সৌদি হাফে্যের আবৃতিতে প্রচলিত খতম তারাবীহ না শর্টকাটে অনায়াসে ১০৩ খতমের নেকী?
সৌদি হাফে্যের আবৃতিতে প্রচলিত খতম তারাবীহ না শর্টকাটে অনায়াসে ১০৩ খতমের নেকী?
কোরআন নাযিলের মাসে খতম তারাবীহ নামাজের মাধ্যমে এ মাসে সমগ্র কোরআনের বক্তব্য শ্রবণ করে উপলব্ধি ও হ্রদয়ঙ্গম করাই হচ্ছে কোরআন খতমের একমাত্র উদ্দেশ্য, এত কষ্ট করে খতম তারাবীহ পড়ার আর কোন কারন নেই বা থাকতেই পারেনা। আর কোনো মাসে তারাবীহ না থাকার কারনে এই মাসকেই কোরান খতমের উত্তম মাস হিসেবে সকলে গ্রহণ করে থাকে। এ মাসে কোরআনের বিষয়বস্ত জানার সুযোগ হচ্ছে সেই সাথে আনেক গুন বেশি নেকী পাওয়া যাচ্ছে। আবার কোরআনের কথা যদি না বুঝে শুনা হয় তবে বাস্তবে এতে খতমে কোরআনের কোনো উদ্দেশ্যই সাধিত হয় না। যে কোন চিন্তাশীল মানুষ বলবে - না বুঝে শুনা শুধুমাত্র সময়কে ফাকি দেওয়া / অপচয় করা । পড়া বা শুনার সংজ্ঞা আনুসারে কেবল মাত্র শব্দের মানে/অর্থ জানলেই সঠিক ভাবে পড়া বা শুনা কোণটাই সম্পন্ন হয়না। সংশ্লিষ্ট শব্দটি ঐ বাক্যে কি অর্থে ব্যবহত হয়েছে তা অবশ্যই জানতে হবে। কারন একটি শব্দ বাক্যে বিভিন্ন অর্থে ব্যবহত হতে পারে। সংশ্লিষ্ট শব্দটির আগে বা পরে বাক্যে যে সব শব্দ রয়েছে তার উপরও শব্দের অর্থ নিয়ন্ত্রন হয়ে থাকে। বাক্যের কোনো শব্দেরই অর্থ না জানলে পড়া বা শুনাটা কেবল উপহাসে পরিণত হতে বাধ্য। যেমন সুরা কাওছারে 'আবতার' (নিবংশ/অপুত্রক) শব্দটি বিশেষ অর্থে /ভাবে ব্যাবহত হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ(সঃ)একদিন বলেন- তোমরা স্ত্রীদের কাছে যাওয়ার আগে প্রথমে দুত পাঠাও, তারপর প্রবেশ কর। উপস্তিত সাহাবীরা যেন আকাশ থেকে পড়লেন এই বলে-নিজ স্ত্রীর কাছে আবার অন্যকে পাঠাবো ? তিনি (দঃ)এখানে দুত শব্দটির কী অর্থ / দুত ব্ লতে কি ব্ লা হয়েছে বুঝিয়ে দেন।
একবার উম্মু্ল মুমিনীন গন জানতে চান-ইয়া রাসুলুল্লাহ, আপনার ইন্তেকালের পর আমাদের মধ্যে কে প্রথম আপনার সাথে মিলিত হবে? যার হাত সবচেয়ে লম্বা সে-জবাবে তিনি (দঃ)বলেন।
হাত মাপামাপি করে তারা দেখতে পান বড় হাত ওয়ালা নয় বরং যার হাত সবচেয়ে ছোটো তিনি আগে ইন্তেকাল করেন । আসলে এখানে বড় হাতওয়ালা বলতে উদার/দানশীল ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছিল।ক্ষুদ্র হাতওয়ালা হওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রথম ইন্তেকাল করেন- যেহেতু সবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল / দয়ালু ছিলেন।অতএব শব্দের মানে / অর্থ অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে।
