মুসলিম সমাজে সম্পূর্ণ উপেক্ষিত/ অনুপস্থিত।
প্রচলিত সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক ভুল ধারনা যা অবশ্যই মুসলিম দেশ/ সমাজকে বিশেষভাবে প্রভাবিত এবং গভীরভাবে বশীভূত করে রেখেছেঃ জান্নাত লাভের জন্য ঈমান সেই সাথে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাতই সর্বসাকুল্যে যথেষ্ট/একদমই যেন সব। সাধারন মানুষের মনের অজান্তে সব সময় যে বিশ্বাস মনের অত্যন্ত গভীরে কাজ করে থাকেঃ জান্নাত পাবার জন্য বাড়তি আর কিছুই যেন দরকারই নেই।বাস্তবে কিন্ত জান্নাত লাভের সব আয়াতেই সোজা সুজি ২ টি শর্তপালন অপরিহার্য করা হয়েছে যেথায় নামাজ-রোজার মত প্রচলিত সব এবাদতের উল্লেখই কিন্ত একেবারেই নাই। জান্নাতে যাবার জন্য যে দুটি শর্ত অবশ্যই পুরন করতেহবেঃ
১) ঈমান ২)সৎকাজ।
# তাহলে প্রশ্ন আসেঃ মুসলমানেরা নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত নিয়ে এত কঠোরতা এবং বাড়াবাড়ি কেন করে যদি এ সব কিছু জান্নাত লাভের শর্তের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নাই থাকে? মুলত কালেমা,নামাজ,রোজা, হজ্ব ও জাকাত কে ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ/খুঁটির সাথে তূলনা/ কল্পনা করা হয়েছে। খুঁটি ছাড়া যেমন ঘরের স্থায়িত্ব ধারনা করা কক্ষনও সম্ভব না তেমনি এই পাচ স্তম্ভ ইসলামকে মজবুত করে দাড় করাতে কেবল ভুমিকা রাখে মাত্র। শুধু খাম্বা দিয়ে ঘর তৈরি হয়না সেই সাথে অবশ্যই দরকার ছাদ,দরজা,জানালা, টয়লেট, কামরা ইত্যাদি ইত্যাদি হরেক রকম অনেক কিছুরই। তেমনি ইসলামের পাঁচ স্তম্ভই শেষ কথা নয় সেই সাথে জরুরী সারাজীবন ভর ছালিহাত/ সৎচরিত্র যা মূলত ব্যক্তি জীবনে বাস্তবে ইসলামকে পূর্ণ রুপ দিতে সরাসরি কিন্ত ভুমিকা রাখে।
আসলে কিন্ত ইসলাম ধর্মে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাতের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে এসব সঠিক/ যথারিতি / নিষ্ঠার সাথে পালন করলে একজন ব্যক্তি সারা জীবন ভর অবশ্য অবশ্যই সৎকর্মশীল হয়ে গড়ে উঠবেই। সে জন্য কোরআন পাকে জান্নাত লাভের সব আয়াতেই বিশ্বাসের সাথে সৎকর্মশী হওয়াটা্ অত্যাবশ্যকীয় ধরা হয়েছে। দিনের ২৪ ঘণ্টার আংশিক কিছু সময় সৎ থেকে অন্য সময়ে/বাকি সময়ে অসৎ থাকলে সৎকর্মশীল হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কোনো সুযোগ একেবারেই কিন্ত নেই। দিনের ২৪ ঘণ্টায়ই সব কাজে / সব মুহূর্তে সৎ থাকতে হবে। শেষ বিচারের দিন খুটিনাটি সব কিছুই দিবালোকের মত ফাঁস হয়ে যাবে।তখন কোনো উপায় অবশিষ্ট থাকবেনা।
জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে সৎকর্ম। আর সব গুণ থাকলেও অসৎকর্মশীল ব্যক্তি জান্নাতের সীমানার ধারে্র কাছেও ঘেষতে পারবে না।ছালিহাত শব্দটি কোরআনে ৬৪ বার ব্যাবহার করা হয়েছে জান্নাত পাবার অন্যতম শর্ত হিসাবে, ঈমানের সাথে এটি না থাকলে জান্নাতে যায়গা হবে না। আসলে কিন্ত নামাজি, দ্বীনদার হওয়ার মূল কথা হচ্ছে সৎকর্মশীল হওয়া। বাহ্যিকভাবে যত বড় বুজর্গ, পীর, মস্তবড় দ্বীনদার হোক না কেন একমাত্র ঈমানদার ও সৎকর্মশীলরাই জান্নাতে যায়গা পাবে।জান্না্ত পেতে হলে্ অবশ্য অবশ্যই কেবল আংশিক নয় বরং সারাজীবন ফুলটাইম সৎকর্মশীল হতে হবে, সে ক্ষেত্রে কোনো রকম ছাড় কিন্ত নেই। কোন ফাঁকি/ চালাকি বরদাশত করা হবে না।
'নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে।'-সূরা আনকাবূত (২৯:৪৫)
"রোজা হলো (পাপাচার থেকে) রক্ষার ঢাল স্বরূপ।........ " (বুখারী-১৮৯৪) 
"যে ব্যক্তি মিথ্যা পরিত্যাগ করলো না, আল্লাহ তা'য়ালা তার পানাহার ত্যাগ কবুল করেন না" (বুখারী-১৯০৩)
অসৎ ব্যাক্তির ইবাদত মূল্যহীন আর জান্নাত লাভে কোনো কাজেই আসবেনা। জান্নাতের জন্য সমগ্র জীবন ধরে ঈমানের সাথে সৎকাজ করার দৃঢ় মানসিকতা অবশ্য থাকতেই হবে যেটা কোরআন পাকে বিভিন্ন আয়াতে এসেছে।