আমেরিকার বালটিমোর শহরের মসজিদে তারাবীহর নামাজের জন্য সৌদি থেকে হাফে্য আনা হয়ে থাকে। তাদের কঠিন যুক্তি, সহি পড়া শুনলে অনেক গুন বেশি নেকী পাওয়া যাবে। আসলে অর্থ না জানলে শুনা হয়ই না বরং হয় সময় অপচয়/ ফাকি দেওয়া।সাম্প্রতিক সাড়া জাগানো খবর হচ্ছেঃ বিশ্ব হেফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি তরুণরা আরব জগতকে হারিয়ে আরব বিশ্ব থেকে পদক ছিনিয়ে এনেছে যদিও আমাদের তরুণরা কেবল আবৃত্তি শিখেছে, এ জন্য পড়া শিখার বা জানার দরকারই পড়েনি তাদের। মোদ্দাকথা হলো আমাদের বেশি নেকী চাই, তাহলে প্রচলিত খতম তারাবির চেয়েও শতগুন বেশি নেকী পাবার সহজ পথ খোলা র্য়েছে।যে সময়ে হাজার(১০০০) নেকী সেই সময়ের মধ্যই যদি শর্টকাটে এক লক্ষের (১০০,০০০)বেশি নেকী লাভ করা যায় ক্ষতি কি, কে চায়না? তারাবীর ২০ রাকাতে ১০৩ বার কোরআন খতম করার নেকী লাভ করতে পারা যায় অতি সহজ উপায়ে। সময় শ্রম বাচল, আবার যে সময়টা বাচল সে সময়ে কোরআন বোঝার বা সত্যিকার অর্থে কোরআন পড়ার সুযোগ তৈরী করে নেয়া ও যেতে পারে ইচ্ছা থাকলে।
সুরা ইয়াসীন ১ বার পাঠ করলে ১০ বার কোরআন খতম করার নেকী হয়।
সুরা এখলাস ৩ বার পাঠ করলে ১ বার কোরআন খতম করার নেকী হয়।
সুরা কাফেরুন ৪ বার পাঠ করলে ১ বার কোরআন খতম করার নেকী হয়।
এবার হিসাব করা যাক, এসব সুরা দিয়ে বিশ রাকাত নামাজ আনায়েসে শেষ করে কত খতমের নেকী পাওয়া যাবার কথা? ২০ রাকাতে ১০ বার সুরা ইয়াসীন (১০০ বার কোরআন খতম),৬বার সুরা এখলাস ( ২ বার কোরআন খতম), ৪বার সুরা কাফেরুন (১বার কোরআন খতম), সব মিলে দাঁড়াল ১০৩ বার কোরআন খতমের নেকী মাত্র ৩ টি সুরার সাহায্য নিয়েই।
যে উদ্দেশ্যে কোরআন খতম সে উদ্দেশ্য সাধিত হলে খতম তারাবীহর অবশ্য অবশ্যই কোনো বিকল্পই নেই।প্রচলিত খতম তারাবীহ সেই উদ্দেশ্য কি পুরন করে? আমরা ফাকি দিয়ে নেকী লাভের প্রতিযোগিতা না করে কোরআন নাযিলের মাসে প্রচলিত তারাবীহ তিন সুরা বা দুই সুরার সাহায্য নিয়ে পড়ে সময় বের করে কোরআন পড়ার/বুঝার/ শেখার সময় সুযোগ করে নিয়ে সত্যিকার কোরআনের দাবি পুরন করতে পা্রি, আবার সেই সাথে এক খতমের জায়গায় অনেক গুন বেশি,ক্ষেত্র বিশেষে শতগুণ বেশি খতমের নেকী ও লাভ করতে পারি,কোনটি উত্তম? আল্লাহ আমাদের সকলের উপলব্ধি ও বাস্তবায়নের সুযোগ দিন।
No comments:
Post a Comment