আসমান উচু পরিমাণ নেকী অর্জন করেও আসল/ সঠিক কথা হচ্ছে, সারা জীবন যাদের হক নষ্ট করা হয়েছে নিজের অর্জিত মূলধনের সব নেকী দিয়ে তাদের সাথে বিনিময় করতে হবে। আর এভাবে পরিশোধ করতে করতে আগেই যদি নেকী সব শেষ হয়ে যায় সেক্ষত্রে প্রাপকের গুনাহ নিজের কাঁধে নিয়ে দোযোগে ভয়াবহ আগুনে জ্বলতে হবে।হাদিসে এসেছেঃ
বিড়ালের সাথে সঠিক আচরণ না করার জন্য জনৈক দ্বীনদার মহিলাকে পর্যন্ত জাহান্নামে যেতে হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তার সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল গীবত কি জেনার চেয়েও মারাত্মক? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ, কারণ কোনো ব্যক্তি জেনার পর (বিশুদ্ধ) তওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু গীবতকারীকে যার গীবত করা হয়েছে, তিনি মাফ না করলে আল্লাহ মাফ করবেন না। (মুসলিম)  
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত , হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান গীবত কাকে বলে? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তোমার কোনো ভাই (দীনি) সম্পর্কে এমন কথা বলা, যা সে অপছন্দ করে, তাই গীবত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যে দোষের কথা বলি সেটা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তাহলেও কি গীবত হবে? উত্তরে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তুমি যে দোষের কথা বল, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে তবে তুমি অবশ্যই গীবত করলে আর তুমি যা বলছো তা যদি তার মধ্যে না থাকে তবে তুমি তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছো।(মুসলিম)  
ইসলামে অপবাদ কারীর শাস্তি কিন্ত  অত্যন্ত ভয়াবহ।
নবী(স) বলেছেন, "আসল সর্বহারা আর রিক্ত মানুষ হচ্ছে তারা, যারা কেয়ামতের দিন রোজা, নামাজ, অনেক হজ্ব, দান খয়রাত নিয়ে হাজির হবে কিন্তু দুর্নীতি করে সম্পদ দখল, অন্যদের হক না দেয়া, মানুষের উপর অত্যাচারের কারণে রিক্ত হস্তে জাহান্নামে যাবে।" বাস্তবতা হচ্ছেঃ সত্যিই পরিতাপের বিষয়,মুসলিম দেশ ও জাতি বর্তমান বিশ্বে অপর সব দেশ ও জাতি থেকে দুর্নীতিতে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে।সব দেশ গুলোর দুর্নীতির সুচক এটা প্রমান করে। এবারের সিপিআই অনুযায়ী ৬৮ স্কোর এবং সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী গতবারের মতই ২৫তম অবস্থান নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ভুটান। এর পরের অবস্থানে ৪১ স্কোর নিয়ে গতবারের তুলনায় দুই ধাপ অবনতি হয়ে ৮০তম স্থানে রয়েছে ভারত। এরপরে শ্রীলঙ্কা ৩৮ স্কোর পেলেও ৪ ধাপ পিছিয়ে ৯৩তম অবস্থানে রয়েছে। ৩২ স্কোর পেয়ে তিন ধাপ পিছিয়ে ১২০তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান অন্যদিকে, ২০১৮ এর তুলনায় ২ পয়েন্ট কম ২৯ স্কোর পেয়ে ৬ ধাপ পিছিয়ে ১৩০তম অবস্থানে নেমে গিয়েছে মালদ্বীপ। এরপর ২০১৮ এর সমান স্কোর ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৪৬তম অবস্থানে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের পরে ১৬ স্কোর পেয়ে সর্বোচ্চ থেকে গণনা অনুযায়ী ১৭৩তম অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ সর্বনিম্ন থেকে গণনা অনুযায়ী আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ সিপিআই সূচক অনুয়ায়ী ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোর মধ্যে সপ্তমবারের মত এবারও দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে
প্রসঙ্গতঃ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জান্নাত লাভের প্রায় সব আয়াতেই স্পষ্টত সরাসরি উল্লেখিত হয়েছে 'ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ' কথাটি।
১] ' .....কাজেই সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যাও।.........' [ সুরা বাকারা ২:১৪৮ ]
২]'সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে .............' [সূরা বাকারা আয়াত ২ঃ১৭৭]
৩] 'নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে ............. তারাই বেহেশতবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।' [ সুরা হুদ ১১:২৩ ]
৪] তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের মনে যা আছে তা ভালই জানেন। যদি তোমরা সৎ হও, তবে তিনি তওবাকারীদের জন্যে ক্ষমাশীল।সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:২৫ ]
৫]আর যারা তাঁর কাছে আসে এমন ঈমানদার হয়ে যায় সৎকর্ম সম্পাদন করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে সুউচ্চ মর্তবা। [ সুরা ত্বা-হা ২০:৭৫ ]যে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে, সে জুলুম ও ক্ষতির আশঙ্কা করবে না। সুরা ত্বা-হা ২০:১১২ ]
৬]এবং ইসমাঈল, ই'দ্রীস ও যুলকিফলের কথা স্মরণ করুন,তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সবরকারী। আমি তাঁদেরকে আমার রহমাতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত করেছিলাম। তাঁরা ছিলেন সৎকর্মপরায়ণ।  [সুরা আম্বিয়া ২১:৮৫-৮৬ ]
৭] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও  সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ দিয়ে নির্ঝরণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন।সুরা হাজ্জ্ব২২:১৪ 
৮] সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক রুযী। সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫০ ]
৯] তবে তাদের কথা ভিন্ন, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ কে খুব স্মরণ করে এবং নিপীড়িত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। নিপীড়নকারীরা শীঘ্রই জানতে পারবে তাদের গন্তব্যস্থল কিরূপ।সুরা শু’য়ারা ২৬:২২৭ ]
১০] তবে যে তওবা করে, বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আশা করা যায়, সে সফলকাম হবে। সুরা কাসাস ২৮:৬৭ ]
১১] আর যারা জ্ঞান প্রাপ্ত হয়েছিল, তার বলল, ধিক তোমাদেরকে, যারা ঈমানদার এবং সৎকর্মী, তাদের জন্যে আল্লাহর দেয়া সওয়াবই উৎকৃষ্ট। এটা তারাই পায়, যারা সবরকারী।সুরা কাসাস ২৮:৮০ ]
১২] যে সৎকর্ম নিয়ে আসবে, সে তদপেক্ষা উত্তম ফল পাবে এবং যে মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, এরূপ মন্দ কর্মীরা সে মন্দ কর্ম পরিমানেই প্রতিফল পাবে।সুরা কাসাস ২৮:৮৪ ]
১৩] আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদের মন্দ কাজ গুলো মিটিয়ে দেব এবং তাদেরকে কর্মের উৎকৃষ্টতর প্রতিদান দেব। সুরা আনকাবুত ২৯:৭ ]
১৪] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকাজ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করব।সুরা আনকাবুত ২৯:৯ ]
১৫] যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ প্রাসাদে স্থান দেব, যার তলদেশে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত উত্তম পুরস্কার কর্মীদের। সুরা আনকাবুত ২৯:৫৮ ]
১৬] যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারা জান্নাতে সমাদৃত হবে;সুরা রূম ৩০:১৫ ]
১৭] যারা বিশ্বাস করেছে ও সৎকর্ম করেছে যাতে, আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে প্রতিদান দেন। নিশ্চয় তিনি কাফেরদের ভালবাসেন না। সুরা রূম ৩০:৪৫ ]
১৮] যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। [ সুরা লুকমান ৩১:৮ ]
১৯] যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। [ সুরা লুকমান ৩১:২২ ]
২০] যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে তাদের কৃতকর্মের আপ্যায়নস্বরূপ বসবাসের জান্নাত।[সুরা সাজদা৩২:১৯]
২১] তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি। [সুরা আহযাব ৩৩:৩১]
২২] তিনি পরিণামে যারা মুমিন ও সৎকর্ম পরায়ণ, তাদেরকে প্রতিদান দেবেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মান জনক রিযিক। [সুরা সা’বা ৩৪:৪ ]
২৩] তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তারা তাদের কর্মের বহুগুণ প্রতিদান পাবে এবং তারা সুউচ্চ প্রাসাদে নিরাপদে থাকবে। [সুরা সা’বা ৩৪:৩৭ ]
২৪] আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।[সুরা সাফফাত ৩৭:৮০ ]
২৫] এভাবে আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।[সুরা সাফফা৩৭:১২১]
২৬] যে মন্দ কর্ম করে, সে কেবল তার অনুরূপ প্রতিফল পাবে, আর যে, পুরুষ অথবা নারী মুমিন অবস্থায় সৎকর্ম করে তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তথায় তাদেরকে বে-হিসাব রিযিক দেয়া হবে। [সুরা মু’মিন ৪০:৪০]
২৭] অন্ধ ও চক্ষুষ্মান সমান নয়, আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং কুকর্মী। তোমরা অল্পই অনুধাবন করে থাক। [সুরা মু’মিন ৪০:৫৮]
২৮] নিশ্চয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্যে রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা হা-মীম৪১:৮]
২৯] যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ,তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার?[সুরা হা-মীম ৪১:৩৩]
৩০] যে সৎকর্ম করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই করে, আর যে অসৎকর্ম করে, তা তার উপরই বর্তাবে। আপনার পালনকর্তা বান্দাদের প্রতি মোটেই যুলুম করেন না।[সুরা হা-মীম ৪১:৪৬]
৩১]যে সৎকাজ করছে, সে নিজের কল্যাণার্থেই তা করছে, আর যে অসৎকাজ করছে, তা তার উপরই বর্তাবে।অতঃপর তোমরা তোমাদের পালনকর্তার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে।[সুরা যাসিয়া ৪৫:১৫]
৩২] যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত হয়। আর যারা কাফের, তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং চতুস্পদ জন্তুর মত আহার করে। তাদের বাসস্থান জাহান্নাম।[সুরা মুহাম্মাদ ৪৭:১২]
৩৩]যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।[সুরা তুর ৫২:২১ ]
৩৪]কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে, তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত পুরস্কার।[সুরা ইনশিকাক ৮৪:২৫]
৩৫] যারা ঈমান আনেওসৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।[ সুরা বুরূজ ৮৫:১১ ]
৩৬]  তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।[সুরা তীন ৯৫ঃ৬]
৩৭] ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তারাই সৃষ্টির সেরা।’[সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৭ ]
৩৮] ‘তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে তাদের প্রতিদান চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। এটা তার জন্যে, যে তার পালনকর্তাকে ভয় কর।’[সুরা বাইয়্যেনাহ ৯৮:৮]
ধর্মীয় বিধি নিষেধ মানা যার যার ব্যক্তিগত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এবং এটি আল্লাহ ও বান্দার মধ্যকার বিষয়। কিন্তু সামাজিক বিধি নিষেধ মেনে চলা একজন বান্দার সাথে অন্য বান্দার মধ্যকার বিষয়। অন্য কথায় ইসলামিক নীতিমালা যদি মুসলমানরা নিজেদের জীবনে ব্যবহারিক প্রয়োগ না করে, মুসলিম সমাজ দুর্নীতিতে ছেয়ে যাবে যার ভয়াবহ চিত্র মুসলিম দেশ গুলোতে।
আল্লাহ আমাদের সকলকে ঈমানদার অবস্থায় সৎকর্ম সম্পাদন করে সৎকাজে প্রতিযোগিতামূলকভাবে এগিয়ে যেয়ে জান্নাত লাভের তৈফিক দিন। আমীন।


No comments:

Post a Comment